somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুম্বাই আন্ডারওয়ার্ল্ডের ইতিকথা: পর্ব- ২

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুম্বাই। ভারতের প্রাণস্বরূপ এই নগরী বিশ্বের অন্যতম জনবহুল এবং বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ মহানগরী। যুগের পর যুগ ধরে অজস্র মানুষকে আশ্রয় দিয়েছে এই মুম্বাই, যুগিয়েছে অন্ন। আজও প্রতিদিন অসংখ্য জীবিকান্বেষী মানুষকে সাদর অভ্যর্থনা জানায় প্রায় ২.৫ কোটি অধিবাসীর শহর মুম্বাই। কিন্তু প্রায় সকল মহানগরীর মতই মুম্বাইয়েরও আছে এক অন্ধকার জগৎ, এ হল মুম্বাইয়ের সেই ভয়ংকর অপরাধ জগৎ যা কেবল তার শান্তিপ্রিয় বাসিন্দাদেরই নয় বরং ভারতসহ ভারতের বাইরেও বহু মানুষের ঘুম কেড়েছে। হাজী মাস্তান, মুদালিয়ার থেকে দাঊদ ইব্রাহীম, ছোটা শাকিল -মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রকরা এই স্বপ্নের নগরীর ইতিহাসকে রক্তে রঞ্জিত করতে কখনই কুণ্ঠিত হয় নি। তাদের লিপ্সা-হিংসা ছবির মত মুম্বাইয়ে বহু রক্ত ঝরিয়েছে আর আজও ঝরিয়ে যাচ্ছে। মুম্বাইয়ের সেই লোমহর্ষক অপরাধ জগৎ নিয়েই কিছু না বলা কথা, কিছু গুঞ্জন ধারাবাহিক পর্বে তুলে ধরার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।


প্রথম পর্ব

পর্ব ২: পাঠান আধিপত্য


মুম্বাইয়ের ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম পরিকল্পিত ও ঐক্যবদ্ধ অপরাধের সূচনা করে পাঠানরাই। এর আগে যে একেবারে অপরাধ ছিল না তা নয়, তবে ছোটখাট চোরের ছিঁচকে চুরি আর মাফিয়া চক্রের অপরাধযজ্ঞে পার্থক্য রয়েছে বিস্তর। মুম্বাইয়ের চাকচিক্যে আকৃষ্ট আফগান পাঠানরা দলে দলে পাড়ি জমায় মুম্বাইয়ে। এদের অধিকাংশই ছিল পুঁজিপতি যারা মূলত সুদের কারবারে জড়িত ছিল। প্রথমদিকে চওড়া সুদে ঋণ দেওয়া আর অল্পবিস্তর মদের ব্যবসাতেই সীমাবদ্ধ ছিল তাদের কর্মকাণ্ড। কিন্তু ক্রমেই আরও বড় অপরাধের দিকে ঝুঁকতে শুরু করে তারা। এর কারণ ছিল মূলত তাদের প্রবল প্রতিপত্তি, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অদক্ষতা আর উপযুক্ত প্রতিযোগীর অভাব। ঐক্যবদ্ধ পাঠানদের সামনে ভারতীয় চোর-ডাকাতদের দাঁড়ানোর কোন ক্ষমতাই ছিল না। এই সুযোগে অনেকটা ফাঁকা মাঠে গোল দেয়ার মত মুম্বাইয়ে অপরাধের জাল বিস্তার করে পাঠান গং। মুম্বাই ততদিনে ১৩ হাজারেরও বেশি পাঠানের ঠিকানা আর এই পাঠানদের সংগঠনের নাম ছিল পাখতুন জিরগা-এ-হিন্দ। পাখতুন জিরগা-এ-হিন্দ হল মুম্বাই তথা ভারতবর্ষের প্রথম মাফিয়া গ্যাং আর এর নেতা আইয়ুব খান পাঠান ভারতবর্ষের অপরাধ জগতের প্রথম মাফিয়া ডন হিসেবে স্বীকৃত। ১৮ শতকের শেষ প্রান্তে উত্থান ঘটা আইয়ুব খান পাঠান ওরফে আইয়ুব লালা সুদীর্ঘকাল মুম্বাইয়ের একচ্ছত্র অধিপতি ছিল। তৎকালীন বোম্বের প্রায় সকল পানশালা, জুয়ার আসর ও পতিতালয় ছিল আইয়ুব গং এর নিয়ন্ত্রণাধীন। এগুলো পাঠানদের হয়ে পরিচালনা করত বহু মুসলিম ও হিন্দু। পরবর্তীতে এরাই হয়ে উঠে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের নতুন কাণ্ডারি। এমনই একজন হল করিম লালা। প্রথম জীবনে করিম লালা ছিল মুম্বাই বন্দরের কুলি। ১৯৪০ সালে চোরাকারবারি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সৎ ছেলে কাশ্মিরী লালা খুন হবার পর মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের রাজা আইয়ুব লালা বিমর্ষ হয়ে পড়ে। পুত্রশোকে কাতর আইয়ুব লালা মুম্বাইয়ের রাজত্ব ছেড়ে পাড়ি জমায় জন্মস্থান আফগানিস্তানে। এসময় তার রাজত্বের ভার নেয় করিম লালা। ৪০ এর দশকে পেশোয়ার থেকে পাড়ি জমানো আব্দুল করিম শের খান ওরফে করিম লালা প্রথমে বন্দর শ্রমিক হিসেবে জীবন শুরু করলেও অল্পদিনেই মদের কারবারি হিসেবে নাম কুড়ায়। ১৯৪০ সালে আইয়ুব লালা মুম্বাই ত্যাগ করলে তার স্থান দখল করে করিম লালা। অনেকে তাকেই মুম্বাইয়ের প্রথম ডন হিসেবে মানে। নিজেকে ডন হিসেবে পরিচয় দেওয়া করিম লালা প্রায় ২০ বছর অপ্রতিদ্বন্দ্বী চোরাকারবার ছিল। ৭০ এর দশকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মুদালিয়ার এবং হাজী মাস্তানের উত্থান ঘটলেও করিমের দাপট তখনও যথেষ্ট ছিল। অবশেষে কাসকার পরিবারের সাথে বিরোধের জের ধরে দাঊদ ইব্রাহীমের কাছে তার পরাজয় ঘটে। ২০০২ সালে ৯০ বছর বয়সে বার্ধক্যজনিত কারণে মারা যায় করিম লালা।



তৃতীয় পর্ব


চতুর্থ পর্ব


পঞ্চম পর্ব


ষষ্ঠ পর্ব


সপ্তম পর্ব



শেষ পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:৪১
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে; ভাবতে ভালই লাগে

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৩


বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল নেতিবাচক। একই বছরে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১ শতাংশ। ১৯৭৩ সালে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা

লিখেছেন এমজেডএফ, ০২ রা মে, ২০২৪ দুপুর ১:১১



সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×