সানজিদা তৃণা
গহনায় আকর্ষণ নেই এমন নারী খুঁজে পাওয়া অতীব দুষ্কর। সেই আদিমকালে মানুষ যখন বনে-জঙ্গলে, গুহায় থাকতো তখনো কিন্তু নারীরা পশুর হাড়, দাঁতসহ নানান কিছু দিয়ে গহনা পরতো, তখন থেকেই গয়নার আবেদন রয়েছে নারীর কাছে। আদিম রেড ইন্ডিয়ানরা গয়নাকেই পোশাক হিসেবে ব্যবহার করতো। যা-ই হোক, হালের ফ্যাশনেও কিন্তু এই গয়নার আবেদন এতোটুকুও কমেনি, বরং বেড়েছে। শাড়ির পাশাপাশি স্কার্ট-ফতুয়ার সঙ্গে গয়না এখন আরো বেশি আবেদনময় হয়ে উঠেছে। যে কোনো বয়সের মেয়েরাই স্কার্ট, ফতুয়া, কাপ্রি যা-ই পরুক না কেনÑ এর সঙ্গে মানানসই গয়না তাদের চাই-ই চাই। বিশেষ করে তাদের চাহিদা বেশি থাকে অ্যান্টিক ও ধাতব গয়নার প্রতি। স্কার্ট-টপসের সঙ্গে লম্বা ঝুলানো কানের দুল, অনেক ক্ষেত্রে তা ঘাড় অবধি পড়ে। আবার কানে বড় বড় দুল পরলে গলায় কিছু না পরলেও চলে। হাতে পিতলের, মাটির, রুপার, হাড়ের ব্রেসলেট অথবা বালা বেশি মানানসই। ক্যাপ্রি, ফতুয়ার সঙ্গে গলায় লম্বা মালা, পায়ে মেটাল বিডসের পায়েল, খাড়Ñ পরলে ভালো লাগবে। এক পায়ে বিভিন্ন রকমের পায়েল এবং আঙুলে বিভিন্ন রকমের আংটি পরা যেতে পারে। হাতেও চুড়ি-বালা একসঙ্গে অনেকগুলো পরলে নজর তো কাড়বেই।
যা-ই হোক, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, বিভিন্ন আকৃতির এই গয়না পরলে একটি বিষয় মনে রাখা উচিত। গয়নাটি যেন পোশাকের সঙ্গে মানানসই হয়। আবার হাত-পা, কান, গলায় এক সঙ্গে গয়না পরলে সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। আপনি যদি কানে বড় দুল পরেন, তা হলে শুধু পায়ে গয়না পরতে পারেন। আবার হাতে বেশি পরলে গলায় ছোট আকৃতির গয়না পরতে পারেন। বিভিন্ন আকৃতির ও উপাদানের গয়না বাজারে রয়েছে। তাই ফতুয়ার সঙ্গে পরতে পারেন পিতল, কাঠ, কাড়ি সুতার কানের দুল ইত্যাদি। এ ছাড়া হাতের ব্রেসলেট, চুড়ি, বালা থাকলে গলায় অক্সিডাইজ ও পিতলের নেকলেস পরা বেশি মানানসই। সঙ্গে পায়েল, খাড়ু তো রয়েছেই।
দরদাম
০০ মাটি, পিতল, কাঠ ও সুতার দুলের দাম ৫০ -৫০০ টাকা।
০০ হাতের ব্রেসলেট পাবেন ৪৫-৩০০ টাকায়।
০০ হাড়- পাবেন ২৫০-৫০০ টাকায়।
০০ উপরোক্ত উপাদানের গলার গহনার দাম পড়বে ৬০-১৫০ টাকা।
০০ পায়েলের দাম পড়বে ১১০-২৫০ টাকা।
গাউছিয়া, নিউমার্কেট-এ রয়েছে গয়নার বিশাল সম্ভার। এ ছাড়া আড়ং, যাত্রা, রঙ, নন্দনকুটির, নগরদোলা, নিত্যউপহারসহ ছোট-বড় ফ্যাশন হাউসগুলোতে এসব গহনা পাওয়া যায়।
মডেল : সোমা, পোশাক : অঞ্জন’স
আলোকচিত্রী :
তাহের মানিক
গয়নার বাক্স
স্বর্ণ বা রুপার মূল্য জেনে নিয়ে অলংকারের দোকান থেকে পছন্দসই গয়না কেনা হয়। তবে উত্তরাধুনিকতার এ যুগে সেসব গয়না সংরক্ষণ করতে গয়নার বাক্স নিয়ে ব্যতিক্রমী ভাবনা থাকাটাই স্বাভাবিক। বাক্সটি যেন অন্যদের চেয়ে আলাদা হয় এবং তা নিয়ে সবাইকে বলার মতো মুখরোচক কিছু থাকে তার দিকেও খেয়াল রাখতে হয়। তা না হলে নিজের ভিন্নতাকে কিভাবে সবার কাছে তুলে ধরবেন।
আদিম যুগ থেকে বর্তমান সময়ে মানুষের বসবাসের স্থানটি গুহা থেকে শুরু করে কালের বিবর্তনে ইট-কংক্রিটের বিল্ডিংয়ে এসে পৌঁছেছে। নিজের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ টাকা-পয়সা, গয়নাগাটি সংরক্ষণের জন্য সবার অলক্ষ্যে গুহার ভেতরে, গাছের কোটরে, মাটির নিচে, সিন্দুকে, ওয়ারড্রোবের তালাবদ্ধ ড্রয়ারে রাখার রেওয়াজও চলে এসেছে। আর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের দেখানোর জন্য সংরক্ষিত স্থান থেকে মেয়েরা তাদের মূল্যবান সম্পদ গয়নাগাটি বের করেন। এর সঙ্গে গয়নার বাক্সটিও দেখা যায়। আগে গয়নার বাক্স দেখতে অতোটা আকর্ষণীয় না হওয়ার দরুন তার প্রতি আগ্রহও থাকতো কম। সময় পাল্টেছে। গয়নার পাশাপাশি গয়নার বাক্সের আকার-আকৃতি, রঙÑরূপ, নকশায় এসেছে পরিবর্তন। গয়নার আগে বাক্সটির দিকে নজর পড়ে সবচেয়ে আগে। অন্যদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, ‘ওমা, কী সুন্দর গয়নার বাক্স, কোত্থেকে কিনেছিস রে?’ আসলেই, গয়না দেখতে হলে বাক্সটি তো দেখতে হবে আগে। ওটা যদি আকর্ষণীয় না হয়, তবে মান-সম্মান একটু কমে যায় না? তাইতো ফ্যাশন সচেতন মেয়েরা আজকাল গয়না কেনার সঙ্গে বাক্সের প্রতি আলাদা আগ্রহ দেখান, যাতে নিজে ও অন্যদের কাছে সম্মানটা বজায় থাকে।
