ছেলেটি ভোর বেলায় মাঝ রাস্তা দিয়ে হাটছিলো, হয়তো কারো সাথে দেখা হবে বলে, অথবা কেউ তার জন্য অপেক্ষায় আছে বলে। মেয়েটিও বারান্দায় দাঁড়িয়ে অস্থির ভাবে পায়চারি করছিলো, কোন একজন কে দেখবে বলে। হঠাৎ ছেলেটা মেয়েটার বাড়ির সিঁড়ি বারান্দার থেকে একটু দূরে ফুট পাথে বসলো। হাতে একটা আধ জলন্ত সিগেরেট। আর একটা বাসি পাউরুটি। ছেলেটির পাশে একটা শহুরে 'জারজ' কুকুর। দুজনে ভাগ করে খেলো রুটিটা। মেয়েটা দেখলো এবং সামান্য হাসলো। এর পর চলে গেলো ভেতরের ঘরে। আজ আকাশে বৃষ্টি নেই, তবুও সে ভিজবে। মেয়েটি আজ ও জানে না ছেলেটিকে তার ভালো লাগে কি না, অথবা ছেলেটির নাম। ছেলেটিও জানে না কেউ একজন তাকে পেছন থেকে দেখছে। তবুও ছেলেটি এসে বসে। সেখানেই হ্যাঁ ঠিক সেখানটাতেই যেখানে সে রোজ এসে ভাগ করে খায় গতদিনের বাসি রুটিটা। কি চৌম্বক শক্তি তাদের আকর্ষন করছে তা কেউ জানে না। কিন্তু এটা রোজকার নিয়ম। একদিন কুকুর টা মারা গেলো, কিছু সময় পর মেয়েটার ও বিয়ে হয়ে গেলো। তবুও ছেলেটা আর তার আধ খাওয়া রুটি ও আধ পোড়া সিগেরেট আগের মতোই আছে। সে এখনো সেখানেই বসে। সত্যিকারেই হয়তো সুখের সংজ্ঞায়ন করা যায় না। হয়না ভালোবাসার ও সংজ্ঞায়ন। হতো অন্যের বুকে মাথা রেখে মেয়েটি আজ ও দীর্ঘ শ্বাস ছাড়ে, স্বর্গ হতে আধ খাওয়া রুটি টা দেখে কুকুর টা আজ ও ডুকরে কাঁদে। ছেলেটা কি জানে সে কেন আসে? অথবা তার কোন অনুভুতিই নেই। অথবা সে অন্যদের চেয়ে বেশি অনুভুতি প্রবণ তাই সে সব দেখতে পায়। দেখতে পায় ভুত ভবিষ্যত, আর বসে থাকা সময়ের গতিশীল অথচ স্থবির বর্তমান। সে ও জানে এখানে একদিন সে ও এখানে আর আসবে না। তবুও আসা। আসা যাওয়া, ছায়া মায়া কায় আর এই নিয়েই হতাশা। ছেলেটি হতাশ নয়। সুখী, তার মতো করে। অনেকে পেথিড্রিন নিয়ে সুখী হয়। ছেলেটি সুখী হয় সর্বস্ব ভাগ করে নিয়ে। এই তো জীবন, অনন্ত আসীমের মহাজীবন। চান সুরুজের টানা মহাকালের সকটে চলা মহাজীবন। হয়তো অর্থহীন তবুও তো জীবন। এই তো জীবন...!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:৫১