somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লাস্ট পাফ - ৩য় পর্ব (ডায়রীর ছেড়া পাতা)

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা নিয়ে জ্ঞান ফিরলো......

চোখ খোলার পর চারপাশে তাকিয়ে কিছুটা দ্বিধা-দ্বন্দে পড়ে গেলাম। কনফিউশান লাইক হেল। আমার নীচে মোলায়েম গদির একটা বিছানা। মাথার নীচে নরম তুলতুলে একটা বালিশ। এসির বাতাসে গা জুড়িয়ে যাচ্ছে। পরিপাটি করে সাজানো একটা রুমে আমি নবাবের মত শুয়ে আছি। উঠে বসলাম। সর্বহারাদের এভাবে আয়েশ করা মানায় না।

আমি একটা কুকুর। লাথি খাওয়া কুকুর। ইউজড এন্ড ফাকড টোটালি। যে যখন যেখানে পেয়েছে, যেভাবে পেরেছে ইউজ করেছে, আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে সুখে মেতেছে। আমি কুকুর ছিলাম, কুকুর আছি, ভবিষ্যতেও থাকবো। বিষাক্ত নখের থাবায় উড়িয়ে দেবো সব। হা হা হা। দেয়ার উইল বি এ কাপ অফ ডগি শিট ইন ইউর শোকেস। ইউ উইল ওয়াচ ইট, স্মেল ইট এন্ড দেন টেস্ট ইট। টেস্ট টু ডেথ।

শরীর খুব ক্লান্ত। নিজেকে বেশ পবিত্র মনে হচ্ছে। শার্টের হাতায় রক্ত দেখে আতকে উঠলাম। গত রাতের কথা মনে পড়ে গেল। ঘটনাবহুল একটা রাত। পূণ্যের রাত। হলি নাইট উইথ হলি ব্লাড। উফফ জেনী.... হারায়া গেলা এভাবে? হোয়াই? জেনীর কথা মনে পড়তেই বুকে একটু ব্যাথা অনুভব করলাম। বড় বেশী ভালবাসতাম ওকে। জেনীও আমাকে ভালবাসত। কিন্তু আমি প্রমাণ দিয়েছি, ও দিতে ব্যর্থ হয়েছে। খেলা। জীবনটা একটা খেলা। এ খেলায় জেতার জন্য প্রমাণ লাগে। যে ভাল খেলবে সে জিতবে। আমি ভাল খেলেছি, জিতে গিয়েছি। একাই। জেনী খেলেছে ওর হাজবেন্ড নিয়ে। তবুও ভাল খেলতে পারেনি। হেরে গিয়েছে।

বাট হোয়াই আই এম হিয়ার? এখানে আমার কি? কে আমাকে এখানে আনলো? একটা শাওয়ার নেয়া দরকার। হট শাওয়ার। বাথরুমটা ঘরের ওপাশে।

শাওয়ার নিয়ে ফ্রেশ হয়ে রুমে ঢুকে দেখি টাকমাথা একটা লোক আমার বেডে বসে আছে। চুরুট টানছে। চুরুটের গন্ধ খুব ভালো লাগে। জেনী আমার বার্থডেতে এক ক্যান গিফট করেছিলো। বড় ভালো জিনিস। টাকমাথার পাশে দুটা লোক হাতে শটগান নিয়ে দাড়ানো। এরা কে রে বাবা? বডিগার্ড নাকি? হা হা, এই টাকলুও আমাকে ভয় পেয়ে গেছে। ধীরে সুস্থে গিয়ে টাকলুর সামনে একটা চেয়ার টেনে বসলাম। টেবিল থেকে একটা চুরুট নিয়ে মুখে গুজলাম। আজ থেকে সিগারেট বাদ। খালি চুরুট খাবো।
বাথরুমের আয়নায় চেহারাটা অনেক বিভৎস লেগেছে। ডানগালে শালারা কি দিয়ে যেন পোচ দিয়ে মাংস তুলে নিয়েছে। ভুতের মত লাগছে।

- “হাই নিক, কেমন আছো?”