আর বিভিন্ন ডিজাইনের কাপড় বা চামড়ার গয়নার বাক্স কিনতে হলে ছুটে যান দেশীদশ, আড়ং, যাত্রাসহ বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে।
ইস্হাক ফারুকী
মডেল : নিপা ও অরিন
কৃতজ্ঞতা ; আড়ং
অন্দরে সবুজের স্পর্শ
ঘনবসতিতে জীর্ণশীর্ণ নগরী। চারদিকে আকাশছোঁয়া ঘরবাড়ির ভিড়ে একটু খোলা জায়গাও খুঁজে পাওয়া যেন দুষ্কর। যদি সবুজের স্পর্শ পেতে চায় আপনার মন, তাহলে একমুঠো সবুজের ছোঁয়ায় রাঙিয়ে নিতে পারেন আপনার অন্দর।
সাধারণত পাতা মোটা ও ছোট, এমন গাছগুলো ঘরের ভেতর খুব ভালো থাকে। গাছ যে ঘরে শুধু সবুজের স্নিগ্ধতা এনে দেয় তা-ই নয়, পাশাপাশি গাছ ঘরের ভেতর অক্সিজেন সরবরাহ করে, ঘরকে ঠা-া রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
এখন সব আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টের গ্রাউন্ড ফ্লোর বা নিচতলায় গাড়ির গ্যারেজ করা হয়। গ্যারেজেই ইনডোর প্ল্যান্টস দিয়ে করা যেতে পারে সুন্দর বাগান। গ্যারেজের চারদিকের দেয়ালের সামনে দুই থেকে তিন ফুট জায়গায় সিমেন্ট বা ইট দিয়ে নকশা করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে তার ভেতর মাটি ফেলে লাগাতে পারেন গাছ। বিভিন্ন আকৃতির মাটির টব, গাছের ডাল ও পাতায় মোড়ানো টব, দড়ির টবসহ নান্দনিক টবে লাগাতে পারেন গাছ। এতে পাথর, কলস ও কৃত্রিম ফুলও ব্যবহার করতে পারেন। একইভাবে সিঁড়িঘরের কোনায় লাগাতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্টস।
বসার ঘরে গাছ রাখলে তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আসবাব থাকা চাই। এজন্য বেতের সাদামাটা আসবাব ব্যবহার করলেও ভালো দেখাবে। এক্ষেত্রে টবের আকারে বৈচিত্র্য আনতে পারেন।
বাড়তি হিসাবে এর ওপর স্পটলাইট ফেলে করতে পারেন আলো-ছায়ার খেলা।
বাসার ডাইনিং কেবিনেটে করতে পারেন বিশেষ পদ্ধতিতে বোতল-বাগান। এক্ষেত্রে ফুলদানির ভেতর রাখতে পারেন বর্ণিল পাথর, বোতল। পাশপাশি মাছের জন্য গোলাকৃতির যে ছোট অ্যাকুরিয়াম পাওয়া যায়, এর ভেতর নিচের দিকে মাটি ভরে বিভিন্ন প্রজাতির ফার্ন দিয়ে এই বোতল-বাগান তৈরি করতে পারেন অনায়াসেই। আর এ ধরনের ইনডোর প্ল্যান্টসের সুবিধা হলো, এগুলো রোদে দেয়ার প্রয়োজন হয় না। একইভাবে শোয়ার ঘরে দেয়ালের সামনে রাখা হয়েছে লিলি ও বেলি ফুলের গাছ। আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের বসার ঘরের কোনাকৃতি বারান্দার রেলিংয়ে বাঁশের টবে ঝোলানো যেতে পারে বিভিন্ন ধরনের লতানো গাছ। তারা আরো নান্দনিক কিছু চান তারা এ ছাড়াও রান্নাঘর ও বাথরুমে রাখতে পারেন ইনডোর প্ল্যান্টস।
ইনডোর প্ল্যান্টস দিয়ে অন্দরসজ্জা করার সময় শুরুতেই কিছু বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে । যেসব ঘরে ইনডোর প্ল্যান্টস রাখা আছে, সেখানে হালকা নকশার আসবাব ব্যবহার করতে হবে। কাঠের আসবাবের ওপর রঙ না করে ন্যাচারাল লুক রাখলে তা মানিয়ে যাবে গাছের সঙ্গে। দেয়ালে হালকা সবুজ ও হলুদ, সাদা এবং চাপা সাদা রঙ ভালো মানিয়ে যায় ইনডোর প্ল্যান্টসের সঙ্গে। খুব বেশি আলোর ব্যবহার নয়, স্ট্যান্ডিং ল্যাম্প শেড, স্পটলাইট, হিডেন লাইট ব্যবহার করা যেতে পারে ইনডোর প্ল্যান্টস রাখা ঘরে। আর দেয়াল-টবে কোনো ইনডোর প্ল্যান্টস না রাখাই ভালো।
ইনডোর প্ল্যান্টসের যতœ
