(কক্সবাজার নিউজ ডট কম):
সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা ফের সংগঠিত হয়ে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের দুটি পাহাড়ের গহীন অরন্যে কম্পু- ক্যারাতে ও অস্ত্র চালনার ট্রেনিং নিচ্ছে বলে জানা গেছে। সন্ত্রাসী ওই সব রোহিঙ্গারা কক্সবাজার - টেকনাফ মহাসড়কে ব্যারিকেড দিয়ে যানবাহনের ডাকাতিও সংগঠিত করে চলেছে প্রতিনিয়ত। মঙ্গল বার দিবাগত রাতে প্রধান সড়কে ব্যারিকেড বসিয়ে টেকনাফের কেরুনতলী নামক স্থানে ২টি গাড়ীতে লুটপাট চালিয়েছে সশস্ত্র রোহিঙ্গারা। যাত্রীবাহি একটি মাইক্রোবাস ও পণ্যবাহি ট্রাকে রোহিঙ্গা ডাকাতরা তান্ডব চালিয়ে নগদ টাকা মোবাইল সেটসহ বিভিন্ন মালামাল লুট করেছে।
ডাকাত আক্রান্ত বোয়ালখালীর আহম্মদ নবী জানান,প্রায় ১৫ জনের মুখোশ পরা সশস্ত্র ডাকাত দলের কথা বার্তায় তাদেরকে রোহিঙ্গা বলে ধারনা করা হয়েছে।
জানা গেছে,বান্দরবানে বসতি স্থাপনকারী এনায়েত নামের এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী উখিয়ার কুতুপালং শরনার্থী শিবির ও রোহিঙ্গা বস্তি থেকে বখাটে যুবকদের নিয়ে নতুন ভাবে রোহিঙ্গাদের সংগঠিত করা হচ্ছে। ইতোপূর্বে উখিয়া থানা পুলিশ ও ক্যাম্পে দায়িত্বরত পুলিশ-আনসার সদস্যরা একাধিক বার অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসী এনায়েতকে ধরতে পারেনি।ওই সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা দলপতি বখাটে যুবকদের নিয়ে কুতুপালং ও কেরুনতলীস্থ গহীন অরণ্যে অস্ত্র পরিচালনা, ক্যারাতেসহ বিভিন্ন ট্রেনিং দিয়ে চলছে বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। পুলিশ- জনতার ঘেরাওকালিন আটক ও গণপিটুনীতে নিহত বনের রাজাখ্যাত রোগিঙ্গা সন্ত্রাসী দলনেতা ইউনুচের সেকেন্ড ইন কমান্ড এনায়েত কয়েক বছর ধরে বান্দরবানসহ বিভিন্ন স্থানে আত্নগোপন করে থাকে। মাসখানেক পূর্বে কুতুপালং শিবিরে হঠাৎ করে এনায়েতকে দেখে নিরীহ রোহিঙ্গারা আতংকিত হলেও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা। তাকে অচিরে গ্রেফতার করা না হলে শিবিরে আইনশৃংঙ্খলা পরিস্থিতির আরো অবনতিসহ নাশকতামুলক ঘটনার আশংকা করা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে।
সুত্রে আরো জানা গেছে,মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা আরএসওসহ বিভিন্ন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী এবং সংগঠন এখানে সংগঠিত হওয়া নিয়ে প্রশাসনসহ স্থানীয় অধিবাসীদের ভাবিয়ে তুলেছে। গত বছর কক্সবাজার জেলায় ভোটার তালিক হালনাগাদের সময় বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গারা ভোটার তালিকাভুক্ত হয়। তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের বাদ দিতে সংশোধিত ভোটার তালিকা প্রনয়নের খবরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ মানববন্ধন কর্মসুচী পালনের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে ছিল। ইউএনএইচসিআরসহ কয়েকটি এনজিও রোহিঙ্গাদের প্রলুব্ধ করে তাদের স্বার্থ হাছিলের অপতৎপরতায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। সামপ্রতিক সময়ে জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গা গ্রেফতার অভিযান শুরু হলে গ্রেফতার এড়িয়ে অনেকে শিবিরে এবং গহীন বনাঞ্চলে গা ঢাকা দেয়। রেহিঙ্গাসহ এনজিও গুলোর এ ধরনের দেশ বিরোধী কার্যকলাপের ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন সরকারের উধর্বতন মহলে অবগত করেছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে, মিয়ানমার থেকে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের অভিযোগ তুলে সীমন্তেও বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে হাজার হাজার রোহিঙ্গা এদেশে পালিয়ে আসে। রোহিঙ্গাদের জন্য কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় নির্মণ করা হয় ২টি শরনার্থী ক্যাম্প। বর্তমানে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ২টি ছাড়াও কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ২লাখেরও বেশী রোহিঙ্গা নারী পুরুষ ও শিশু। এদের নেতৃত্বে রয়েছে বেশ কিছু রোহিঙ্গা নেতা। আর এদের পুঁিজ করে ফায়দা হাছিল করছে ইউএনএইচসিআরসহ কয়েকটি ইসলামিক এনজিও এবং মৌলবাদি একাধিক সংগঠন। এদের সাথে যুক্ত হয়েছে মিয়ানমারের আরএসও,নুপাসহ কয়েকটি বিচিছন্নতাবাদী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসব সংগঠনে রোহিঙ্গা যুবকদের প্রলুব্ধ করে দলে এনে উখিয়ার বনাঞ্চলে দেয়া হচ্ছে সমর প্রশিক্ষনও। এমনকি মধ্যপ্রাচ্যসহ বহিবিশ্বে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেয়া হচেছ। বহু কু-কর্মে রোহিঙ্গা নেতাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাসহ পুঞ্জিভূত অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এদের মাধ্যমে উখিয়াকুতুপালং ও টেকনাফ নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে একাধিক জঙ্গী সদস্যও আশ্রয় নিয়েছে গোপনে। এ নিয়ে শিবির গুলোতে চলছে বিভিন্ন আলোচনা। সন্ত্রাসী রোহিঙ্গা ডাকাতদের সুসংগঠিত করাটা রোহিঙ্গা নেতাদের প্রধান উদ্দেশ্যে। এছাড়া অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ ও বেচাকেনা মিয়ানমারে খবর পাঠিয়ে নতুনভাবে রোহিঙ্গা এনে শিবিরে দলভারী করণ ও শরণার্থীদের উস্কানী দিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত ও বিব্রতকর অবস্থায় ফেলানো,রোহিঙ্গা গ্রেফতার অভিযানে ভাটা এবং প্রত্যাবাসন বিরোধী আন্দোলনমুখী করার অভিযোগ উঠেছে ওই রোহিঙ্গা নেতাদের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইন ও দেশের প্রচলিত আইন বিরোধী ওইসব কর্মকান্ড অব্যাহতভাবে চালিয়ে গেলেও তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
আন্দোলনমুখী ও প্রশিক্ষন নেয়া সন্ত্রাসী রোহিঙ্গারা যে কোন সময় এখানে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে সচেতন মহল মতামত ব্যক্ত করেছেন। যেসব রোহিঙ্গা ও এনজিও সংস্থা সরকারও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান করছে এসব সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের কালোতালিকাভুক্ত করে বিহীত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এ ব্যাপারে তড়িত ব্যবস্থা নিতে জেলাবাসী জোর দাবী জানিয়েছেন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




