কত বড় বুকের পাটা থাকলে একজন কলম শ্রমিক অনুরাগীদের বেস্টনী থেকে বেরিয়ে অবশেষে একা হয়ে যেতে পারে।কবি অতঃপর ঔষধবিদ অতঃপর ঔষধ কারিগর অতঃপর তাত্ত্বিক অতঃপর দার্শনিক কৃষক এবং প্রতিস্ঠান সমালোচক রাজনীতিবিদ এবং ধর্ম প্রবক্তা সর্বশেষে হয়ত ভাবি নিঃসঙ্গ পথিক।তিনি অনন্য প্রতিভাবান ফরহাদ মজহার।যারা দর্শন বিদ্যায় হাসে হাঁটে ঘুমায় ভাবে ও বানিজ্য করে সেই সব ক্ষনজন্মাদের আদর্শ মানুষ।ফরহাদ ভাবে চৈতন্যে কখনই কেবল একজন পুরুষ নয় প্রকৃতির সাথে যুক্ত হয়ে সে একজন মানুষে পরিনত হয়েছে।এই পোড়া বাংলায় কয়জনেরই বা এমন ভাগ্য হয়েছে যার ভেতর পুরুষ প্রকৃতি যুগপৎ বিরাজিত।
তাঁকে বীরত্ব বলা যায় কারন জগতের সর্বশ্রেস্ঠ অদৃশ্য কবিকে "এবাদত নামা " য় এক হাত দেখিয়ে দিয়েছেন।তিনি বাক্যহীন অস্তিত্ব নতুবা জগত আধুনিক দুই অনবদ্য কবির লড়াই উপভোগ করতে পারত।
যাকে মানুষ চিনে না তাকেই মানুষ একাধারে মহিমান্বিত করতে পারে।এটা মানুষের অজ্ঞতা প্রসূত উদার স্বভাবের কাজকাম।অন্যদিকে যাকে চিনতে না পেরে অজ্ঞতা প্রসূত হীনতায় অপদস্হ ভাবে এটাও মানুষের স্বভাব।মোদ্দা কথা মানুষ নিজেকে ছাড়া আর কাউকে চিনতে পারে না।ক্ষনিকের জন্য পারলেও তা স্হায়ী হয় না।
মহামহর্ষিরা বলেছেন"নিজেকে জানো তা হলে পরমকে জানতে পারবে"।এটা একটা কথার কথা,মন ভোলানো বানী।আসল কথা হলো প্রতেবেশী বস্ত্ত ও শক্তি জগতকে যত জানবে জগত তোমার কাছে ততই পরিস্কার হতে থাকবে।
আমার কাছে কবি ফরহাদ মজহার সত্যকারের চৈতন্যবান কবি।তিনি তার প্রতিবেশী বস্ত্ত ও শক্তির মধ্যে ছন্দ মাএা ও লয় খুজে ফেরেন।উপমা অনুপ্রাস,শব্দ শব্দের সন্তান সন্তন্তি দিয়ে তিনি তা গ্রন্হনা করেন।কিন্তু অদ্যাবধি নিজেকে ছাড়া কাউকে চিনতে পারেন কিনা তার কোন প্রমান নেই।ফরহাদকে সর্বশেষ তার মফস্বল শহরের বাড়ীতে দেখেছি কিন্চিৎ কথাও হয়েছে এবং তিনি মুসলিম পন্ডিত ও মনীষীদের নতুন করে চেনার চেস্টা করার কথা দিয়েছেন।আমি জানি চেনা হবে না তবে মনীষীদের নব জন্ম লাভ হবে কবির রচনায়।আসলে সব সৃস্টিশীলই কবি।তারা বিজ্ঞানী হন বা অর্থনীতিবিদ বা রাজনীতিবিদ,দার্শনিক অথবা কৃষিবিদ যাই হোন না কেন।এরা কিছুই চিনতে না পারার ফলে নব নব সৃষ্টি করতে পারছেন।সৃষ্টি করতে হলে অজ্ঞ থাকার বিকল্প নেই।
মানুষ যাকে ভালো লাগে মনে রাখে।এই মনে রাখার ভেতর কবি ফরহাদ মজহার কতকাল বেঁচে থাকবেন তা কেউ জানে না। তার হ্য়ত ইচ্ছা তাকে সর্ব স্তরের মানুষের ভাল লাগুক। এজন্যই হ্য়ত তিনি নিজ ধর্ম ,অধর্ম, বিধর্ম ,ধর্ম ও অপরাপর সব কিছুতে আছেন।তার সাধ্যানুসারে তিনি খেলাধুলাতেও ছিলেন।তিনি একজন ঘুড়ি কাটার যাদুকর এ কথা তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না ।দূর মেঘ মুক্ত আকাশে উড়ে যাওয়া ঘুড়ি নাটাই মালিকের হাতে ,সুনিপুন হাতের ইশারায় ঐ ঘুড়ি অন্য ঘুড়িকে তন্তু চ্যুত করার শক্তি পায়।নিরূপম ঘুড়ি দুরে কোথাও নিপতিত হয়।ফরহাদের ঘুড়ি গৌরবে আকাশে উড়তে থাকে।কবির ভেতর কাটাকাটি করে টিকে থাকার প্রবনতা সেই থেকে । নিঃসঙ্গ আকাশে উড়ন্ত ঘুড়ি আর নিঃসঙ্গ বালক ফরহাদ।কেটে কেটে একা হয়ে যাওয়া এ বড় কম কথা নয়।একটু ভাবলে তার এ যাবৎ কালের জীবনে নানা ভাবে নানা কায়দায় নিঃসঙ্গ হয়ে যাওয়ার তথ্য খুঁজে পাওয়া কঠিন নয়।
পড়েছেন ফার্মাসি, কবিতার ভেতর ফার্মাসিস্ট ফরহাদ মজহার নিঃসঙ্গ হলেন।ছিলেন জৌলুসের নিউইর্য়কে জাফর উল্ল্যার গন স্বাস্হ কেন্দ্রের ঘেরাটোপে পড়ে নিঃসঙ্গ হলেন।তার জীবনে নিঃসঙ্গতার মিছিল।বাংলাদেশের সব নমঃস্ব পন্ডিতেরা তার সাহচর্য্য পেয়েও তাকে নিঃসঙ্গ ফেলে মনি কান্চন ও দাপটে অনেক বেড়েছেন।কবি ফরহাদ এতে খেদ নেই।
অন্ন পরিধেয় বাসস্হান তার নিরাপদ। তিনি কাছা মেরে কৃষকের বন্ধু সেজেছেন।বাউলের সঙ্গে মেতেছেন।তারা কেউ তাকে চিনে না তিনিও কাউকে চেনেন না ।সব কিছুতেই থেকেও ফরহাদ নিঃসঙ্গ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ১১:১০