১. ইনডোর প্ল্যান্টস কেনার আগে ভালো করে জেনে নিন গাছটি ঘরের ভেতর রাখার উপযুক্ত কি না। গাছের মধ্যে মানিপ্ল্যান্ট, ফিলোডেনড্রন, পাম, ড্রেসিনা, পাতাবাহার- এ গাছগুলো ইনডোরে রাখার উপযুক্ত।
২. ইনডোর প্ল্যান্টসের মাটি শুকিয়ে এলে তবেই গাছে পানি দিন।
৩. কখনোই গাছের গোড়ায় একসঙ্গে বেশি পানি দেবেন না। কড়া রোদেও গাছে পানি দেবেন না।
৪. সাধারণত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে পানির গাছ (ড্রেসিনা, মানিপ্ল্যান্ট), পাম ছাড়া অন্য কোনো গাছ ভালো থাকে না।
৫ সপ্তাহে অন্তত একদিন রোদে দিন।
৬ পোকামাকড়ের উপদ্রব দূর করার জন্য ইনডোর প্ল্যান্টসে মাসে একবার কীটনাশক স্প্রে করুন। যেহেতু এ সময় ডেঙ্গুর সময়, তাই গাছে কখনোই পানি জমতে দেবেন না। গাছে ধুলা জমলে তুলি বা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন।
মডেল : শখ
তথ্য : ফারজানা গাজী, ইন্টেরিয়র ডিজাইনার
গ্রুপ ফটোগ্রাফির নিয়ম
দলীয় ফটোগ্রাফির ক্ষেত্রে বেশকিছু লক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। দলীয় ফটোগ্রাফিতে বেশ কিছু জিনিসের নান্দনিক ব্যবহার আনন্দময় ছবির জন্ম দিতে পারে
নিয়ম ভাঙা :
নিয়ম ভাঙার মজাই আলাদা, বেশিরভাগ দলীয় ছবিই একটা সুনির্দিষ্ট নিয়মের ফ্রেমে বেঁধে রাখা হয়, যেমন- চেপে চেপে বসা, বড়, মেঝ, ছোট ক্রমানুসারে দাঁড়ানো ইত্যাদি। কিন্তু এলোমেলো অনেক ধরনের কম্বিনেশনে অনেক সুন্দর ছবি হতে পারে। কি কি নিয়ম ভাঙবেন সেটা অবশ্য আমি বলবো না আপনার ক্রিয়েটিভিটিই তা বলে দেবে।
সময় :
শুধু ছবি তোলার সময়ই নয়, ছবি তোলার সময় সবার প্রস্তুত বা অপ্রস্তুত ভাবটার সময়ও লক্ষণীয়। দলীয় ছবিতে বেশিরভাগ সময়ই সবার মুখের ছবিটি যাতে বুঝা যায় তার চেষ্টা করা হয়। একসঙ্গে হাসি বা একসঙ্গে উচ্ছ্বাস ছবির মাধুর্য অনেকগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
আলো :
আলোর ব্যবহার ছবি হতে পারে আরো আকর্ষণীয়। আলো যাতে সবার চেহারায় একইভাবে পড়ে তার প্রতি লক্ষ রাখতে পারেন। বিশেষ করে সূর্যাস্তের গ্রুপ ছবিগুলো হয় আরো চমৎকার।
ব্যাকগ্রাউন্ড :
দলীয় ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ড একটা প্রয়োজনীয় দিক। ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড যাতে ছবিটিকে আকর্ষণীয় আলোকিত করতে পারে সেই ব্যবস্থা করে নিতে পরেন।
গ্রুপ মডেল :
একদল হয়ে বিভিন্ন কাজে, খেলাধুলায় বা অন্যকোনো সময়ের ছবি তুলে নিতে পারেন। নিজেরা মডেলিং করেও ভার ভার গ্রুপ ছবি তুলতে পারেন।
ইমরান কায়েস সাজিদ
প্রয়োজন যখন
পানির ট্যাঙ্ক
আগেকার দিনে মানুষ নানাভাবে পানি সংরক্ষণ করতো। তবে, প্রায় সব পদ্ধতিই ছিল অস্বাস্থ্যকর। যে কারণে কলেরা, ডায়রিয়াসহ নানারকম উদরাময় অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকতো। কুয়ার কথাই ধরা যাক। এমন কোনো বাড়ি ছিল না যে, বাড়িতে একটা করে কুয়া ছিল না। এই কুয়াই ছিল তাদের পানির উৎস এবং সংরক্ষণের স্থান। এখন আর সেই দিন নেই। আধুনিক সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এখন পাল্টে গেছে অনেক কিছুই। এখন মানুষ স্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেক বেশি সচেতন হয়েছে। সচেতন হয়েছে পানির ব্যাপারে। যেহেতু, বেশির ভাগ রোগই পানিবাহিত। মানুষ যেদিন থেকে পানির ব্যাপারে সচেতন হয়েছে, প্রায় সেদিন থেকেই তৈরি করা হয়েছে ট্যাঙ্ক। এখন বাজারে রয়েছে হরেক রকমের ট্যাঙ্ক। এসব ট্যাঙ্কের দরদাম এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। লিখেছেন ইকবাল খন্দকার
ট্যাঙ্কের প্রকারভেদ
