somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সৌদি রাজ পরিবার ইহুদী বংশদ্ভুত ? --- (২য় পর্ব)

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্বের পর.....................

এই সউদী রাজ পরিবারের প্রকৃত পূর্বপুরুষ কে?

৮৫১ হিজরী সনের কথা। আল-মাসালিক সম্প্রদায়ের একদল লোক একটি কাফিলা তৈরি করে ইরাকের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। আল-মাসালিক ছিল আনজা গোত্রের শাখা। এই কাফিলার উদ্দেশ্য ছিল ইরাক থেকে খাদ্যশস্য এবং অন্যান্য সামগ্রী ক্রয় করে এনে নজদে সরবরাহ করা। সেই কাফিলার প্রধান ছিল শামী-বিন-হাতলুল। কাফিলা যখন বসরায় পৌঁছে, তখন খাদ্যশস্যের এক ইহুদী বড় ব্যবসায়ীর সাথে দলের লোকজন সাক্ষাৎ করে। সেই ইহুদী ব্যক্তিটি ছিল মোরদাখাই বিন ইব্রাহীম বিন মোসেহ। কোন কোন প্রাচীন ইতিহাসে ইহুদী মোরদাখাইকে মানি বিন রাবিয়া আল মুরাইদি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। মোরদাখাই-এর বংশধরেরা ম্রুদা গোত্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। সেই ইহুদী ব্যবসায়ীর সাথে দর কষাকষির সময় ইহুদী ব্যক্তিটি প্রশ্ন করে “আপনারা কোথা থেকে এসেছেন?” উত্তরে তারা বলেন, আমরা আনজা গোত্রের এবং আল-মাসালিক সম্প্রদায়ভুক্ত।

আল মাসালিক সম্প্রদায়ের কথা শুনেই সেই ইহুদী ব্যবসায়ী আল-মাসালিক সম্প্রদায়ের উপস্থিত সবাইকে আবেগাপ্লুত হয়ে মুয়ানাকা করতে শুরু করে এবং বলে সেও মূলত আল-মাসালিক সম্প্রদায়ের তবে সে বসরায় এসে বসবাস করছে। তার পিতার সঙ্গে আনজা গোত্রের কয়েকজন সদস্যের ঝগড়া বিবাদের ফলে সে এখন বসরায়।

এই বানানো গল্প বলার পর পর সে-ই ইহুদী ব্যবসায়ী তার ভৃত্যকে সমস্ত গম, খেজুর, অন্যান্য খাদ্য দ্রব্যসমূহের বস্তা উটের পিঠে চড়াতে বললো। সেই সুদূর ইরাকে আনজা গোত্রের এবং আল-মাসালিক সম্প্রদায়ের লোকজন তাদের সম্প্রদায়ের একজন এত উদার ব্যক্তি পেয়ে বেশ গর্ব অনুভব করলো। তারা সেই ইহুদীর সকল কথাই বিশ্বাস করলো। যদিও সে মাসালিক সম্প্রদায়ের ছদ্মবেশে ছিল একজন ইহুদী। কিন্তু খাদ্যশস্যের একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হওয়াতে সে সহজেই সবার কাছে বিশ্বস্ত হতে পেরেছিল।

যখন সেই কাফিলা খাদ্যশস্য বোঝাই করে নজদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে সে সময় সেই ইহুদী ব্যবসায়ী তাদের কাফিলার সঙ্গী হতে চাইলো। সে তার মাতৃভূমিতে ফিরে যাবার জন্যে আকুল ইচ্ছা প্রকাশ করলো। তার এই অভিপ্রায়ের কথা শুনে কাফিলার সবাই তাকে চরম উৎসাহে অভিনন্দন জানালো। সেই ছদ্মবেশী ইহুদী, কাফিলার সাথে নজদে এসে উপস্থিত হল।
নজদে এসে শুরু হয় তার ভিন্ন রকমের কার্যকলাপ। সে তার নিজস্ব কিছু লোক দিয়ে নিজের সম্পর্কে অনেক প্রোপাগান্ডা শুরু করে এবং ধর্মীয় অনেক বিষয়ে নিজের মনমত ফতওয়াও দিতে থাকে। সেই সুবাদে কিছু ভক্তও জুটিয়ে ফেলে।

কিন্তু সে সময় আল-কাসিমে বসবাসরত একজন বড় আলিম ও বুযূর্গ ব্যক্তি হযরত শায়খ সালেহ সালমান আব্দুল্লাহ আল তামিমী রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক সেই ইহুদী বাধাগ্রস্ত হয়। মুসলমানের ছদ্মবেশে সেই ইহুদীর প্রচারিত বহু ফতওয়ার বিরুদ্ধে তিনি চরম প্রতিবাদ করেন। হযরত শায়খ সালেহ সালমান আব্দুল্লাহ আল তামিমী রহমতুল্লাহি আলাইহি নজদ, ইয়েমেন এবং হিজাজেও তালিম দান করতেন। উনার প্রচেষ্টায় সেই ইহুদীকে (বর্তমান সউদী রাজ পরিবারের পূর্ব পুরুষ) আল-কাসিম থেকে আল-ইহসাতে বিতাড়িত করেন। নতুন এলাকায় এসে এই ইহুদী (মোরদাখাই) তার নাম পরিবর্তন করে হয় মারক্বান বিন দিরিয়া এবং আল-কাতিফের নিকট বসবাস শুরু করে। সেখানে এসে, সেখানকার অধিবাসীদের মধ্যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ঢাল সংক্রান্ত একটা মিথ্যা গল্প প্রচার করা শুরু করে।

গল্পটা এ রকম- “মক্কার কাফিরদের সাথে মুসলমানদের যখন উহুদ পাহাড় প্রান্তে যুদ্ধ হয়, সেই উহুদের যুদ্ধে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একটি ঢাল মুবারক এক কাফিরের হস্তগত হয়। পরবর্তিতে সেই কাফির ব্যক্তি সেই ঢাল মুবারক বিক্রি করে দেয় ইহুদীদের বনু-কুনাইকা গোত্রের কাছে যা তারা পবিত্র সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণ করে আসছে। এভাবে সে ইসলাম ধর্মের প্রতি ইহুদীদের ধর্মীয় সহানুভূতির কথা বোঝাতে চাইতো। একজন জ্ঞানী ব্যক্তি হিসেবেও সে নিজের অবস্থান বেদুইনদের মধ্যে শক্ত করে নেয়। সে মুসলমানের ছদ্মবেশে ইহুদীদের পক্ষে কাজ করতে থাকলো।

ইহুদী মোরদাখাই বা মারক্বান বিন দিরিয়া আল-কাতিফের নিকট দিরিয়া শহরে বসবাস শুরু করে। সে মনে মনে আরব ভূখণ্ডে একটি ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উচ্চাশা পোষণ করতো। তার আশা পূরণের লক্ষ্যে, মূল পরিকল্পনা গোপন করে আরব বেদুইনদের তার পক্ষ সমর্থনের জন্য আবেদন নিবেদন করতে থাকে এবং নিজেই সেখানকার স্ব-ঘোষিত রাজা বলে দাবি করে। তার এই অপচেষ্টাকালে, আরবের আজামান গোত্র এবং বনু খালিদ গোত্র একত্রে এই ইহুদীর আসল পরিচয় পেয়ে তার পরিকল্পনা নস্যাৎ করার লক্ষ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তারা দিরিয়া আক্রমণ করে দখল করে নেয়। কিন্তু সেই সুচতুর ইহুদী সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

.......চলবে।

...................................চমকপ্রদ তথ্যের জন্য সাথে থাকুন।

প্রথম পর্ব।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×