somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফুটপাতের বরই ওয়ালা ও আমাদের বিশ্বকাপ

২২ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘এই ব্যবসার মাকে_ *দি’ হঠাৎ বিশ্রী গালি শুনে তাকাতেই গোলাকার একটা জটলার একদিকে গালিবাজকে দেখা গেল। ছোট্ট গাট্টা-গোট্টা চেহারা। কোমরে গামছা বাঁধা। মাঝে মাঝেই সে ব্যবসায়ের মাকে ইয়ে করতে চাচ্ছিল। তিন/চারটা কথার মাঝখানেই সেই ভয়াবহ গালিটা ব্যবহার করছিল।
‘কি জঘন্য লোকটা’ ভেবে আমি দুরেই দাঁড়িয়ে ছিলাম। নৈলে এমন নোংরা গালি কেউ দেয়। আমি অফিসে যাওয়ার গাড়ীর জন্য অপেক্ষা করছি।

ইতোমধ্যে অনেক লোক জুটে গেছে। লোকটা বড়ই বিক্রতা। ফুটপাতের নিচে টুলে বসে ঝাকাতে করে বড়ই বিক্রি করাদের একজন। একটু উঁকি দিতেই ঝাকার সামনের দিকে ছিটিয়ে থাকা বেশ কিছু বড়ইও দেখা গেল। কয়েকজন ধুলা-মাখা সেই বড়ই গুছিয়ে দিচ্ছিল। ফুটপাতের ধুলা-ময়লার মেকাপে সেই বড়ইয়ের যা চেহারা তাতে ফ্রিতেও কেউ খাবে বলে মনে হলনা।
ওদের পাশেই আমি গাড়ীতে উঠে বসলাম। আমার পাশেও একজন বসলেন।একসময় আমি জিজ্ঞাসা করলাম ভাই, ‘ওর বড়ই কে ফেলে দিছে’?
‘উনি নিজেই ফেলে দিছেন’।
‘বলেন কি’? আমি উৎসুক হলাম।
সে যা বল্ল তার সংক্ষেপঃ কয়েকটা ছেলে এসেছিল বড়ই কিনতে, এসেই বড়ই দেখতে দেখতে খাওয়া শুরু করে দেয়, চার/পাচজন মিলে এই কাজ করছিল আর দরদাম করছিল। হঠাৎই বড়ই বিক্রেতা সেই খারাপ কাজটা করে ফেলে। ব্যবস্যায়ের মাকে বাপ বলে গালি দিয়ে ঝাঁকাতে লাত্থি মারে।তাতেই অনেক বড়ই ছিটকে পড়ে যায়।
লোকটা দেখি আসলেই চরম খারাপ, নিজের বড়ই নিজেই লাত্থি মেরে ফেলে দেয়। আবার মহান ব্যবসায়ের মাকেও ইয়ে করে।

এইসকল লোক ঢাকার এই সভ্য নগরে আসে কি করে? এদের কে ভিসা দেয়? আমি ভাবছিলাম।
এবার আমি পাশের লোকের সাথে টুকটাক গল্প করে ফেললাম। ও একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করে। লেখাপড়া কম। এই গালিবাজ ফালতু লোকটা নিয়ে তার মতামত কি জিজ্ঞাসা করতেই সে বল্লঃ ‘ভাই, বড়ই বেঁচেই সে সংসার চালায়। সেখানে কেউ এসে ফ্রি খেয়ে যাবে তাতে তো সে বিরক্ত হবেই। আমি হলে ঐ শালাদের মুখে ঘুষি লাগাতাম’। ‘তাই বলে পবিত্র ঝাঁকাতে লাত্থি মারবে? ব্যবসায়ের মাকে ইয়ে করবে’? আমি জিজ্ঞেস করলাম। ‘ভাইরে, এটা ঠিক যে কাজটা খারাপ কিন্তু আপনার ঘটনাটাও তো দেখতে হবে, আম্প্যায়ার আর আইসিসি মিলে আমাদের যেইভাবে হারিয়ে দিল তাতে আমরা কি শুধু ভদ্রলোক হয়ে থাকি তাইলে কি কিছু হবে? আমরা তো প্রতিবাদ করতে হবে তাই না?...
...... অন্যায়ের প্রতি ন্যনুতম একটা রিএকসান না দেখাতে পারলে আর কিসের জীবন, কিসের পুরুষ?’ রেস্টুরেন্টে কাজ করা ছেলেটার চোয়াল শক্ত দেখাল।
বড়ই ওয়ালা লোকটা বকেই যাচ্ছে, কিছু লোক সান্ত্বনা দেবার চেষ্টা করছে। দেখলাম সে তার কোমড় থেকে গামছা খুলে ফেলছে। ‘ভদ্রলোকদের পোলাদের সাথে মারামারি করবে নাকি হালায়?’- আমি ভড়কে গেলাম। আরে না, সে মনে হয় একটু পাট নিচ্ছে।

আমার গাড়ী ছেড়ে দিচ্ছে। জানালা দিয়ে দেখলাম বেয়াদপ গালিবাজ লোকটা গামছা দিয়ে যে চোখ মুচছে আর কেঁপে কেঁপে উঠছে।
যাক, ‘ভদ্র শহরে অশ্লীল গালি মনে হয় বন্ধ হল’ ভেবে আমি সামনের দিকে চোখ বাড়ালাম।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৪২
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×