আমাদের দেশে যেসব ট্যাঙ্ক পাওয়া যায়, সেগুলোর বেশিরভাই আমাদের দেশে তৈরি করা হয়। তবে, কাঁচামাল আমদানি করা হয় চীন এবং কোরিয়া থেকে। বাজারে যেসব ট্যাঙ্ক জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেœখযোগ্য কয়েকটি হলোÑ গাজী, পদ্মা, দেশ, বস এবং মদীনা। এসব ট্যাঙ্ক বিভিন্ন আকারের হয়ে থাকে। ট্যাঙ্কটি যে স্থানে স্থাপন করা হবে, সে স্থানের পরিমাপ অনুযায়ী ট্যাঙ্ক কেনা উচিত। দৈনিক কতোটুকু পানির প্রয়োজন, তা তো অবশ্যই বিবেচনা করতে হবে।
বাজারদর এবং অন্যান্য
ট্যাঙ্কের দাম নির্ভর করে আকারের ওপর। অর্থাৎ, যতো বড় ট্যাঙ্ক ততো বেশি দাম। তাই, এর দাম নির্ধারণ করা হয় লিটার হিসেবে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের এসব ট্যাঙ্ক ৭ দশমিক ৫০ টাকা হিসেবে বিক্রি হয়। সেই হিসেবে ৫০০ লিটার পানি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন এককটি ট্যাঙ্কের দাম পড়বে ৩ হাজার ৭৫০ টাকা। তবে, প্রতিষ্ঠান ভেদে এই দাম একটু কম-বেশিও হতে পারে। প্রায় প্রতিটি ট্যাংকেই বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যায়। ট্যাঙ্কটি কিনে এনে স্থাপন করার সময় লক্ষ রাখতে হবে, এটি সমান জায়গায় বসলো কিনা। জায়গা সমান না হলে আগে সমান করে নিতে হবে তারপর বসাতে হবে। কারণ, অসমান জায়গায় বসানোর কারণে যে কোনো ট্যাঙ্ক অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ট্যাঙ্ক ব্যবহার শুরু করার পর তিন মাস পর পর এর ঢাকনা খুলে পরিষ্কার করে নিতে হবে। নইলে ময়লা জমে জীবাণুর সৃষ্টি হবে। পরিষ্কার করার সময় ফিটকিরি এবং ব্লিচিং পাউডার ব্যবহার করতে হবে। এতে সহজেই ট্যাঙ্ক জীবাণুমুক্ত হবে। বসতবাড়িতে ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে যুৎসই ট্যাঙ্ক হলো প্লাস্টিকের ট্যাঙ্ক। কেনার সময় অবশ্যই গ্যারান্টি কার্ডটি সংগ্রহ করবেন এবং পরবর্তীতে সেটি সংরক্ষণ করবেন। এতে ট্যাঙ্কে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত সমাধান করা সম্ভব হবে। ট্যাঙ্ক পাওয়া যাবে যে কোনো অভিজাত মার্কেটেই। তবে, কেনার সময় কোম্পানির লোগো ভালোভাবে দেখে নেয়া আবশ্যক।
বিদেশে ৩ দেশি ডিজাইনারের
পোশাক
‘অল সিল্ক ইয়ার্ডস অব দ্য বেনারসি’ শিরোনামে আগামী ২৪ নভেম্বর লন্ডনের স্পাইটালফিল্ডসের খ্রিস্টান চার্চে এক জমকালো ফ্যাশন শোয়ের আয়োজন করছে যুক্তরাজ্যের ফ্যাশন সংস্থা ‘পারা’। বাংলাদেশ, ভারত, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির প্রথিতযশা ফ্যাশন ডিজাইনাররা এ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করবেন। বেনারসি ও মিরপুর সিল্কের মাধমে কাপড়ে ভিন্নতা ও মানুষের ভবিষ্যৎ ফ্যাশনকে প্রাধান্য দিয়ে এ শোয়ে বাংলাদেশ থেকে তিনজন ডিজাইনারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। শাহনাজ প্লামন্দন (কুহু), তুতলী রহমান এবং এ বি ওয়ালীউদ্দিন আহমেদ (সুজন) এ শোয়ে তাদের ডিজাইন প্রদর্শন করবেন।
লিফটের আদবকেতা
বহুতল ভবন যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে লিফটের ব্যবহার। লিফট ব্যবহারকারীরা জেনে নিতে পারেন কিছু নিয়মকানুন।
চড়ার আগে
- আগে নামতে দিন পরে উঠুন।
- নিজে ঢোকার পর অন্যদের ঢোকা ও দাঁড়ানোর জন্য জায়গা করে দিন। ঢোকার সময় কার (এলিভেটর চেম্বারকে কার বলা হয়) ধরে উঠবেন না।
- এক বা দোতলায় যেতে লিফট ব্যবহার না করাই ভালো। অবশ্য শারীরিকভাবে অক্ষম, মালপত্র বা সঙ্গে বাচ্চা থাকলে আলাদা কথা।
- কল বাটন চেপে থাকলে এলিভেটর না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। কারণ এলিভেটর আপনার তলায় আসার পর আপনাকে না পেলে অবস্থানরতরা বিরক্ত হবেন।
চড়ার সময়
- যিনি বাটন চাপবেন তিনি সবার পক্ষেই বাটন চাপুন। অন্যরা কাক্সিক্ষত তলার সংখ্যা বলুন। অন্যকে ধাক্কা দিয়ে বাটন চাপবেন না। কেউ না চাপলে নিজে চাপুন।
- অন্যের দিকে বিনা প্রয়োজনে তাকাবেন না।
- কারো সঙ্গে কথা বলতে বলতে এলিভেটরে প্রবেশ করলে ঢোকার পর অবশ্যই আস্তে কথা বলুন। কোনো বিষয়ে বিতর্ক করবেন না।
