একটি প্রবাদ আছে “When in Rome, do as the Romans do” অর্থাৎ যখন যে দেশে থাকবেন সে দেশের রীতি অনুযায়ী আপনাকে চলতে হবে , না হলে বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখিন হতে পারেন । কারন এক দেশে একেক ধরনের রীতিনীতি প্রচলিত।
তাই বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে স্থানীয় রীতি নীতি জেনে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ।
মনে করুন সকাল ১০ টার সময় আপনার বিদেশী ডেলিগেটদের সাথে মিটিং আছে। যদি তারা জার্মান হয়, ঠিক ১০ টার সময় তারা হাজির হবে। যদি তারা আমেরিকান হয় তবে ১৫ মিনিট পূর্বেই আপনি তাদের উপস্থিত দেখতে পাবেন। যদি আপনার সম্ভাব্য অতিথি ব্রিটিশ হয় তবে নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট পরে তাদের উপস্থিতি আশা করতে পারেন আর যদি তারা ইটালিয়ান হয় তবে আপনাকে ১ ঘণ্টা অপেক্ষা করার প্রস্তুতি নিতে হবে।
ব্যবসায়িক আলোচনার ক্ষেত্রে একেক দেশে একেক রীতি প্রচলিত।
* ব্রিটিশরা খাবার খাওয়ার সাথে সাথে ব্যবসায়িক আলোচনা করতে পছন্দ করে,অপরপক্ষে জাপানীরা খাওয়ার সময় কাজ নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক নই। জার্মানরা খাওয়ার আগেই ব্যবসায়িক আলোচনা সেরে নেই যখন ফরাসিরা খাওয়ার পরে আলোচনা শুরু করে।
* আপনি যদি আপনার জ্যাকেট খুলে ফেলেন এবং আপনার শার্টের হাতা গুটিয়ে নেন তবে ব্রিটেন ও হল্যান্ডে সেটাকে কাজে নেমে পরার চিহ্ন মনে করা হয়, কিন্তু জার্মানিতে মনে করা হবে আপনি রিলাক্স করছেন।
সামাজিক আচার আচরনের নিয়মের ক্ষেত্রে জাপানীরা খুব কঠোর। আপনি কোন বয়স্ক জাপানিজের কাছে ব্যবসায়িক কোন চুক্তির জন্য কখনও তরুন কাউকে পাঠাবেন না এবং সাক্ষাতের শুরুতেই অবশ্যই বিজনেজ কার্ডের বিনিময় করতে হবে, কারন জাপানীরা প্রথমেই আপনার স্ট্যাটাস ও পজিশন জানতে চায়।
ব্রিটিশরা অপরিচিতের সাথে আবেগহীন অব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পছন্দ করে। ব্রিটিশদের মধ্যে আলচনার সবচেয়ে কমন বিষয় হচ্ছে আবহাওয়া। আমেরিকায় অপরিচিতের সাথে কথা বলার জন্য আমেরিকানরা সাধারণত বসবাসের স্থান নিয়ে আলোচনা করে।
খাবার বিষয়ক কিছু আচার নীতি
* আফগানিস্তানে কমপক্ষে ৫ মিনিট আপনার কুশল বিনিময় করতে হবে।
* ফ্রান্সে কোন ক্যাফেতে গিয়ে কোন চেয়ারে বসবেন না যতক্ষন না আপনি সবার সাথে হ্যান্ডশেক করছেন।
* মধ্যপ্রাচ্যে করমর্দন, খাওয়া, পান কোন কিছুর জন্যই বাম হাত ব্যবহার করবেন না। আর ভুলেও মেজবানের ঘরের কোন জিনিস নিয়ে প্রশংসা করবেন না, করলে তারা মনে করবে জিনিসটি আপনাকে দিয়ে দিতে হবে।
* পাকিস্তানে কখনও চোখ পিট পিট করবেন না, সেখানে এটি অভদ্রতা মনে করা হয়।
* আমেরিকায় আপনি আপনার হ্যম্বারগার টি ২ হাত দিয়ে খেতে হবে এবং সেটিও যত দ্রুত সম্ভব , খাবার শেষ না হপ্যার আগে অবশ্যই কোন কথা বলবেন না।
* চীনে প্লেটের সমস্ত খাবার খেয়ে ফেলাকে অভদ্রতা মনে করা হয়, তারা মনে করে প্রদত্ত খাবার আপনার জন্য যথেষ্ট ছিল না এবং আপনি এখনও ক্ষুদার্ত।
* অস্ট্রিয়াতে ড্রিঙ্ক করার সময় অস্ট্রিয়ানরা একে অপরের চোখের দিকে তাকিয়ে চিয়ার্স করে আপনার উপস্থিতিকে স্বিকার করার জন্য।
* স্পেনিয়ার্ডরা স্ন্যাক্সের দোকানে খাওয়ার পর টিস্যু, খাবারের উচ্ছিস্টাংশ ও অন্যান্য ময়লা ফ্লোরে ফেলে দিয়ে চলে যায়, দিন শেষে একবারে সব কিছু পরিশকার করা হয়।
* ব্রিটিশরা খাওয়ার সময় চামচ ছুরি না পেলে হাত দিয়ে খাওয়ার কাজ সেরে নেয়, সেখানে চামচ ছুরি চাওয়াকে বাবুর্চির প্রতি অসম্মান বলে মনে করা হয়।
* ফ্রান্সে শেফের কাছে আচার বা সস চাওয়াকে আপমানকর হিসেবে দেখা হয়, তারা মনে করে খাবারটা আপনার কাছে ভাল লাগে নি।
* কানাডার স্থানীয়রা খাবারের প্রশংসা করার জন্য খাওয়া শেষে ঢেকুর তুলে।
* পোল্যান্ডে কখনও ভাঁজা মাছটিকে উল্টাবেন না। তাদের ধারনা উল্টালে মাছটি যে জেলে ধরেছে টার নৌকা উল্টে যাবে।
* জাপানে খাবারের প্রশংসা করার জন্য নুডুলস খাওয়ার সময় অবশ্যই জোরে শব্দ করবেন। এতে তারা মনে করে আপনি খাবারটি এত পছন্দ করেছেন যে সেটি খাওয়ার জন্য আপনার তর সইছে না।
এবং সবশেষে ১ টি কুইজ
স্কটল্যান্ডে ডিনারের পর বাচ্চারা কি করে?
১) পুরো ফ্যামিলির সাথে টিভি দেখে
২) ঘুমিয়ে পরে
৩) প্রার্থনা করে
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
...
না,উপরের কোনটি নয়, তারা তাদের স্কুলে থাকে, কারন স্কটল্যান্ডের অনেক জায়গায় লাঞ্চ কে ডিনার বলা হয় ।
সুত্রঃ ইন্টারনেট ও নরম্যান রামশ এর বই