পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডের জট আরও যেন জড়িয়ে যাচ্ছে সরকারের গায়ে। অভিযুক্তদের জন্য ন্যূনতম সাজার সওয়াল করায় যে নতুন বিতর্ক তৈরি হচ্ছিল, তা চাপা দিতে খুব দ্রুত সরকারি আইনজীবীকে সরিয়ে দিয়েও স্বস্তির অবকাশ কোথায় পাওয়া গেল? কারণ অপসারণের কথা জানা মাত্রই ওই আইনজীবী, সর্বাণী রায়, যে ভাবে একের পর এক তোপ দাগলেন সদর দফতরের দিকে, তাতে অলিন্দ কম্পমান যদি না-ও হয়ে থাকে, হতচকিত যে হয়েছেই, তার প্রমাণ দিয়ে স্বভাববিরুদ্ধভাবেই অনেকক্ষণ অন্তত নীরব থেকেছেন সরকারি নেতারা। সর্বাণীর অনেক কথার মধ্যে যে বাণটি নিপুণভাবে তাক করা, সেটা তীক্ষ্ণ— যে ধর্ষণ করেছে, সে ফেরার, ইচ্ছা করলে সরকার তাকে তুলে আনতে পারত। আঘাত হানার সময় শক্তি বাড়িয়ে নিচ্ছে বাণ— ‘‘অনেক খবর আমরাও পেয়েছি।’’
অপসারিত সরকারি আইনজীবী যা বলছেন, তা-ই বেদবাক্য, এমনটা মনে করার কোনও কারণই থাকতে পারে না। কিন্তু, এই সরকারেরর অনেক নেতার পাঞ্জাবি-হাফ পাঞ্জাবির পকেটে ‘অনেক কিছু’ গোপন থাকার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনারও কমতি নেই এ রাজ্যে। তাই এমনিতেই ভ্রূ-কুঞ্চিত সাধারণ মানুষের ভ্রূ-র আরও কুঞ্চনে সরকারি আইনজীবী সাহায্যই করলেন। কী অনেক খবর জানেন তিনি?
ফলে, দিনের শেষে পুনর্মূষিক ভব। নানা বিতর্ক-জল্পনায় অস্বস্তিতে থাকা সরকার, পুষ্পনন্দিত স্বপ্নের হাত ধরে নির্মল ভোরের দিকে যাত্রার পথটাকে তেমনভাবে খুঁজে পেল না। সারদা নয়, চিটফান্ড নয়, পার্ক স্ট্রিট কাণ্ডেও ধর্ষকের প্রসঙ্গেও গোপন কিছু আছে? এই প্রশ্নটার থেকেই আজ মুক্ত হতে চাইছিল সরকার।
হওয়ার দরকারও ছিল আজ।
সূত্র--আনন্দবাজার পত্রিকা
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ দুপুর ১২:৩০