- চড়ার সময় জরুরি ফোন রিসিভ করলে আস্তে ও সংক্ষেপে কথা বলুন। তবে ব্যক্তিগত কথা হলে ফোন রিসিভ না করাই ভালো।
- বাচ্চাদের বাটন চাপতে দেবেন না।
- এলিভেটরে মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দিন।
- কারো জন্য লিফট থামিয়ে রাখবেন না। প্রয়োজনে নেমে পড়ুন এবং পরে এক সঙ্গে আবার উঠুন।
- সব শেষে তলায় নামলে কারের একেবারে ভেতরে গিয়ে দাঁড়ান। ভিড় বেশি হলে পরবর্তী তলায় নেমে অন্যদের নামতে দিন তারপর উঠুন।
গেজেট রাখুন পরিষ্কার
মেহেদী সুমন
শুধু কম্পিউটার, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন, টেলিভিশন কিংবা মিউজিক প্লেয়ারই নয়, গ্যাজেটও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা জরুরি। তাহলে জেনে নিন কিভাবে পরিচ্ছন্ন রাখবেন
০০ কম্পিউটারের মনিটর পরিষ্কার করার জন্য অল্প ভেজা কাপড় ব্যবহার করুন। কম্পিউটারের ইলেকট্রিক ওয়্যার পরিষ্কার করার জন্য ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের হোস অ্যাটাচমেন্ট ব্যবহার করা ভালো। এলসিডি স্ক্রিন পরিষ্কার করার জন্য নরম, শুকনো সুতির কাপড় ব্যবহার করুন। নন-এলসিডি স্ক্রিন পরিষ্কারের জন্য নরম একটি কাপড় হাতে নিন। তারপর পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন। কিবোর্ড উল্টে রাখুন। তারপর সুতির মোটা কাপড় সামান্য রাবিং অ্যালকোহলে ডুবিয়ে নিয়ে কিবোর্ড পরিষ্কার করুন। কম্পিউটার স্ক্রিন পরিষ্কারের জন্য হাউসহোল্ড গ্লাস ক্লিনজার ব্যবহার করবেন না।
০০ কিবোর্ডে লিকুইড কোনো খাবার পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কম্পিউটার শাট ডাউন করে ফেলা উচিত। তারপর কিবোর্ড সামান্য উল্টে ফেলুন। লিকুইড যদি চ্যাটচেটে না হয়, তাহলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করুন। ভিজে ভিজে ভাব কেটে যাবে। তারপর নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলুন। তারপরও যদি পরিষ্কার না হয়, তাহলে কম্পিউটার টেকনিশিয়ানের সাহায্য নিতে হবে।
০০ মাউসে ময়লা ঢুকলে মাউস খুলে নিয়ে ভেতরের বল বের করে নিন। এরপর সুতি কাপড়ে সামান্য ভিনেগার দিয়ে মুছে ফেলুন।
০০ ক্যামেরা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হলে প্রথমেই ক্যামেরার উপযুক্ত ক্লিনিং কিট কিনে নিতে হবে। তারপর লেন্সের ওপর জমে থাকা ধুলো লেন্স ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করে নরম টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলতে হবে। লেন্স টিস্যু বা নরম কাপড়ে সামান্য লেন্স ক্লিনিং দিয়ে সার্কুলার মুভমেন্টে লেন্স পরিষ্কার করতে হবে। তবে লেন্সের ওপর লিকুইড স্প্রে করা ঠিক হবে না। লেন্স টিস্যু দিয়ে জোরে ঘষা যাবে না।
০০ মোবাইল ফোনে জমে থাকা ধুলো-ময়লা এবং আঙুলের ছাপ দূর করার জন্য ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপরও ধুলো থেকে গেলে পানিতে সামান্য ডিটারজেন্ট মিশিয়ে নিন। এর মধ্যে কাপড় ডুবিয়ে নিয়ে মুছুন।
০০ টিভি স্ক্রিন পরিষ্কার করার জন্য পরিষ্কার সুতির কাপড় ব্যবহার করুন। টিভি স্ক্রিনের ওপর সরাসরি স্ক্রে বা সলভেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। পেপার টাওয়েলে সামান্য ভিনেগার বা স্প্রে দিয়ে টিভির স্ক্রিন মুছে ফেলুন। টিভির পেছনের অংশের যেখানে বৈদ্যুতিক তার থাকে, সেই অংশ ভ্যাকুয়াম ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন।
০০ ধুলো জমলেই সিডি প্লেয়ারে সমস্যা শুরু হয়। তাই এটি ক’দিন পরপরই পরিষ্কার করুন। গ্যাজেটস ভালো রাখার জন্য বিশেষ করে কম্পিউটারে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অ্যান্টি-ভাইরাস আপডেট করুন।
