মনে হয়, আওয়ামী লীগকে থামাতে হলে দরকার আরেকটি আওয়ামী লীগ; পাগলা হাতীকে থামাতে হাতীই লাগে। আওয়ামী লীগ ছিলো বাংগালী জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা ও রক্ষক; সময়ের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের সৃষ্টি হয়েছিলো মাওলানা ভাসানী ও ততকালীন বাংগালী রাজনীতিবিদদের নেতৃত্বে; আজকের আওয়ামী লীগ বাংগালী জাতিয়তাবাদের প্রবক্তা ও রক্ষক সেই পুরানো আওয়ামী লীগ নয়; বরং ইহা একটি ভালো মুসলিম লীগ, কিংবা শক্তিশালী বিএনপি। ইহাকে থামানোর জন্য তৃণমুল আওয়ামী লীগ থেকে আরেকটি আওয়ামী লীগের জন্ম হবে।
আজকে আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে দেশ চালাচ্ছে, এইভাবে অন্য কোন দল দেশ চালালে, এবং আওয়ামী ক্ষমতার বাহিরে থাকলে, আওয়ামী লীগ এই সরকারকে থামিয়ে দিতো। আইয়ুবকে থামাযয়েছে আওয়ামী লীগ ও মাওলানা ভাসানী। জেনারেল ইয়াহিয়ার গণহত্যা ও তার মিলিটারী সরকারকে থামনোর সময়ও মুল নেতৃত্বে ছিলো আওয়ামী লীগ। যদিও দীর্ঘ সময় লেগেছে, বিএনপি-জামাতকেও থামায়েছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জামাতকে থামাতে বেশী সময় লাগার একটা কারণ হচ্ছে, মাওলানা ভাসানীর অনুপস্হিতি।
আওয়ামী লীগের সকল সফলতায় একটা বড় শক্তি ছিলেন মওলানা ভাসানী; আজকে মওলানা ভাসানী থাকলে, শেখ হাসিনা কখনো, কোনভাবেই ৪০ বছর আওয়ামী লীগের সভাপতি থাকতে পারতেন না; এবং ১,২ ,৩ বলেই জুটমিল বন্ধ করা যেতো না। মওলানা ভাসানী যেই সময়ে জাতিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, সেই সময় জাতির বড় অংশ ছিলেন অশিক্ষিত, এবং ক্ষমতাসীন অংশ ছিলো ধুর্ত; আমাদের জাতি মাওলানার দীক্ষাকে সঠিকভাবে রপ্ত করতে পারেনি, ধুর্তরা উনার ভাবনাকে মুছে দিয়েছে। ন্যাপ বলতে বুঝাতো মাওলানা ভাসানীকে, আওয়ামী লীগ বলতেও মাওলানাই চলে আসেন; উনি নেই বলেই আওয়ামী লীগের এই অবস্হা!
দেশে রাজনৈতিক শুন্যতা বিরাজ করছে, আওয়ামী লীগ বাংগালী জাতীয়তাবাদের রাজনীতি থেকে সরে গেছে; কিন্তু দলের কাঠামো এখনো আছে; রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের গুরুত্ব নেই, গ্রহনযোগ্যতা কমে গেছে, ইহা সরকার হিসেবে শক্তিশালী অবস্হানে আছে; কারণ, প্রশাসন ইহাকে নিজেদের স্বার্থে শক্ত হাতে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ভেতর থেকে আরেকটা আওয়ামী লীগের জন্মের জন্য জাতিকে অপেক্ষা করতে হবে, মনে হয়।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২০ বিকাল ৫:২৯