মুসলিম দেশগুলোতে ভিন্নমুখী ২টি রাজনৈতিক ভাবনা ও জীবনধারা পরস্পরের বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে; কিছু মানুষ হযরত ওমর(রা: ) ও হযরত আলী(রা: )'এর খেলাফতে আছেন; বাকীরা প্রজাতন্ত্রে বাস করেন। একটি প্রাচীন সভ্যতা, অন্যটি আধুনিক সভ্যতা; এরা সমান্তরাল ও একমুখী শক্তি নয়, এরা পরস্পর বিরোধী শক্তি।
খেলাফত সহজ জীবন, ইহা বৃটিশ ভারতে জমিদারী হালের জীবন ভাবনা থেকেও সহজ, সাথে আছে স্প্রিচুয়েল জগত; এরা ইসলামী জীবন যাপন করেন: শরীয়া আইন, হাদিস, ফতোয়া অনুসণ করেন; সংস্কৃতিও অনেকটা প্রাচীন আরবদের মতো; অর্থনীতি খিলফতের সময়ের: জাকাত, ছদকা, খয়রাত, জিজিয়ার পৃথিবী; শিক্ষা ব্যবস্হা মাদ্রাসা, এতিমখানা, ওয়াজ, খুতবা; চাকুরীর উৎস মুলত: ধর্মীয় দিক থেকে, ইমামতি, ধর্ম প্রশিক্ষণ। এরা দেশের সংবিধান পড়েনি, কিংবা বুঝে না, কিন্তু বোখারী শরীফ পড়েন।
সৌদী আরব, কুয়েত, জর্ডান ও ইরান ব্যতিত, বাকী সব দেশগুলো আধুনিক প্রজাতন্ত্র; এদের সংবিধান আছে; এরা মোটামুটি ৩য় বিশ্বের দেশ; সবগুলোই গলাকাটা ক্যাপিটেলিজম অনুসরণ করে; মিশর ও পাকিস্তানে সামরিক সরকার; বাকী দেশগুলোতে নামে মাত্র গণতন্ত্র আছে। এই দেশগুলোর নিজস্ব মৌলিক কোন সিষ্টেম নেই, এরা পশ্চিমের দেশগুলোকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে। সবগুলো দেশের শিক্ষা ব্যবস্হা দুর্বল, এরা উচ্চশিক্ষার জন্য পশ্চিমের উপর নির্ভরশীল।
খেলাফতীরা তুরস্কে ক্ষমতা দখল করেছে, তুরস্ক ক্রমেই ইউরোপ থেকে বেরিয়ে এশিয়াতে ফেরত আসছে। ইহা ইরানের মতো অবস্হানে চলে যেতে পারে; তখন ইউরোপ ইহার সাথে সম্পর্ক চিন্ন করে দেবে। তুরস্কে প্রজাতন্ত্রীরা ক্ষমতা হারালেও, তারা পুনরায় আবারো ক্ষমতায় ফেরত যেতে পারে। মিশরে খেলাফতীরা শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলো; কিন্তু সামরিক বাহিনী তাদেরকে দমন করেছে; তবে, এই শক্তি বিনষ্ট হয়নি, এরা আছে, এবং থাকবে। মুসলিম দেশগুলোতে খেলাফতীরা সামরিক শাসকদের পক্ষে থাকে, মিশরে উল্টো কিছু ঘটেছে সর্বশেষ বার; সময়ের সাথে তারা মিলিটারীর পক্ষে চলে যাবে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও নাইজেরিয়া এখন ক্রমেই সমস্যার দিকে এগুচ্ছে; এই দেশগুলোতে প্রজাতন্ত্রীরা ক্রমেই নিজদের অসফলতার কারণে দুর্বল হচ্ছে; এসব দেশে খেলাফতীরা কখনো শক্তিশালী ছিলো না; কিন্তু প্রজাতন্ত্রীরা নিজেরাই নিজেদের ভুলের জন্য একদিন খেসারত দিবে, তারা খেলাফতীদের সাথে পেরে উঠবে না, হয়তো।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ রাত ১০:৩৭