somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে কারণে পড়াশোনা করতে মন চায়না..... :(

০৪ ঠা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

::::::::::::::::::একের পর এক ফাঁস হচ্ছে প্রশ্নপত্র::::::::::::::
একের পর এক ফাঁস হচ্ছে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। নিয়োগ পরীক্ষার প্রায় ৯০ শতাংশেরও বেশি প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। এভাবে কয়েকটি চক্র কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও তারা থেকে যাচ্ছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। এসব কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে বলে মন্তব্য শিক্ষাবিদদের।

শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, বিসিএস থেকে শুরু করে প্রায় প্রতিটি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় শিক্ষার্থীরা নিজেদের পড়াশোনার ওপর আস্থা রাখতে পারেছেন না। সবার আগ্রহের কেন্দ্র থাকে প্রশ্নপত্রের দিকে। যে কোনো নিয়োগ পরীক্ষার ২-৩ দিন আগে থেকেই শিক্ষার্থীরা পড়ার টেবিল ছেড়ে ছুটছেন প্রশ্নপত্রের খোঁজে।

সূত্রের অভিযোগ, ফাঁসের সঙ্গে জড়িতদের ধরার কোনো আগ্রহ নেই প্রশাসনের। এ পর্যন্ত প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত কোনো চক্রের কোনো ধরনের শাস্তি হয়নি। এসব প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন প্রশাসনের উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা। সে কারণেই তাদের ধরার উদ্যোগ নেই বলেও অভিযোগ করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, “প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা কতোটা শিথিল, তাই প্রমাণ করে। এসব কারণে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ছে। প্রশাসনের প্রতিটি পর্যায়ে যোগ্য ব্যক্তিদের বাদ দিয়ে দলীয় লোকদের দায়িত্ব দেওয়ার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।”

যেসব নিয়োগ পরীক্ষা প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ
গত শুক্রবার অনুষ্ঠিত অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও ব্যাংকের চেয়ারম্যানের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে গণমাধ্যমে স্বীকার করার পরও পরীক্ষা বাতিল নিয়ে টালবাহনা করছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই কালক্ষেপণ করছে তারা।

এছাড়া আরও বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, আরও কয়েকটি পরীক্ষার হুবহু প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। তাদের তথ্য মতে, অগ্রণী ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ), এটিও, জনতা ব্যাংক, খাদ্য বিভাগের পরিদর্শক, খাদ্য বিভাগের উপ-পরিদর্শক, বিসিএস লিখিত পরীক্ষাসহ গত দুই বছরে ৯০ শতাংশ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হুবহু ফাঁস হয়েছে।

এর মধ্যে গত বছর ৭ অক্টোবর বিসিএস লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করে পিএসসি। ‍ব্যাপকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ায় এ পরীক্ষা স্থগিত করা হয় বলে জানা যায়। এর আগে গত বছরের জানুয়ারি মাসে খাদ্য বিভাগের একটি নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতে প্রশ্নপত্রের ২টি সেট বাংলানিউজে তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটির সঙ্গে হুবহু মিলে যায় পরের দিনের প্রশ্নের সঙ্গে। ফলে পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য হয় কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষা প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে এমন সংবাদ থাকলেও কর্তৃপক্ষ দুর্নামের ভয়ে পরীক্ষা বাতিল করেন না।

সূত্র জানায়, গত বছরের ২৭ জুলাই জনতা ব্যাংকের ‘এক্সিকিউটিভ অফিসার’ পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সহ ১৬ জনকে আটক করে র‌্যাব। পরবর্তীতে এটি ধামাচাপা দেওয়া হয়। প্রশ্ন ফাঁস হলেও পরীক্ষটি বাতিল করা হয়নি। এর নিয়োগও এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়ে গেছে।

এছাড়া, এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায়ও (এইচএসসি) ব্যাপক হারে প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে বলে জানা গেছে।

যেভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ডিজিটাল জালিয়াতি

অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা প্রশ্ন করেন তারা ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকেন না। তবে সূত্র জানায়, প্রশ্ন কম্পোজ ও ছাপার কাজে জড়িতরা প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত কয়েকটি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে পরীক্ষার ঠিক আগেভাগে। যারা প্রশ্ন বহন করে কেন্দ্রে কেন্দ্র নিয়ে যান তাদের মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে। প্রশ্নকে দ্রুত ফটোকপি করে নিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন কোচিং সেন্টারের অভিজ্ঞ শিক্ষকের কাছে। তারা সেটির দ্রুত সমাধান করে ছড়িয়ে দেন ঢাকা বিভিন্ন স্থানে। এছাড়া মোবাইল ফোনের এসএমএসের মাধ্যমেও উত্তর সরবরাহ করা হয়।

সম্প্রতি অগ্রণী ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার সময় শতভাগ সঠিক উত্তরসহ কয়েকটি মোবাইল ও ডিজিটাল ডিভাইস উদ্ধার করা হয়।