শালা আমার নাম জানলো কিভাবে? জবার দেয়ার পরমুহূর্তেই টাকলু পকেট থেকে কি জানি একটা বের করলো। ভালমত তাকিয়ে দেখি আমার ডায়রীটা। সুখ দু:খের সাথী, প্রমাণ। আমি জিজ্ঞেস করতে যাব যে, সে কেন আমার পার্সোনাল ডায়রীটা নিল তখনি আমাকে থামিয়ে দিল। সান অফ এ বিচ।

টাকলুর সাথে প্রায় দু ঘন্টা কথা হলো। হারামী বড়সড় বিজনেসম্যান। মালদার পার্টি। জেনীর হাজবেন্ডকে খুন করার সময় থেকে এর একটা লোক আমাকে ট্র্যাক করছিলো। সারারাস্তা আমাকে ফলো করেছে। আমি টেরই পাইনি। থুতু মারতে ইচ্ছা করছে আমাকে। চরম বিরক্ত লাগছে। কিন্তু বিরক্তি প্রকাশ করলাম না। তাহলে রেগে যাব। মাথা গরম করা যাবেনা আর। কথাবার্তা শেষ হবার পর ডিল ফাইনাল হলো।

ডিলটা তেমন কিছু না। কয়েকটা মার্ডার করতে হবে আমাকে। বিভিন্ন দেশে। আমাকে সব অ্যামুনিশন দেয়া হবে। প্রত্যেক দেশে সরকারী কিছু লোক আমাকে সাহায্য করবে। ভিকটিমের লিস্টে কয়েকজন নারীও আছে। তাদেরকে খুন করার আগে রেপ করার পারমিশনও দেয়া হয়েছে আমাকে। প্রচুর টাকা দেয়া হবে আমাকে। সেই টাকা দিলে হাজারটা জেনী মিলবে। টোটাল ১৭ জনের নাম-ধাম দেয়া হয়েছে। প্রথম এসাইনমেন্ট লাস-ভেগাসে। এক ক্যাসিনোর মালিক। পরশু রওনা দেবো। কিন্তু হারামীর বাচ্চা আজব এক শর্ত দিয়েছে। আমার এই প্রিয় ডায়রীতে কিছু লেখা যাবেনা। কাজ সারতে হবে গোপনে। আমাকে তার লোকজন সব জায়গায় হেল্প করবে। উল্টাপাল্টা কিছু দেখলেই আমাকে শ্যুট করবে।

হা হা। শালা আমাকে গরু মনে করেছে। আমাকে শ্যুট করা এত সোজা? আর উল্টা পাল্টা কিছু কারার ইচ্ছাই আপাতত আমার নেই। আমার টার্গেট এখন হাজারটা জেনী।

প্রিয় ডায়রী তোমাকে বিদায়। আবার হয়তোবা লিখব কখনো। তবুও তোমাকে সাথে নিয়ে ঘুরবো। মিশনের হিসাব রাখতে হবে। আজ থেকে ডায়রী বাদ, সিগারেট বাদ। গালে কাটা দাগ, বুকে ক্ষত আর চোখের সামনে হাজারটা জেনীর জন্য আজ থেকে পথচলা। প্রত্যেকটা জেনী আমার ভালবাসা উপভোগ করার পরই আসল জেনীর কাছে চলে যাবে। ওদের বাচিয়ে রাখবো না। বাচিয়ে রাখলেই ধোকা দেবে। ধোকা খাওয়া যাবেনা।
মিশন লাসভেগাস স্টার্টস হিয়ার.............



এরপরে আর কিছু লেখা নেই ডায়রীতে। পরের সতেরোটা পাতায় লেখা মার্ডার -১, মার্ডার -২.. এভাবে ১৭ পর্যন্ত। এর পরেই প্রতিটা পাতায় লেখা জেনী-১, জেনী-২ তারপরে ক্রস। চারটা পাতায় বড় করে ক্রস আকা। নিকের করা চারটা মার্ডারের কমপ্লিশান।
ডায়রীটা ব্যাগে রেখে বসের দিকে তাকায় ইন্টারপোলের ডিটেকটিভ তিন্নী। তার উপর চার্জ পড়েছে নিককে ধরার। এই সিরিয়ার কিলার এখন পর্যন্ত ১৩ টা মার্ডার করেছে। ৯ টা রেপ এন্ড মার্ডার। কাল থেকে মিশন শুরু......



বাকীটা পরের পর্বে............

প্রথম পর্ব

দ্বিতীয় পর্ব
২৩টি মন্তব্য ২২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×