আফগানরা কখনো গৃহযুদ্ধ চাহেনী, তারা চেয়েছিলো রাজতন্ত্রের থেকে বেরিয়ে এসে, আধুনিক বিশ্বের মতো প্রজাতন্ত্রে বাস করতে, নিজেদের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করতে। দেশের পুরুষদের জীবন কেটে যেতো প্রবাসে ফেরি করে, ইহা কারো জন্য ভালো জীবন ছিলো না। রাজা জহির শাহকে ক্ষমতাচ্যুত করে প্রজাতন্ত্র গঠন করার সময়, ভুল পদক্ষেপের কারণে গৃহযুদ্ধ লেগে যায়; সেই যুদ্ধ আর শেষ হয়নি।
আমেরিকার এটমবোমা হজম করার পর, জাপানীরা বুঝতে পেরেছিলো যে, আমেরিকা ভয়ংকর শক্তিশালী দেশ, ইহার সাথে আঁতাত করা ব্যতিত জাপান সহজে আবার নিজপায়ে দাঁড়াতে পারবে না সহজে; আজকে যেই জাপান বিশ্ব দেখছে, ইহাতে আমেরিকার অনেক অনেক বড় অবদান; জাপানীরা আমেরিকান সাহায্যকে কাজে লাগিয়ে, দীর্ঘদিন বিশ্বের ২য় অর্থনীতি হিসেবে ছিলো; আজকে, আমেরিকার প্রতি ১০০টি গাড়ীর মাঝে ৪০টি গাড়ী জাপানী; ওরা গাড়ী বানানোর টেকনোলোজী, এটোমিক পাওয়ার ষ্টেশন ও ইলেকট্রোনিক টেকনোলোজী পেয়েছিলো আমেরিকা থেকে; এবং আমেরিকা জাপানকে নিজেদের বাজারে প্রবেশ করতে দিয়েছিলো।
একই কাহিনী জার্মানীর; ২য় বিশ্বযুদ্ধ পরাজিত হওয়ার পর, জার্মান বলতে কিছু ছিলো না: দেশ ২ টুকরা হয়ে গিয়েছে, ৯০ লাখ যুদ্ধবন্ধী; একাংশ চলে গেছে সোভিয়েতের তত্বাবধানে, অন্য অংশ আমেরিকা, ইংল্যান্ড'এর অধীনে। জার্মানরা ঠিক করলো, ইউরোপের কেহ তাদেরকে সাহায্য করার মতো অবস্হানে নেই, একমাত্র বড় শত্রু আমেরিকার সাহায্য নিয়ে দাঁড়াতে হবে; আজকের ইউরোপকে ধরে রেখেছে জার্মানী।
পাকিস্তানকে আমেরিকা সাহায্য করার শুরু করেছিলো ১৯৫৮ সাল থেকে; ১৯৫৮ সালে, আমেরিকা পাকিস্তানে সামরিক ক্যু'ঘটায়, দেশটিকে নিজের পক্ষে নেয়ার জন্য। পাকিস্তানী মিলিটারী সরকার আমেরিকার কাছে টেকনোলোজী চাহেনী, চেয়েছিলো খাদ্য। খাদ্য চায় ভিক্ষুক; পাকিস্তান যা চেয়েছিলো তা পেয়েছে। পাকিস্তান আমেরিকা থেকে ভিক্ষা নেয়ার পর ফন্দিবাজী করে নিয়েছে ঋণ, তাদের ইচ্ছা ছিলো সেই ঋণ ফেরত দেবে না; তাদের ইছ্চা পুরণ হয়েছে, আমেরিকাকে বেকুব বানিয়ে পাকিস্তান তাদের সাথে "বিন লাদেন ব্যবসা" করেছে, তালেবান ব্যবসা করেছে; এখন সেই ২টি সেক্টর বন্ধ হতে যাচ্ছে।
আমেরিকা ততকালীন আফগানিস্তানের কাছে দাবী করেছিলো যে, বিন লাদেনকে আমেরিকার কাছে হস্তান্তর করতে হবে, কিংবা আফগানিস্তান থেকে বের করে দিতে হবে। তালেবানরা বলেছে যে, তারা মেহমানকে বের করে দিতে পারবে না। ফলাফল, যুদ্ধ। কি পরিমাণ তালবান প্রান হারিয়েছে কে জানে, তবে ৭১,০০০ আফগান ইহাতে প্রাণ হারেয়েছে।
যুদ্ধের পর, আমেরিকার চলে যাওয়ার দরকার ছিলো; কিন্তু তারা দেখলো যে, তারা চলে গেলে দেশটি আবারো তালেবানদের হাতে চলে যাবে; তারা দেশটিকে গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নিলো; ২০ বছর চেষ্টা করার পর, গত মাসে সেই তালেবানদের কাছে দেশটিক রেখে দিয়ে আমেরিকা চলে এসেছে; আফগানিস্তানের অবস্হা সেই ২০ বছর আগের মতোই; কারণ, এরা গত ৪০০ বছরে কোনদিন ভালোভাবে থাকার কথা চিন্তা করেনি।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:২৬