এছাড়া, পরীক্ষার ২০ মিনিট পর কেউ কেউ পরীক্ষার হলে যান। এর আগে তারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নের উত্তর জেনে নেন। এভাবেই তারা অধিকাংশ উত্তর জেনে নেন।

শিক্ষার্থীরা জানান, ঢাকা কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও ইডেন কলেজে পরীক্ষার হলে গিয়ে উত্তর সরবরাহ করা হয়। এসব ক্ষেত্রে ছাত্রলীগের নেতা-নেত্রীরা পরীক্ষার হলের শিক্ষককে আগেই হুমকির মাধ্যমে ‘ম্যানেজ’ করে নেন বলে অভিযোগ করেন সেসব কেন্দ্রে পরীক্ষা দিয়েছেন এমন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

অন্যদিকে, চায়নার তৈরি ঘড়িতে এসএমএসের মাধ্যমে ডিজিটাল জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে।

উদ্বিগ্ন শিক্ষাবিদরা
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, “এসব কারণে পরীক্ষার্থীরা নিজেদের শ্রম ও মেধার ওপর নির্ভর করতে পারছেন না। তারা বুঝতে পেরেছেন, টাকা-পয়সা দিয়ে তারা একটা ব্যবস্থা করতে পারবেন। এটা বর্তমানে এমনই প্রকট হয়েছে যে, এটা কোনো ব্যক্তিগত ব্যাপার নেই, সামস্টিক ব্যাপারে দাঁড়িয়ে গেছে।”

তিনি বলেন, “এর ফলে এমন একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা ভাবছেন- ‘আমি যদি এটা না করি, তাহলে আমি বঞ্চিত হচ্ছি’। সে কারণেই তারা পড়ার টেবিল ছেড়ে প্রশ্নের পেছনেই দৌঁড়া-দৌঁড়ি করছেন।

ফলে তারাও প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত সমাজের বিষাক্ত গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে যাচ্ছেন এবং প্রতারণার মাধ্যমে তারা কাজটি করছেন। ফলে গোটা সংস্কৃতির মধ্যেই বিষটি ছড়িয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই এমিরেটাস অধ্যাপক আরও বলেন, “আমাদেরকে অবশ্যই এসব কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে, শাস্তি দিতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে সমাজ কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, “যে কোনো রাষ্ট্র সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তার আমলাতন্ত্রকে বিকশিত করে। কিন্তু যখন শিক্ষার্থীরা দেখছেন, রেজাল্ট ভালো ও মেধা থাকা সত্ত্বেও তারা কাজটি করতে পারছেন না, তখন তারা প্রশ্ন ফাঁসের মতো বিষয়গুলোর দিকে ঝুঁকছেন। ফলে তাদের মাঝ থেকে প্রতিযোগিতার বোধ হারিয়ে যাচ্ছে।”

তিনি এজন্য সংশ্লিষ্ট মহলকে তিনটি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন। সেগুলো হচ্ছে- বিচার করতে হবে, দায়িত্ব স্বীকার করতে হবে এবং দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে।
সুত্র
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুন, ২০১৩ সকাল ১০:১২
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নারী একা কেন হবে চরিত্রহীন।পুরুষ তুমি কেন নিবি না এই বোজার ঋন।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১২:৫৪



আমাদের সমাজে সারাজীবন ধরে মেয়েদেরকেই কেনও ভালো মেয়ে হিসাবে প্রমান করতে হবে! মেয়ে বোলে কি ? নাকি মেয়েরা এই সমাজে অন্য কোন গ্রহ থেকে ভাড়া এসেছে । সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলিম কি সাহাবায়ে কেরামের (রা.) অনুরূপ মতভেদে লিপ্ত হয়ে পরস্পর যুদ্ধ করবে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৯




সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৫। তোমরা তাদের মত হবে না যারা তাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণ আসার পর বিচ্ছিন্ন হয়েছে ও নিজেদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করেছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

=সকল বিষাদ পিছনে রেখে হাঁটো পথ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৮



©কাজী ফাতেমা ছবি

বিতৃষ্ণায় যদি মন ছেয়ে যায় তোমার কখনো
অথবা রোদ্দুর পুড়া সময়ের আক্রমণে তুমি নাজেহাল
বিষাদ মনে পুষো কখনো অথবা,
বাস্তবতার পেরেশানী মাথায় নিয়ে কখনো পথ চলো,
কিংবা বিরহ ব্যথায় কাতর তুমি, চুপসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগে বিরোধী মতের কাউকে নীতি মালায় নিলে কি সত্যি আনন্দ পাওয়া যায়।

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৮

ব্লগ এমন এক স্থান, যেখানে মতের অমিলের কারণে, চকলেটের কারণে, ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের কারণে অনেক তর্কাতর্কি বিতর্ক কাটা কাটি মারামারি মন্তব্যে প্রতিমন্তব্যে আঘাত এগুলো যেনো নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়। ব্লগটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×