ব্লগাচ্ছলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাপড়বিহীন করার কোন অশুভ উদ্দেশ্য আমার নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নিজেদের কিছু কর্মকান্ডের মাধ্যমে প্রতিনিয়তই শিক্ষার্থী তথা জনসম্মুখে কাপড় বিহীন হয়ে যাচ্ছেন, তারই বাস্তব অংশবিশেষ উল্লেখ করাই ব্লগানোর উদ্দেশ্য। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিশেষত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক নিজেদেরকে রাজা হিসেবে মনে করে, আর ছাত্রদের মনে করে অথর্ব প্রজা । রাজাদের অত্যাচারে প্রজারা রাজ্য ছেড়ে পালায়, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজ্য ছেড়ে না পালালেও শিক্ষকরাই অনেক সময় তাকে রাজ্য থেকে নির্বাসনে পাঠায়।
------------------------------------------------------------------------------
(৪)
২০১১ সালে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারীলিপ্সুতা, মনগড়া নম্বর প্রদান, ক্লাসে বৈষম্যমূলক আচরণ সহ বিস্তর অভিযোগ তুলল ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এক মেয়ে শিক্ষার্থী (বিবাহিত) অভিযোগ তুলল যে, শিক্ষার্থীদের ব্যাক্তিগত বিষয় ক্লাসে সবার সামনে আলোচনা করেন ওই শিক্ষক। এতে চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তেন শিক্ষার্থীরা। ওই মেয়েকে একদিন ওই শিক্ষক অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন যে, তার স্বামী সম্পর্কে অ্যাসাইনমেন্ট লিখে আনার জন্য। কোন শিক্ষার্থী যদি ক্লাস লেকচার সম্পর্কে ওই শিক্ষককে প্রশ্ন করত তাহলে তাকে ডেস্কে ডেকে এনে সবার সামনে লজ্জা দিত। এতসব অভিযোগ করা হলেও ওই শিক্ষকের কিছুই হয়নি। কেননা তিনি দলীয় ও হিন্দু পরিচয়ে নিয়োগ পাওয়া ভিসির একান্ত অনুগত পা চাটা কু...।
(৫) ২০০৯ সালের শেষের দিকে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মীর ল্যাপটপ চুরির অপরাধে চোর হিসেবে সাব্যস্ত করা হল ছাত্রলীগের আরেক কর্মী ও সোসিওলজি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে পুরো ক্যাম্পাস ঘুরানো হল। অত:পর ওই শিক্ষার্থীকে নিয়ে যাওয়া হল প্রক্টর অফিসে। তখন প্রক্টর 'স' নামের একজন। প্রিয় শিক্ষকদের কাছে পেয়ে নিজেকে নির্দোষ হিসেবে জাহির করার চেষ্টা করল অভিযুক্ত শিক্ষার্থী। কিন্তু ওই শিক্ষার্থী হয়তো জানতো না ওই শিক্ষক দলের একজন পা চাটা কু..। ওই শিক্ষক পিছনে থাকা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দেখিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে বলল- তোমার পিছনে দেখেছ, ওরা কারা। তুমি জান ওরা তোমার কী করতে পারে। বেচারা শিক্ষার্থী হয়তো ভেবেছিল শিক্ষককের কাছ থেকে অভয় বাণী পাবে। কিন্তু না, ওই শিক্ষকই তাকে বাঘের মুখে ঠেলে দিল। শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস ঘুরানোর দায়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মীর লোক দেখানো বহিষ্কার হয়েছিল। কিন্তু অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছেড়ে পালাতে হয়েছিল ওই শিক্ষার্থীকে। ল্যাপটপ চুরির দায়ে জুতার মালা ঝুলিয়ে যাকে ক্যাম্পাসে ঘুরানো হল সে বন্ধুদের সামনে মুখ দেখায় কী করে ! হয়ত শাহজালাল ছেড়ে অন্য কোথাও ভর্তি হয়েছিল ছেলেটি। কিন্তু যার হৃদয়ের গহীনে ক্ষত সৃষ্টি করেছিল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তারাতো দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে, আড্ডা দিচ্ছে বন্ধুদের সাথে। সেই সাথে নতুন পদ পেয়েছে শিক্ষক নামধারী 'স' নামের ওই শিক্ষক। এখন নতুন পদে থেকে শিক্ষার্থীদের নতুন আঙ্গিকে হ্যানস্তা করে যাবে। বিপদে পড়ে শিক্ষার্থীরা হয়তো ওই শিক্ষকের কাছে যাবে মুক্তি পেতে, কিন্তু শিক্ষার্থীরাতো জানেনা ও হচ্ছে বিষাক্ত কাল সাপ। যে বারংবার দংশন করে মৃততু ঘটাবে তার।
বি. দ্র: ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের লাথি গুঁতো খাওয়ার জন্যই কী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। আর বিচার চাইতে তথাকথিত কিছু শিক্ষকের কাছে গেলে তারা কি সারজীবন বুকে টেনে ছুরি মারবেন। এ অবস্থার কি কোনদিন পরিবর্তন হবে না ?
(চলবে...............)
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক: ল্যাংটা পর্ব -১