আজকে নাকি বাবা দিবষ। কিন্তু আমার তাতে কি যায় আসে? ৯ বছর বয়েসে আমার বাবা আমার মায়ের সাথে ২২ বছর সংসার জীবন শেষ করে নতুন সংসার শুরু করে। বাবার দায়িত্বহীনতা, মায়ের প্রতি অবিচার, অন্য নারীর প্রতি আসক্তি দেখে আমরা ভাইবোনেরা মায়ের সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিলাম। বাবা আবার সংসার পাতলো। মা হয়ে গেলো একাধারে বাবা ও মা। মায়ের হাতে ভাত খাওয়া, আল্লাদী করা, আঁচলে মুখ মোছা এসব আমাদের ছিলনা। আমরা পেয়েছি এক অতি কঠিন মাকে যে কিনা সন্তানদের কাছে টাইগ্রেস উপাধি পেয়েছিলো। সেই হিসেবে আমরা মাও পাইনি বাবাও পাইনি, পেয়েছি অভিভাবক। দারিদ্রতার কষাঘাত। কিন্তু কঠোর জীবন গঠন। যার ফলশ্রুতিতে আমাদের ভাইবোনদের মধ্যে মমতা জিনিষটা কম। আবেগের বালাই নেই বললেই চলে। আমরা কান্নাকাটি করে ঘরের দরজা লাগিয়ে। ভয়াবহ বিপদেও মাথে গরম করিনা। আমরা সবাই এখন প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু পারিবারিক বন্ধন আমাদের নেই। নিজেদের ভেতরেও না।
১৭ বছর পর বাবা আমাকে ফোন করেছিলেন। কৃতকর্মের ক্ষমা চান। আমি অম্লান বদনে তার কাছে ১৭ লাখ টাকা চাইলাম। উনি কারন জানতে চাইলে বলেছিলাম উনি যখন চলে যান আমার বয়স ৯। এখন আমি রেডীমেড প্রতিষ্ঠিত কন্যা। সুতরাং টাকা তো দিতেই হবে। প্রতি বছরের জন্য ১ লাখ করে। এও বলেছিলাম বছর বাড়লে টাকার অংকও বাড়বে। উনি খুব হতাশ হলেন। কি করব? কথায় আছে পৃথীবিতে কোন "ফ্রি লাঞ্চ নেই"।
১ বছর, ৬ মাস পরপর ফোন করেন আমাকে। আর ভাইবোনদের করতে সাহস পাননা বোধহয়। আমি নিরাশক্ত ভঙ্গিতে বলি ভাল আছি। লিখিত ভাবে মাফ করে দিবো যদি টাকা দাও। টাকার পরিমান ক্রমশই বাড়ছে।
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে একটা জিনিষ খুব ভালো ভাবে শিখেছি। রক্তের বন্ধন বলে কিছু নেই। মানুসের সম্পর্ক তৈরী করে তার আত্মা। রক্ত না। তাই রক্তের সম্পর্ক বলে কিছু নেই।