তরকারিতে তেল ভেসে উঠার মত ইদানিং দেশের জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর প্রথম পাতায় চোখ রাখলে যে শিরোনামগুলো পাঠকের চোখের সামনে ভেসে উঠে সেগুলো হচ্ছে,বিদুৎ এর দাবীতে উওাল সারাদেশ;বিদুৎ এর দাবীতে বিক্ষোভ;বিদুৎ এর দাবীতে দেশব্যাপি ভাংচুর;লোডশেডিং এ বিপর্যস্ত জনজীবন।লিড নিউজের ভেতর বিক্ষুদ্ধ আমজনতার ছবির পাশের কলামে থাকে ডিজিটাল নেত্রীর হুশিয়ারি,বিদুৎ নিয়ে কোন রকম রাজনীতি চলবেনা কিংবা বিরোধী দল বিদুৎ এর নাটবল্টু খুলে নেয় বলেই সারাদেশে এমন বিদুৎ সংকট অথবা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাধাগ্রস্থ করতেই বিরোধীদল পরিকল্পিত ভাবে বিদুৎ সংকট সৃষ্টি করে দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টি করছে।চরম গরমের মাঝেও বিনোদনের স্বাদ নিয়ে হেসে গড়াগড়ি খেতে এখন আমজনতার হাসির ম্যাগাজিন অনুষ্টান কিংবা কৌতুক পড়তে হয়না পত্রিকার পাতায় চোখ রাখলেই হয়।কারণ,ডিজিটাল মন্ত্রীদের বিদুৎ নিয়ে যে ডায়লগ পত্রিকায় আসে তাতে চরম হাসির কৌতুকগুলোও হার মানে মন্ত্রী এমপিদের ডিজিটাল ডায়লগে।
লোডশেডিংয়ের কারণে জনজীবন অতিষ্টের খবর পত্রিকার পাতায় ছাপা হলেও লোডশেডিংয়ের উপকারিতার খবর পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়না।অথচ জনজীবনে লোডশেডিংয়ের উপকারিতা কিন্তু একদম কম নয়।যেকোন উপকারিতার খবর প্রকাশে ভিমরুল সব সময় আপোষহীন।তো চলুন লোডশেডিংয়ে বসে উপরওয়ালার বদৌলতে পাওয়া দিনের আলোতে বসে জেনে নেয় লোডশেডিংয়ের উপকারিতা।
বৈদাশিক মুদ্রা আয়ের অপার সম্ভাবনা
স¤প্রতি বিশ্বব্যাপি এক জরিপে দেখা গেছে ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় ব্যায়ের কারণে ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতে পরীক্ষায় ডাব্বা মারার সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে।বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশের তরুন-তরুনীরাও চরম ভাবে ফেসবুক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে দিনদিন।তরুন-তরুনীদের ফেসবুক রোগ সারাতে লোডশেডিংয়ের বিকল্প কোন পথ নেই ।বিদুৎ না থাকলে কম্পিউটার চলবেনা আর কম্পিউটার না চললে ফেসবুকেও আজাইরা টাইম পাস করা যাবেনা তাই পরীক্ষার রেজাল্টও খারাপ হবেনা।তরুন-তরুনীরা তখন মোমবাতি জ্বালিয়ে পড়তে বসবে।দেশে মেধাবীর সংখ্যা দিনদিন বাড়বে।ফেসবুক রোগের কারণে ইউরোপ আমেরিকার দেশগুলোতে কয়েকবছর পর মেধাবীদের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ার কারণে ওদের প্রচুর মেধাবী তরুন-তরুনীর ধরকার হবে।এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে আমাদের দেশের মেধাবীদের ইউরোপ আমেরিকায় রপ্তানি করে কোটি কোটি ডলার বৈদাশিক মুদ্রা আয় করা যাবে।
এক ডিলে ২ পাখি
ইদানিং ফোনবুকের ১০০টা নাম্বারের সবগুলোতে ডায়াল করলে ৯০টা নাম্বারই বন্ধ পাওয়া যায়।কারণ,লোডশেডিংয়ের কারণে মোবাইলে চার্জ দেওয়া হয়না।মোবাইলে চার্জ থাকলে পাবলিকের গলায় চুলকানি উঠে।আর পাবলিক গলা চুলকানি কমাতে পরিচিতদের কল দিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা খেজুরে আলাপ চালিয়ে যায়।পাবলিকের অর্থ এবং সময় অপচয়ের বিপরীতে কোটি কোটি টাকা বিদেশী মোবাইল কোম্পানীগুলো দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে।যেভাবে বিদুৎবিহীন থাকছে জনজীবন এভাবে চলতে থাকলে মোবাইলের চার্জ দিতে দিতে না পারার কারণে বন্ধ থাকছে মোবাইল ফোন।মোবাইল বন্ধ থাকার কারণে পাবলিকের গলা চুলকানী রোগও আস্তে আস্তে সেরে যাবে বিপরীতে সময়ের অপচয় + মোবাইল কোম্পানীগুলো কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাওয়া দুটোই ঠেকানো যাচ্ছে।এক ডিলে ২ পাখি মারার কাজ শুধু লোডশেডিংয়ের কারণেই সম্বভ।
পারিবারিক শান্তি এবং পরকীয়া
সন্দেহ,অবিশ্বাস,ঝগড়ার কৌশল,কিভাবে অন্যকে ছোট করতে হয়,কিভাবে পরিবারে ভাই-ভাইয়ে ঝগড়া লাগিয়ে আলাদা হওয়া যায়,শাশুড়ি বউকে বউ শাশুড়ীকে কিভাবে দৈাড়ের উপর রাখে,দেবরের বউয়ের চরিত্রে কলংক লাগিয়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে দেবরের সাথে পরকীয়া ,স্বামীকে ফাঁকি দিয়ে কিভাবে বাইরে গিয়ে পরকীয়া করতে হয় এইসবে ভরা বস্তা পচাঁ হিন্দী সিরিয়াল দেখে নিজেদের বাস্তব জীবনেও প্রয়োগ করতে শুরু করেছে নারীরা।কিছু ঘটলেই সেখানে রহস্য খুঁেজ একে অপরকে দোষারপ করা,সিরিয়াল স্টাইলে বউ শাশুডিকে শাশুড়ি বউকে ,ননদ ভাবীকে ভাবী ননদকে সাইজ করতে গিয়ে একদিকে যেমন পারিবারিক অশান্তি বাড়ছে অপরদিকে বাড়ছে পরকীয়া।হিন্দী সিরিয়ালগুলোতে পরকীয়াকে এমন লোভাতুর ভাবে প্রকাশ করা হয় যে পরকীয়া না করলে জীবনই বৃথা !! টানা লোডশেডিং এর কারণে নারীরা এখন একরকম হিন্দী সিরিয়াল মুক্ত।হিন্দী সিরিয়াল মুক্ত থাকতে থাকতে আস্তে আস্তে আবার পারিবারিক শান্তি ফিরে আসবে ।কমে আসবে পরকীয়ার সংখ্যা।
প্রিয় পাঠক,লোডশেডিংয়ের এমন উপকারিতা জাতির সামনে নিয়ে আসার কারণে ডিজিটাল নেত্রীর কাছে এই অধমকে ডিজিটাল বিদুৎ মন্ত্রী বানানোর দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল নিজ দায়িত্বে করিবেন।কারণ,পুলিশ আর দিনবদলের সোনার ছেলেদের মধ্যে কোন ব্যবধান এখন নেয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