০০ ক্যামেরা, কম্পিউটার বা মোবাইল ব্যাকআপ সবসময় স্টোর করে রাখুন। কারণ যেকোনো সময় গ্যাজেটসে সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্টোর করে রাখলে সমস্যা দেখা দিলেও প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পেয়ে যাবেন।
০০ বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সময় ক্যামেরা, ল্যাপটপ, প্যাক করার সময় উপযুক্ত ব্যাগ বেছে নিন। কারণ অতিরিক্ত আর্দ্র আবহাওয়ায় ক্যামেরার লেন্সে ফাঙ্গাস পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই ভালোভাবে পরিষ্কার করে ব্যাগের মধ্যে ভরে নিন। সিলিকা জেলের ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন। এই ব্যাগ অতিরিক্ত ময়শ্চার শুষে নিতে সক্ষম। সর্বোপরি আপনার প্রতিটি যান্ত্রিক জিনিসের প্রতিটিই বাড়তি নজর দিন। এতে অতিরিক্ত ধুলো-ময়লাও জমবে না, খুব ঘনঘন পরিষ্কারের ঝামেলাটাও থাকবে না।
যুক্তরাষ্ট্রে
উচ্চশিক্ষা
যুক্তরাষ্ট্রে
উচ্চশিক্ষা
হ প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন তানভীর
বেশিরভাগের কাছেই স্বপ্নের দেশ যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকা বললে সহজেই চেনে সবাই। বারাক ওবামার দেশ। বিশ্বের সেরা সেরা অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই রয়েছে।
হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যেটি বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে র্যাংকিংয়ে প্রথম। সবচেয়ে বেশি নোবেল পুরস্কারধারী এ বিশ্ববিদ্যালয়টি যুক্তরাষ্ট্রে। পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠতম স্থান। এখান থেকে অনার্স, মাস্টার্স, পিএইচডিসহ সব ধরনের ডিগ্রিই লাভ করা যায়। বহুল আলোচিত এ দেশটিতে পড়াশোনার বিভিন্ন দিক নিয়ে আমাদের এবারের রচনা।
এখানকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ¯িপ্রং, মে থেকে জুলাই পর্যন্ত সামার এবং আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ফল, সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়।
ভর্তির যোগ্যতা
চার বছরের ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য প্রয়োজন ১২ বছরের এবং ২ বছরের মাস্টার্স ডিগ্রির জন্য ১৬ বছরের শিক্ষাজীবন। মাস্টার্স ও ব্যাচেলর উভয় ডিগ্রির ক্ষেত্রে ঞঙঊঋখ এর ঈইঞ- তে ১৭৩ থেকে ২৫০ এবং ওইঞ তে ৬১ থেকে ১০০ পয়েন্ট থাকতে হবে। এছাড়া কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ব্যাচেলর ডিগ্রির ক্ষেত্রে ঝঅঞ এবং মাস্টার ডিগ্রির ক্ষেত্রে এজঊ, এগঅঞ ইত্যাদি ঞবংঃ- এর প্রয়োজন।
পড়ার বিষয়
যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার হাজারো বিষয় রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি হলো বায়োলজি, কেমিস্ট্রি, কম্পিউটার সায়েন্স, ইকোনমিকস, হিস্টরি, ম্যাথ, ফিলোসফি, পলিটিক্যাল সায়েন্স, মেডিসিন, ফিজিক্স, ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, মডার্ন ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার, উইমেন স্টাডিজ, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যারিজ অ্যান্ড ফ্যামিলি থেরাপি প্রভৃতি।
টিউশন ফি ও জীবন ধারণের খরচ
ব্যয় সব সময়ই নিজের ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত এখানে আপনার পড়ার খরচ ব্যতীত বছরে খাবার, কাপড়, যাতায়াত, ভ্রমণ, টেলিফোন ও অপ্রত্যাশিত ব্যয় মেটাতে খরচ হবে প্রায় ৪ হাজার থেকে ১০ হাজার মার্কিন ডলার। আর টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে ভিন্ন হয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক ১১ হাজার থেকে ২০ হাজার এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে বার্ষিক প্রায় ৩০ হাজার মার্কিন ডলার টিউশন ফি দিতে হয়।
আবেদন করবেন কীভাবে?
