মেয়েটা প্রতিদিন রিচার্জ করতে দোকানে যায়।
ছেলেটা বিভিন্ন বাহানায় মেয়েটাকে একটু দেখার জন্য দোকানের আশে-পাশে ঘুরাঘুরি করতে থাকে...
মাঝে মাঝে মেয়েটার পেছন পেছন দোকানেও যায়...
মেয়েটাকে ইশারা ইঙ্গিতে ভালোলাগাটা বুঝানোর চেষ্টা করে...
ওদিকে মেয়েটা ছেলেটার এমন আচরণে মুখ লুকিয়ে হাসে। মেয়েটার ভালো লাগে...
মেয়েটা জানে, ছেলেটা তাকে পছন্দ করে। কিন্তু বুঝতে দেয় না। মেয়েদের বুক ফাঁটে তো, মুখ ফোঁটে না...
এভাবে বেশকিছুদিন চলতে থাকে।
একদিন ছেলেটা সাহস করে মেয়েটাকে বলে, আপনার ফোন নম্বরটা কী পেতে পারি?
মেয়েটা জবাবে 'না' বলে নিজ বাসার উদ্দেশ্যে চলে যায়, আর মনে মনে বলে, পাগল ছেলে, এইভাবে সরাসরি কেউ নম্বর চাই! আগে বন্ধুত্বের প্রপোজ করো, 'তুমি' নামক সম্মোধন এসো, তবেই না নম্বর দেবো! কথা হবে! এখন শাস্তি হিসেবে আরও কিছুদিন ঘুরো...
রাতে ছেলেটার বোকা বোকা চেহারাটা মেয়েটার কল্পনাতে ভাসে...
ছেলেটা কল্পনাতে বলছে, আপনাকে 'তুমি' করে বলা যাবে?
মেয়েটা বলে, না। আমি চাইনা, কেউ আমাকে 'তুমি' করে ডাকুক।
ছেলেটা বোকা হয়ে যায়...
ছেলেটার বোকা বোকা চেহারা দেখে, মেয়েটা কল্পনাতেও হাসে...
একটু আফসোসও করে, ইশ! নম্বরটা দিয়ে দিলে আজ, এখন একটু কথাও বলা যেতো!
এরপরদিন মেয়েটা রিচার্জ করার জন্য দোকানে যায়, কিন্তু ছেলেটাকে আর দেখে না...
ভাবলো হয়তো কোন কাজে গেছে...
তারপরদিনও সেম। এক অজানা ভয় মেয়েটার মনে কাজ করতে লাগলো...
এভাবে বেশকিছুদিন কেটে গেলো...
মেয়েটা আর ছেলেটাকে দেখে না। মেয়েটার চোখ আকাশ পর্যন্ত যায়, কিন্তু ছেলেটার কাছে যেতে পারে না...
একসময় মেয়েটার মনে এক ভালোবাসা হারানোর শূণ্যতা বুকে বেঁধে গেলো, যে অসুখটা থেকে মেয়েটা বের হতে পারেনি...
মেয়েটা রোজ রিচার্জ করতে যায়, ছেলেটাকে যদি একটু দেখতে পায়...
সেই ছেলেটা আসে না...
কী জানি! ছেলেটা কোথায়...
নয়ন বড়ুয়া
আগস্ট, ২০২১