হিন্দু ধর্মে নারীর কোন সম্মান ও মর্যাদাই নাই, সতীদাহের মত অমানবিক, নির্মম-নিষ্ঠুর প্রথা হিন্দুধর্মের অংশ ছিল। কোন নারী সৌভাগ্যক্রমে স্বামীর জ্বলন্ত চিতা থেকে রেহাই পেলে, তাকে পদে পদে এমন তিরষ্কার করা হত, সে নারী বাঁচার চেয়ে মরন যন্ত্রনাকে উত্তম বিবেচনা করত। হিন্দুদের মধ্যেও বহু বিয়ে প্রথার ইতিহাস আছে। ইতিহাসে প্রমানিত রাজা দশরথের তিনজন, মাহারাজা ধ্রুবের পাঁচজন, পাঁন্ডুর দুইজন, অর্জুনের তিনজন স্ত্রী ছিল। স্বামী হল নারীর দেবতা, সে কখনও তালাক পাবেনা, স্বামী স্ত্রীকে যত অত্যাচারই করুক, তাকে স্বামীর কাছেই থাকতে হয়, নারী স্বাধীন হবার যোগ্য নয়, তার কোন ইচ্ছা আখাঙ্খা থাকতে পারেনা। শয্যাপ্রিয়তা, অলঙ্কারাসক্তি, ব্যভিচারের ইচ্ছা, কাম, ক্রোধ, লোভ, হিংসা, মিথ্যা এবং পুরুষ দেখলেই মিলনের ইচ্ছা নারীর স্বভাবজাত বদ খাসিয়ত। পুরুষ পৃথিবীতে পাপ করলে পরজনমে নারী হয়ে জন্মাবে। নারী জাতি হীন, পাপমুর্তি, বিশ্বাসের অযোগ্য এবং দাস সম্প্রদায়ভুক্ত। কোন মানুষকে এক হাজার মুখ দিয়ে, প্রতি মুখে হাজার বছর নারীর বদনাম করলেও নারীর দোষ বর্ণনা শেষ হবেনা। ধন-সম্পদ, শিক্ষায় নারীর কোন অধিকার নেই। নারী থেকে কোন পরামর্শ নেয়া যাবেনা এমনকি পরামর্শের সময়ে নারীকে কাছেও রাখা যাবেনা।
পূর্বকালে কণ্যা যখন প্রথম ঋতুবর্তী হত, তখন তাকে মন্দিরের প্রাঙ্গনে রেখে আসা হত, ছেলেদের দঙ্গল সেখান থেকে বাছাই করে, কুমারী কণ্যাদের তুলে নিয়ে জঙ্গলে চলে যেত, তাকে ধর্ষন করার পর পিতা-মাতার কাছে ফেরত দিত। সবার বিশ্বাস ছিল এতে কণ্যা পবিত্রতা অর্জন করেছে; পিতা-মাতা খুশিতে বাড়ী ফিরে মানুষকে দাওয়াত দিত, ধুমধাম করত ও পূজার আয়োজন করত। কখনও কখনও সুযোগ সন্ধানী ছেলেরা, কুমারী মেয়েদের বাড়ী থেকে তুলে নিত, দেখা যেত কারো সুন্দরী গৃহবধুকে এভাবে তুলে নেয়া হয়েছে। এই ছিল সামাজিক ভাবে নারীর মর্যাদা! এই আইনের কারনে নারীরা কতটা অসহায় ছিল, চোখ বন্ধ করলেই দৃশ্যপটে ভেসে উঠবে। চলবে.....
সুপ্রিয় পাঠক, আগের পর্বে বৌদ্ধ ধর্মে নারীর অধিকার সর্ম্পকে লিখা হয়েছিল। আশা করি নিচের লিঙ্কে গিয়ে পড়ে নেবেন।
View this link