প্রথমেই বিশ্ববিদ্যালয় নির্ধারণ করুন। পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ের যে বিভাগে ভর্তি হতে চান সেখানকার আবেদনপত্রের সময়সীমা দেখে নিন। ভর্তির সকল শর্ত ও যোগ্যতা দেখুন। অনেক বিশ্ববিদালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে আবেদনপত্র ডাউনলোড করা যায়। সব কাগজপত্রসহ পুরো প্রক্রিয়া অন্তত এক বছর আগে শুরু করা উচিত। আপনার কাগজপত্র জমা দেয়ার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যেই তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনপত্র সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে। তার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট, মার্কশিট, আবেদনপত্র ক্রয়ের রশিদ, স্কুল বা কলেজ ত্যাগের প্রমাণপত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার আলোকে ওঊখঞঝ, ঞঙঊঋখ, ঝঅঞ, এজঊ, এগঅঞ ইত্যাদির রেজাল্ট, স্পন্সরের কাছ থেকে প্রাপ্ত আর্থিক দায়দায়িত্বের চিঠি, সদ্যতোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি প্রভৃতি জিনিসের প্রয়োজন রয়েছে। এসব কাগজপত্র হতে হবে অবশ্যই ইংরেজিতে।
ক্রেডিট ট্রান্সফার
যুক্তরাষ্ট্রে আন্ডার গ্রাজুয়েট বা পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিগ্রির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা ক্রেডিট ট্রান্সফারের আবেদন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে কোর্সের ৫০ ভাগের বেশি সম্পন্ন হলে অগ্রহণযোগ্য হবে। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই ‘ই’ গ্রেড পর্যন্ত গ্রহণ করে।
সংশিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদা অনুযায়ী কাগজপত্র দিতে হবে।
বাংলাদেশে সর্বশেষ যেটুকু আপনি পড়াশুনা শেষ করেছেন তার প্রমাণপত্রও থাকতে হবে।
সংসদ ভবন চত্বরে...
সূর্য পশ্চিম আকাশে একটু হেলে পড়লেই শুরু হয় লোকজনের আনাগোনা। সূর্য যতো পশ্চিমে হেলতে থাকে লোকজনের ভিড় ততোই বাড়তে থাকে। তবে সন্ধ্যার পর পরই আবার ফাঁকা হয়ে যায় পুরো এলাকা। বিকেল থেকেই চলে জায়গা দখলের প্রতিযোগিতা। নিরাপত্তা বেষ্টনীর বাইরে যতোটুকু জায়গা আছে ততোটুকুই। তার সঙ্গে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ে ভ্রাম্যমাণ হকার আর দোকানিরা। পসরা সাজানোর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে তারা। কি নেই সেখানে। চটপটি-ফুচকা, বাদাম-মুড়কি, হালিম, মিনি চাইনিজ, শীতের ভাপা ও চিতই পিঠা। খাবারের দোকানের পাশাপাশি রয়েছে ছোট্টমণিদের খেলনার দোকান। দোকনগুলো স্থায়ী নয়, তবুও এমনভাবে সারিবদ্ধ, দেখলে মনে হয় পরিকল্পনা করে সাজানো। রয়েছে আরো বিচিত্র সব আয়োজন। একদিন বিকেলে হাঁটতে গেলেই বার বার জায়গাটি যেন সবাইকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। অবরুদ্ধ নগরজীবনে খোলা আকাশের নিচে এমন সাজানো বাগানে কার না আসতে মন চায়? জায়গাটি কি চিনতে পারলেন? হ্যাঁ, মহানগরী ঢাকায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার এই জায়গাটির নাম সংসদ ভবন চত্বরÑ তরুণ-তরুণী, কিশোর-কিশোরী, এমনকি ছোট্টমণিদের কাছেও এ জায়গাটি পরম প্রিয়, আকর্ষণীয়।
অপেক্ষার প্রহর
