দেশের প্রেসিডেন্ট হলেন ৮১টি ইউনিভার্সিটির চ্যানচেলর, তিনি ছাত্রছাত্রীদের মা-বাবা, অভিভাবক; ছাত্ররা যখন হাফ-ভাড়ার জন্য বাস কন্ডাক্টরদের সাথে ঝগড়া করছে, উনি কোথায়, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে?
আমাদের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, আবদুল হামিদ সাহেব (বয়স ৭৭ বছর) হাফ ভাড়ায় বাসে চড়ার সুযোগ পাননি ছাত্র জীবনে, মনে হয়; উনি যখন গুরু দয়াল কলেজে পড়েছেন, তখন সেখানে বাস ছিলো না, গরু গাড়ী ছিলো নিশ্চয়। তবে, তিনি ছাত্র রাজনীতি করতেন, ছাত্রদের পকেটে তখন একটা সিকিও থাকতো না, এটা তিনি নিশ্চয় বুঝতেন। এখন তিনি ৮১টি ইউভার্সিটির চ্যানচেলর; এখন নিশ্চয় উনার আর "হাফ ভাড়ার" দরকার হচ্ছে না; কিন্ত দেশের আড়াাই কোটী ছাত্রের যদি দরকার হয়, উহার সমাধান কেন তিনি করছেন না? উনি যখন ১ম বার এমপি হয়েছিলেন, তখন হাফ-ভাড়া দিয়েছে বাস মালিকেরা; কারণ, আমরা তখনো সামন্তবাদে বাস করতাম; এখন এসব দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে, উনি জার্মানী ফার্মানী যখন গিয়েছিলেন, এসব শিখার সুযোগ নিশ্চয় পেয়েছিলেন। নাকি ওসব দেখার সময় পাননি, বউয়ের জন্য কেনাকাটা করতে জার্মানীর বাজারে বাজারে ঘুরে সময় কাটায়েছেন!
১৯৬৮ সাল থেকে ছাত্র হিসেবে আমি হাফ-ভাড়ায় বাসে চড়েছি ১৯৭০ সাল অবধি; পুরোদেশে তখন ছাত্র ছিলো হয়তো ৫ লাখ; অনেক বাস অনেকটা খালি যেতো, মানুষ পায়ে হেঁটে কাজে যেতেন; ফলে, হাফ ভাড়ার কাউকে পেলেও বাসের কন্ডাক্টর খুশী হতো; অনেক সময় কন্ডাক্টর ইচ্ছা করে আমার থেকে ভাড়া নিতো না। আজকে দেশে ২ কোটী ৫০ লাখের বেশী ছাত্রছাত্রী এবং গত ৩০ বছর ধরে মানুষ বাদুর-ঝোলা হয়ে বাসে চড়ে কাজে যাচ্ছে, এবং পুরো যাতয়ত ব্যবস্হা মাফিয়ার হাতে; এখন তারা হাফ ভাড়ায় যাত্রী নিতে চাইবে?
বাংগালী ছাত্ররা পাকিস্তানী আমলে, কিংবা বাংলাদেশ আমলে কখনো "ফ্রি এডুকেশন"এর দাবী জানায়নি, ইহা জাতীয় বেকুবী; পাকিস্তানী আমলেও যারা ছাত্রদের হয়ে দাবীদাওয়া দিতো, তারাও বুদ্ধিমান ছিলো না, এবং তারা হয়তো ভেতরে ভেতরে ফ্রি পড়ালেখার সুযোগ পেতো; তবে, তারা পড়ালেখা করতো না, পড়ালেখার প্রয়োজনীয়তা কখনো বুঝেনি; মেনন, তোফায়েল, রব, নুরে আলম সিদ্দিকী ইত্যাদিরা কোন সাবজেক্টে পাশ করেছে, তারা এখন মনে করতেও পারবে কিনা সন্দেহ আছে।
ছাত্রদের জন্য হাফ ভাড়ার টিকিটের ব্যবস্হা সরকারের করা উচিত; ছাত্রদের জন্য মাসিক ডিজিটাল টিকেট দিতে পারে সরকার; সেগুলো ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে কিনে নিতে পারে, টিকিটগুলো সাবসিডাইসড হবে, ব্যাপারটা কঠিন কিছু নয়। প্রেসিডেন্টের অফিস প্রাইভেট বাস মালিকগুলোকে একটা চুক্তির মাধ্যমে মাসিক হারে টাকা দিবে, সমস্যা শেষ! উনি এখন সরকারী গাড়ীতে চড়ে, গাড়ীর সিটে ঘুমিয়ে পড়লে তো হবে না, ২/১ টা কাজ টাজ তো করতে হবে!
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে নভেম্বর, ২০২১ রাত ১:৫১