করোনায় প্রাণহানীর দিক থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমেরিকা, ইতালী, স্পেন, বৃটেন ও ফ্রান্স; একই সময়ে, এই দেশগুলি অর্থনৈতিকভাবেও খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; অপেক্ষাকৃতভাবে কম-প্রাণহানীর পরও, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাংলাদেশ, লেবানন, ভারত। আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলো শেষ অবধি করোনাকে থামাবে, ভারত মোটামুটি বেশ স্বাবলম্বী ও কঠোর ব্যুরোক্রেটদের দেশ; ইহা আগামীতে বেশ নির্দয়ভাবে কিছু নিয়ম কানুন মেনে কম-সময়ে রিকোভারী করবে; কিন্তু বাংলাদেশের রিকোভারী নির্ভর করবে অন্য জাতিদের উপর: আরব, মালয়েশিয়া, ইউরোপ ও আমেরিকার রিকোভারীর অনেক পরে বাংলাদেশ কিছুটা স্বাভাবিক হবে; কারণ, বাংলাদেশ মোটামুটি কোন কিছুতেই স্বনির্ভর নয়; যদিও বলেছে যে, দেশ খাদ্যে স্বনির্ভর, আসলে তা সঠিক নয়, শুধু চাউলের বেলায় ১ বছরের জন্য কিছুটা স্বনির্ভরতার কাছাকাছি।
ফরেন কারেন্সীর জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি নির্ভর করে গার্মেন্টস ও রেমিটেন্সের উপর; প্রথমত; গার্মেন্টস'এ সময় লাগবে: ইউরোপ ও আমেরিকার মানুষের চাকুরী ফিরে পেলে, তারা মলে যাবে, কাপড় কিনবে। রেমিটেন্সের অবস্হা খুবই খারাপ হবে, আরবে মানুষ থাকলেও, অনেকের কাজ থাকবে না, কাজ হারানোর পরও অনেকেই দেশে ফিরবে না; অনেকে বেতন পাবে না, তেলের দাম মাটির সাথে মিশে গেছে, এবং যেই পরিমাণ অতিরিক্ত তেল বাজারে আছে, ইহা বিক্রয় হতে সময় নিবে, এয়ার লাইনসগুলো দীর্ঘ সময় অলস পড়ে থাকবে।
ইউরোপে যেসব বাংগালী অবৈধভাবে ছিলেন, তাদের বড় অংশ করোনার ভয়ে পালিয়ে এসেছেন; এরা লিবিয়া হয়ে, আর সহজে অবৈধভাবে ইউরোপে সহজে প্রবেশ করতে পারবেন না। আমেরিকাতে নিউইয়র্কের বাংগালীরা লন্ডভন্ড হয়ে গেছেন, এদের রেমিটেন্স কমে যাবে; কাছাকাছি অবস্হা হবে লন্ডনের।
দেশে নতুন করে চাকুরী সৃষ্টি করার জন্য সরকারী উদ্যোগের কোন সম্ভাবনা নেই; ফাইন্যান্স ও প্ল্যানিং'এ যারা আছেন এরা পেছনে-পড়া, কমদক্ষ লোকজন; পুরো সরকার, ব্যুরোক্রেসী ও প্রশাসন ভরে আছে প্রাচীনপন্হি লোকজনে; এরা করোনা নিয়ে কোন প্রস্তুতিই নিতে সক্ষম হয়নি; ফলে, অর্থনৈতিক ও ফাইন্যান্সিয়েল বিপর্যয় থেকে বের হওয়ার মতো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এদের থাকার কথা নয়।
এই মহুর্তে সরকার যদি বেকার মানুষগুলোকে কাজে লাগানোর বিবিধ প্রজেক্ট সৃষ্টি করতে পারতো, তা'হলে সমস্যা কমে আসতো; কিন্তু দেশের ৪৯ বছরের ইতিহাস, দেশে প্রচুর সম্পদ থাকা সত্বেও এরা মানুষের জন্য শিক্ষা, চাকুরী, চিকিৎসা ও বাসস্হানের ব্যবস্হা করতে পারেনি; এবারও পারবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মে, ২০২০ দুপুর ১২:২৬