সম্প্রতি টিপাই মূখ নিয়া রাজনৈতিক অঙ্গনে টিপিটিপি শুরু হয়েছে যা খুবই দঃখজনক। এটা একটা জাতীয় ইস্যু, বাংলার মানুষের পরিবেশ ও জীবনরে ইস্যু। ই সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের সবার এগুতে হবে কোন দল মত অবিবেচনায় রেখে। কারণ ফারাক্কা বাধের মাসুল আজও আমরা দিচ্ছি। বিশেষ করে আমাদের এই ১৪ কোটি মানুষের তিন কোটি মানুষই হাড়ে হাড়ে ভারদের এই অদূরদর্শীতার মূল্য দিচ্ছে। এমন গত ৬০ বছরে ১৩০ টার বেশি মিটিং সিটিং করেও আমরা দুই বন্ধু দেশ কোন সমাধানে আসতে পারিনি। এত কিছুর পরে ১৯৯৬ সালে যে চুক্তিটা হয়েছিলো তাও ঠিকঠাক মানা হচ্ছে না, ফলে আশার আলো বার বার হোচট খাচ্ছে আমাদের উভয় দেশের হেয়লীড়নার কারণে।
যাগগে সে কথা। কিন্তু টিপাই মুখ নিয়া আমাদের মত কিছু সংগঠন বাংলাদেশে এবং ভারতে সরব থাকলেও ভারত সরকার গত বছর টিপাইমূখী বাধ প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন করে। এটা সত্যিই অবাক হওয়ার বিষয় তখন কোন দলই এই বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামানোর চেষ্টা করেননি, বরং শুধু নির্বাচন আর জনগণকে ফুসলানো নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। এমনকি আমাদের গত স্বল্প দৈর্ঘ্য মেয়াদী সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন কি না তা আমার অজানা।
গতকিছুদিন যাবত কোন কোন নব্যরাজনীতিক টিপাইমুখ নিয়ে যে এলোমেলো বক্তব্য দিয়েছেন তা জাতির অপ্রত্যাশিত্ কারণ এই মুহুর্তে আমরা সবই যদি সরকারের ঘাড়ের উপর চাপাই তাহলে আমরা যারা অনেকে অনেক কিছু করতে চাই তাঁদের বসে বসে আঙ্গুল চোষা ছাড়া আর কি হতে পারে।
হ্যাঁ আমরা সমালোচনা করতে পারি, সরকারকে চাড় দিতে পারি। কিন্তু তা কি সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে প্রভাবিত করে? তা কি সরকারের প্রতি পথ নির্দেশ করে? আমাদের দাবী কি সরকারের পক্ষে বাস্তবায়ন করা স্সম্ভব? যদি তা না হয় তাহলে বেশি প্যাচাল পেড়ে আয়ু কমানোর কোন মানে হয় না।
টিপাই মুখী বাঁধ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বারতের দেশীয় স্বার্থে , এখানে অত সহজে ভারত আমাদের ছাড় দেবে না। সেখানে আমরা যদি লাঠি সোঠা নিয়ে যুদ্ধের হুমকি দেখাই, ধর্মের নামে মুসলিম সেন্টিমেন্টকে ব্যবহার করি, তাহলে তাঁর ফলাফল আসবে শূন্য। আমরা যদি ভাষানী সাহেবের ফারাক্কা আন্দোলন দেখি, ইন্দিরা গান্ধীকে লেখা চিঠি দেখি আমাদের টিপাইমূখ নিয়ে অনেক কিছু করতে উতসাহিত করবে, কিন্তু আমরা যদি ফারাক্কা আন্দোলনের ফলাফল দেখি তাতেও কিন্তু অনেক কিছু নিরুতসাহিত করবে।
তাহলে টিপাই মুখ নিয়ে আমরা কি করতে পারি?
১. আমরা আমাদের রাষ্টীয় সর্ম্পকে কাজে লাগাতে পারি।
২. আমাদের সিভিল সোসাইটিকে এক করতে পারি।
৩. আমরা আন্তর্জাতিক ফোরামে এটা নিয়ে কথা বলতে পারি।
৪. এটার ভাল মন্দ নিয়ে উভয় সরকারকে উদ্যেগ গ্রহণের জন্য ভূমিকা পালন করতে পারি।
৫. ভারতের যে গ্রুপটা টিপাইমূখ নিয়ে সরব তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়িয়ে একসাথে কোন কর্মসূচী গ্রহণ করা যেতে পারে।
৬. ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে একটি বৈঠক হতে পারে।
৭. ভারত সরকারকে আমরা কয়েক হাজার স্থানীয় লোকের হাতে লেখা পোস্টকার্ড পাঠাতে পারি (ভারতের আন্ত নদী সংযোগ প্রকল্প বন্ধ করতে আমরা এটা করেছিলাম।)
৮. সব দলের সমন্বয়ে একটি বিশেষ ফোরাম গঠন করা যেতে পারে
৯. সবার একসুরে কথা বলতে হবে।
১০. প্রস্তাবিত প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা, ভবিষ্যত এবং আনুমানিকক্ষয় ক্ষতি নিয়ে পুস্তিকা প্রনয়ন করতে পারি
১১. সেই ফোরামের ব্যানারে ইংরেজী এবং বাংলা পত্রিকায় ক্রোড়পত্র প্রকাশ করতে পারি।
১২. সর্বপরি আমাদের সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে প্রতিটি পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমরা কি তার কিছুই করতে পেরেছি? তাহলে টিপাই মুথ নিয়ে এত টিপাটিপি কেন?