রিমির হাতে এখন কিছু করার নেই। সকালে অফিসে এসে এখন পর্যন্ত পেপার পরেই পার করে দিয়েছে। পুরো ফ্লোরটা একবার ঘুরে আসা যায়।
পুরো ফ্লোর ঠিক না, একজনের ডেস্কের সামনে দিয়ে ঘুরে আসাই উদ্দেশ্য।
এই অফিসে আসার পর এই একজন ছাড়া সবার সাথেই পরিচয় হয়েছে। তার সাথে যতবার ই দেখা হয়েছে ততবার ই ছেলেটা হা করে তাকিয়ে ছিল। রিমি সিওর এই ছেলে তার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। হাবুডুবু খাচ্ছে এটা কোন সমস্যা না। হাবুডুবু খেতে থাকুক। ডুবে না গেলেই হল!
প্রথম দেখা হওয়ার পর হতে মাথায় একটা শব্দই ঘুরছে "ভ্যাবদা"। ভ্যাবদা টাইপ ছেলে। এই শব্দ টা রিমি মাথা হতে তাড়াতে পারছেনা। শব্দটা সে কোথায় শুনেছে তাও মনে করতে পারছে না। ফারুকি মার্কা কোন নাটকে হয়ত শুনে থাকবে। সবচেয়ে আর্শ্চযের ব্যাপার হল রিমি এই শব্দটার মানে কি তা জানে না। এই শব্দটা বাংলায় আদৌ আছে কিনা তাও জানা নেই। অথচ অই ছেলেটাকে দেখলেই মনে হয় ভ্যাবদা টাইপ ছেলে। শুধু ভ্যাবদা না, খানিকটা বেকুবও !
রিমি ঠিক করে রেখেছে এই ছেলে যেদিন কথা বলতে আসবে সেদিন শুরুতেই ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি করে একট হাসি দিবে। এরপর শুধু বসে বসে মজা দেখা। ছেলেটা যা বলতে আসবে তা বলতে পারবেনা। বরং তার মুখ দিয়ে আও বাও ম্যাও টাইপের কিছু কথা বেরিয়ে আসবে। বেচারা! এই সিচুয়েশন টা তার বেশ পরিচিত। কলেজ, ভার্সিটি তে বহু বার সে এটা করেছে।
আগে ছেলেটার ডেস্ক ছিল মাঝমাঝি জায়গায়। তখন সামনে দিয়ে হেটে গেলেই তাকে দেখা যেত। এখন বসে কোনার দিকের ডেস্কে। ছেলেটাকে না জানিয়ে তার ডেস্ক এর আসে পাসে যাওয়ার কোন উপায় নেই।
ডেস্কটা ফাঁকা। মনে হয় আসেনি আজ।
সকালে ঘুম হতে উঠেই মেজাজ খারাপ হল। ১০টা বাজে। এখন অফিস যাওয়ার কোন মানে হয়না। আবার ঘুমিয়ে পড়াই ভাল।
দুপুরের পর অফিসে ঢুকতেই হাউকাউ চোখে পড়ল। যিনি হাউকাউ করছেন তিনি সবকিছুতেই হাউকাউ করেন। এ জন্য কেউ কেউ তাকে আড়ালে কাউয়া ডাকে!
ঘটনা ভয়াবহ। অফিস হতে একজনকে তুর্কি পাঠানো হয়েছিল। সে গতকাল রাতে মারা যায়। এসব নিয়ে কথা হচ্ছে। রিমি এসব আলোচনা হতে দূরে থাকে। সাধারনত কেউ হসপিটালে থাকলেই সে যেতে চায় না। হসপিটালে ঢুকলেই কেমন যেন অসুস্হ বোধ করতে থাকে।
বিকেলের দিকে ছেলেটার ডেস্ক এর কাছে গেল। খালি। আজো আসেনি। একজন ক্লিনার ডেস্ক পরিস্কার করছিল। ডেস্ক এর এক কোনায় কিছু কাগজ পড়েছিল। পেন্সিল স্কেচ । উলটে পালটে দেখল।একটা ঘুড়ি আর আকাশের ছবি। পরেরটায় সমুদ্র আর পাখির স্কেচ। পরের টাতে এসে থেমে গেল। তার পোট্রেট!! অফিসের ডিরেক্টরী হতে তার ছবি দেখে একেছে নিশ্চয়ই। তার পর আরো কয়েকটা, সবই তার ছবি!
স্যার খুব ভাল আচিলো।ক্লিনারের কথা শুনে রিমি যেন একটা ধাক্কা খেল। তার চিন্তায় কখনই এটা আসেনি। ছেলেটার নামটাই তো সে জানেনা!
স্কেচ গুলো হাতে নিয়ে নিজের ডেস্ক এ ফিরলো। কেমন যেন অসুস্হ বোধ করছে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




