আলু, পেঁয়াজ, চাউলের দাম বাড়লে শিক্ষিতরা কয়েকদিন ম্যাঁওপ্যাঁও করেন; তারপর, সবার সাথে সিষ্টেমকে মেনে নিয়ে গাধার ঘানি টানেন, সমাধান খোঁজেন না কখনো।
এক সময়, বাংলাদেশের মানুষ শুধুমাত্র চাউল'এর মুল্য নিয়েই দু:খের মাঝে ডুবেছিলো, কিছু মানুষের মৃত্যু হয়েছিল, মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হয়েছিলো; এরপর চাউল নিয়ে অনেক তথাকথিত ব্যবসা হয়েছে, অনেকে হাজার কোটী টাকা আয় করে নিয়েছে চাউল নিয়ন্ত্রণ করে, এখনো চাউল, গম থেকে অন্যায়ভাবে আয় করছে আবুল খায়ের ও শত শত মিডলম্যানরা। এখন নতুন করে, পেঁয়াজ, আলু ইত্যাদি নিয়ে সীমিত আয়ের শিক্ষিতরা কান্নাকাটি করছেন, মিডিয়ায় কথা বলছেন, ফেইসবুকে লিখছেন, ব্লগে পোষ্ট দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঘন বসতির দেশ, যেখানে কৃষি জমি কমে গেছে দ্রুত গতিতে, এবং জমি ছোট ছোট খন্ডে বিভক্ত হয়েছে পরিবারের সদস্যদের আলাদা হওয়ার কারণে। চাষী পরিবার ক্রমেই শ্রমিকে ও প্রবাসী শ্রমিকে পরিণত হয়েছে, অনেক জমির মালিক কৃষি শ্রমিকে পরিণত হয়েছে; জমির মালিকানা বদলে গেছে, জমির দাম আমেরিকার সমান বা তার থেকে বেড়েছে।
ভুমিহীন কৃষক, স্বল্প জমির মালিক কৃষক, নিজ পরিবারের ভাত-যোগানোর কৃষকেরা কোন সময় নিজ প্ল্যানে কি চাষ করবেন, কি পরিমাণ চাষ করবেন, সেটা কি রা্ষ্ট্র ও ঢাকা ইউনিভার্সিটির পেঁয়াজ-খেকো শিক্ষক জানেন, সামুর ব্লগার জানেন, ফেইসবুকে স্ত্রীর ছবি-প্রকাশক বুদ্ধিজীবি জানেন, সেক্রেটারিয়েটের কেরানীরা জানেন?
বাংলাদেশের কৃষক কখন কি ফসল করবেন, কি পরিমাণ করবেন, এবং সেই ফসল সঠিভাবে হবে কিনা, উহা দেশের মানুষের জন্য যথেষ্ঠ কিনা, কেহ "সঠিকভাবে অগ্রিম" জানে না। ক্বষি বিভাগের লোকজন, এলাকা-ভিত্তিক ফসল ও পরিমাণ সম্পর্কে অনুমানে জানেন; আমাদের এলাকায় এমন জমি আছে, উহাতে শুধু ধান হয়, এবং বিশ্ব জানে যে, চট্টগ্রামের মানুষ পাট চাষ করেন না, সীতাকুন্ডে পান চাষ হয় মাত্র ৩টি গ্রামে। এসব ডাটা থেকে সরকারের লোকেরা একটা অনুমান করেন, তাদের ডাটা সঠিক নয়, তারা দেশের জন্য সঠিক প্ল্যান কখনো করেন না।
দেশের জনসংখ্যা, জমির পরিমাণ, দরকারী ফসল, প্রয়োজনীয় পরিমাণে উৎপাদন করতে হলে, পুরো দেশকে প্ল্যানের মাঝে আনতে হবে; সেটা সম্ভব কিনা? অবশ্যই সম্ভব। সেটাই করছে কানাডা, আমেরিকা; এবং সেজন্যই তারা বিশ্বকে খাবার দিতে পারছে; আফ্রিকার লোকদের মাথায় সেইটুকু বুদ্ধি নেই, সেইটুকু দক্ষতা নেই বলেই তাদের সন্তানেরা পুষ্টিহীন ও খাদ্যের অভাবে প্রাণ হারাচ্ছে, দুর্ভিক্ষ তাদের চিরসাথী; বাংলাদেশের শিক্ষিতরা ম্যাঁওপ্যাঁও করে জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে, মিডিয়ায় কথা বলছে ও দিনের শেষে আলু কিনতে গিয়ে কান্নাকাটি করছে; কিন্তু এসব সমস্যা সমাধানের জন্য কিছুই করছেন না।
প্রশাসনের লোকেরা ৫০ বছরে এগুলোর সমাধান করতে পারেনি, আগামী ৫০ বছরেও পারবে না; শিক্ষিতরা ইহার সমাধান বের করতে পারবেন কিনা, ব্লগারেরা কোন সমাধানের কথা ভাবতে পারেন কিনা!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৫:৫৬