পথে চলতে চলতে যে ছবিগুলো উঠালাম তা দেখুন। - কী সুন্দর না!
- আমার বন্ধুরা সি, এন, জি তে।
নীলাচল চলে এলাম। এটি বান্দরবন শহর থেকে প্রায় ৪ কিঃমিঃ দূরে। কেউ যদি শুধু নীলাচল যেতে বা আসতে চায় তবে ৪০০-৫০০ টাকা লাগবে। এবার আসি, এই জায়গাটার নাম নীলাচল কেন? খুব সহজ উত্তর। আকাশের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। এমন নীল আকাশ আর কোথায় দেখা যায়? হুম, আমার মনে হলো এমন নীল আকাশ নীলাচল ছাড়া আর সেন্টমার্টিনেই কেবল দেখা যায়। টাইগার পাড়া এলাকায় এ পাহাড়টি বিধায় একে টাইগার হিল ও বলা হয়। দার্জিলিং এ ও টাইগার হিল আছে। সেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যায়। বরফের উপর সূর্যের আলো পড়লে কি যে সুন্দর লাগে! সেই সৌন্দর্য নাকি সবার ভাগ্যে জোটে না। কবি গুরু ৭ম বারের প্রচেষ্টায় সেই অপার্থিব সৌন্দর্য উপভোগ করেন।
আমি সেবার এর কেবল ছিটে-ফোটা দেখেছি। সেখানকার মতো করে এখানেও একটা দুইতলা গোল কটেজ বা গেস্ট হাউজ এর মতো বানিয়েছে যার চারদিকে বারান্দা। চমৎকার! কিন্তু চা খাওয়ারও ব্যবস্থা নেই দেখে একটু বিরক্তি লাগলো। এখান থেকে সূর্যোদয় নয়, দেখা যায় সূর্যাস্ত। আমরা ভুল সময়ে এসে পড়েছি। একেবারে দুপুর। ১১ টা বাজে বোধহয়। আসুন ছবি দেখা যাক।
- এই সেই নীলাচলের বিখ্যাত গোলাকার দ্বিতল কটেজ।
- ইউ কে চিং মার্মা একজন বীর বিক্রম।
- এটা এক ধরনের ঘাস ফুল। কি সুন্দর না! অনেক কষ্ট হয়েছে এই ছোট ছোট ফুলগুলোকে ক্যামেরায় বন্দী করতে।
- টাওয়ার।
- মূলবেদীতে উঠার সিড়ি।
তবে এখানে আসার আগে মনে হয় দুইবার করে টাকা দিতে হলো। তাই এইখানে আর কোনো টিকেট নেই।
- ছোটদের জন্য দোলনা।
- সি, এন, জি থেকে তোলা টাওয়ার।
এখানে খুব বেশি একটা সময় ছিলাম না। খুব বেশি হলে আধা ঘন্টা। এখানে আসলে দেখার কিছু নেই। বা ঘোরাঘুরির ও কিছু নেই। এখনো এটি গড়ে উঠছে। কাজ চলছে। বর্মীজদের মতো দেখতে এক মহিলা কাজ দেখা শোনা করতে এসেছিলেন। কোথায় কোথায় টাইলস বসাতে হবে, কেমন টাইলস হবে, কোথায় কোথায় বসাতে হবে, এই সব। এখানে কিছু ছবি তুলে নিলাম। একটা জেট প্লেন চলে গেলে মনে হলো যেন, নীল আকাশটাকে এফোড়-ওফোড় করে দিয়ে গেল। অনেক চেষ্টা করলাম বিষয়টাকে ক্যামেরায় বন্দী করার কিন্তু খুব একটা ভালো এলো না, তাই আর দিলাম না। চারপাশ সবুজ আর সবুজ। কি যে সুন্দর! মন গুমোট থাকলে ভালো হবেই। ও হ্যাঁ, এখানকার রাস্তা কিন্তু বেশ ভালো। একেবারে পীচ ঢালা। খুব বেশি প্রশস্ত নয়, তবু বেশ ভালো। রাস্তার দু-পাশে মাঝে মাঝে বাসা-বাড়ি আর পাহাড়ি সৌন্দর্য। বাসার সামনে দেখি দার্জিলিং এর মতোই ফুলের সমাহার। গোলাপ কম, জবা, গাঁদা, আর নাম না জানা বিচিত্র ফুল।