সংসদ ভবনের সামনে একটি মেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছে। বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা। চোখে-মুখে বিরক্তির ছাপ। একটু পরেই ঠোঁটের কোণে চাপা হাসি আর মুখে অভিমানের অভিনয়। প্রিয়জন এসেই অভিমান খাড়া করে নানা অজুহাত। তারপর দুজনের মুখে হাসি, পরে হাত ধরাধরি। খুব কাছাকাছি পাশাপাশি হাঁটতে থাকে। খুঁজতে থাকে বসার জায়গা। শীতের বিকেলে শিশির ভেজা নরম ঘাস। তার ওপর রুমাল বিছিয়ে দু’জন দু’জনার মুখোমুখি। চলে মনের কথার আদান-প্রদান। অভিমান, অনুরাগ। তার সঙ্গে যোগ হয় চিনা বাদাম কিংবা চটপটি, ফুচকা। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে দু’জনের বর্তমান-ভবিষ্যতের হিসাব-নিকাশ। ‘ফুল নেবে গো, ফুল’ কথামালার ঝুরি নিয়ে তাদের এই পরম আনন্দ মুহূর্তে হাজির হয় ছোট ছোট শিশুরা। হাতে বকুল ফুলের মালা। দু’জনের মধ্যে শিশুরা বেছে নেয় ছেলেটিকে। বলতে থাকে - ‘আপনাদের দু’জনকে খুবই মানাইছে। ভাইয়া, আপুরে মালা কিইন্যা দ্যান। নাইলে দুইডা টাকা দেন, পিডা কিইন্যা খামু।’ বিরক্তিতে তাদের তাড়িয়ে দিতে পারলেই যেন বাঁচে। এমনি ধরনের অনেক জুটিই ভিড় করে এখানে। ছিন্নমূল ছোট ছোট শিশুদের ছোট ছোট বিরক্ত ছাড়া আর কোন সমস্যা নেই বলে জানালেন অনেকে। এটি তাদের পছন্দের জায়াগা বলেই জানালেন তারা।
দল বেঁধে আড্ডা
শীতের পড়ন্ত বিকেলে আপনজনদের মধ্যে যদি আড্ডা হয় এক খোলা আকাশের নিচে তবে তো মহাআনন্দের ! আর তাই চার দেয়ালের মধ্যে আবদ্ধ কোন রেস্তোরাঁ বা কফি হাউজে না গিয়ে অনেকে বেছে নিয়েছেন সংসদ ভবনের সামনে খোলা মুক্ত প্রাণবন্ত এই সবুজ চত্বরটি। দল বেঁধে ছুটে আসে তারা। একে অপরকে জানা আর সুখ-দুঃখের গল্পে স্মৃতিময় হয়ে থাকে জাতীয় সংসদ ভবনের এই প্রাঙ্গণটি।
পরিবারের সদস্যরাও খুঁজে বেড়ায় একটু শান্তিময় খোলা জায়গা। সুযোগ পেলেই পরিবারের সদস্যরা মিলে ছুটে যায় সংসদ ভবন চত্বরে। স্ত্রী-পুত্র-কন্যা নিয়ে হাজির হয় কেউ কেউ। ছোট্টমণিরা বাবার হাত ছেড়ে ঘুরে বেড়ায় একা একা। কখনো ছোট ভাইয়ের হাত ধরে। বাবা-মা কোনো এক কোণে বসে বাকি জীবনের হিসাব যেন সেরে নেয়। কখনো কখনো ছেলে আবদার করে বেলুন কিংবা ছোট ছোট খেলনা কিনে দেওয়ার জন্য। ছেলের আবদার রাখতে দর-দাম করে দোকানিদের সঙ্গে। তবে পরিবারের সদস্যরা সাময়িক ঘুরার জন্য এই জায়গাটিকে বেছে নিলেও বর্ষাকালে আসা হয় না বললেই চলে।
দোকানিদের সুখ-দুঃখ
বাহারি নামের দোকান দেখে মুগ্ধ না হওয়ার কারণ নেই। নাম শুনেই অবাক হতে হয়। ‘ইয়ানতুন খাই যান’, ‘ধুম-ধাড়াক্কা’ আর ‘ইভিনিং ভ্যালি’ নাম শুনে কার না ভালো লাগবে। কিছু চটপটি-ফুচকার দোকান, কিছু মিনি চাইনিজ। শীতের আমেজে ফুচকা আর গরম গরম হালিমের চাহিদাই আলাদা। দিনে হাজারো লোকের আনাগোনা এখানে। যতো বেশি মানুষের ভিড়, ততো বেশি দোকানিদের আনন্দ। বিশেষ করে শুক্রবারের অপেক্ষায় থাকে তারা। শুক্রবার এলেই দুপুর থেকেই নেমে পড়ে খাবার নিয়ে। কোনো কোনো দোকানি আসে শুধু খেলনা নিয়ে। কেউ আসে ওজন আর দৈর্ঘ্য মাপার যন্ত্র নিয়ে। কেউ বা নানা রং-বেরংয়ের বেলুন নিয়ে। বিকেলে লাল, নীল, গোলাপি রংয়ের এই বেলুনগুলোই শোভা পায় ছোট ছোট শিশুদের হাতে। দাম নিয়ে কারো কোনো আপত্তি নেই। তবে দুএকজনের অভিযোগ, ‘তুলনামূলক একটু বেশি। আর তাতো হবেই।’
নাজমুল হোসেন তানভীর
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