এর পর চলে এলাম মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে।- মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে ঢোকার গেট।
মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রটি বান্দরবন থেকে প্রায় ৫ কিঃ মিঃ দূরে। নীলাচল থেকে মাত্র ১ কিঃ মিঃ দূরে। মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকতে আপনাকে খরচ করতে হবে ৫০/- টাকা। তবে যদি ক্যাবল কারে উঠেন, তবে আপনাকে আরো ৩০/- টাকা খরচ করতে হবে। আসুন দেখা যাক, এখানকার বেশ কিছু ছবি। ছবির মাধ্যমেই জেনে নিই কী কী সুবিধা আছে এই পর্যটন কেন্দ্রে।
- এই হলো পুরো মানচিত্র।
- ঝুলন্ত সেতু।
এখানে দুটি ঝুলন্ত সেতু আছে। আমরা একটাতেই উঠেছি। আর পাহাড়ি পথে হাটতে হাটতে বের হয়ে গেছি বাইরে। কি আশ্চর্য আর যে অনেক কিছু ছিলো দেখার, দেখা হলো না কিছুই। চিড়িয়াখানা, স্মৃতি যাদুঘর, শিশু পার্ক, দেখা হলো না কিছুতেই। এর পরের বারের জন্য তোলা রইল। আসুন আরো কিছু ছবি দেখা যাক।
- একটা বিশ্রামাগার
- আদিবাসীদের নিয়ে ভাস্কর্য
ক্যাবল কারে উঠলাম। এখান থেকে তুলে নিলাম ঝুলন্ত সেতুর কিছু ছবি।
- পাহাড়ি ফুল।
- ছোট ছোট এই ফুল গুলো যে কি সুন্দর! ভালো ক্যামেরা থাকলে আরো জীবন্ত করে দেখানো যেতো।
এখানে একটি ভেষজ বাগান রয়েছে। পাহাড়ি পথ চলতে চলতে দেখলাম সেই সুন্দর গাছগুলো। নাম না জানা কত গাছ! এই পাহাড়ি পথে হাটতে হাটতে পেলাম ফলের দোকান। পাহাড়ি ফল। আমাদের চিরপরিচিত ফল। ডাব, কলা, পেপে, তেতুল, জাম্বুরা, আনারস আরো কিছু না চেনা ফল। আমরা প্রথমে ডাব, এর পর পেপে, এরপর কলা খেলাম। প্রত্যেকেই বোধহয় ছিলাম ক্ষুধার্থ। খেলাম ও পেট পুরে। প্রত্যেকেই স্বীকার করল আর লাঞ্চের দরকার নেই। তখন প্রায় ২ টার কাছাকাছি বাজে। কোথা দিয়ে বের হব কে জানে। তবু পেছন না ফিরে সোজা হেটেই চলেছি সামনে। এর পর বের হলাম যখন দেখি আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। একটু হেটে এসেই সেই মেঘালয় পর্যটনের সামনের গেটে চলে এলাম। ছবি আর লোড করা যাচ্ছে না। তাই স্বর্ণমন্দিরের ছবিগুলো এর পড়ের পোস্টেই দিতে হচ্ছে। আজ, এই পর্যন্ত থাক।
বাংলাদেশের দার্জিলিং- বান্দরবন (পর্ব-১)
বাংলাদেশের দার্জিলিং- বান্দরবন (পর্ব-৩)
বাংলাদেশের দার্জিলিং- বান্দরবন (পর্ব-৪)
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৪৮