বিশ্বের সবচেয়ে বিপদজনক অস্ত্র কোনটি ? এই প্রশ্নটা আপনাদেরকে করলে কেউ হয়তো বলবেন এটোমিক বোমা, কেউ অত্যাধুনিক লেজার অস্ত্র যা অনেক দূর থেকেই লক্ষবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম ইত্যাদি ইত্যাদি।


কিন্তু আমি আপনাদের এমন একটি অস্ত্রের কথা বলবো যা মূলতো কোনো মানুষেরই তৈরি নয়।কিন্তু মানব সৃষ্টির সাথে সাথেই এটাও সৃষ্টি হয়েছিলো আর তা হলো জিহবা(tongue)।
জী হ্যা, জিহবাই হলো পৃথিবীর ভয়ংকরতম অস্ত্রটি। কীভাবে? একটু ভালো করে ভাবলেই বুঝবেন ব্যাপারটা।
ধরেন যদি হিটলারের জিহবা না থাকতো তবে সে আর কথা বলতে পারতোনা।আর সে কথা না বলতে পারলে পৃথিবী বেঁচে যেতো এক ভয়াবহ যোদ্ধ হতে।
হিটলারের এই ১টি মাত্র জিহবার কারনে সারা দুনিয়া তছনছ হয়েছিলো তখন। ঠিক তেমনি ভাবে এই যোগেও বুশ, তালেবান, সাদ্দাম কিংবা লাদেনের জিহবার পাল্টা পাল্টি কথার আঘাতে জ্বলে পুড়ে গেছে কয়েকটি দেশ।মারা গেছে শত শত নারি, শিশু সহ হাজারো মানুষ।
আমাদের দেশের কথায় ধরেন, সকাল বেলা ঘুম ভেঙে যদি শোনতে পেতাম আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতাদের জিহবা গায়েব! তবে কি বাঁচাটাইনা বাঁচতাম। বেঁচে যেতাম তাদের লাগামহীন বেফাস কথা বার্তা আর হরতাল, গুন্ডামি থেকে।
ব্যাক্তিগত জীবনেও যে আমরা জিহবার সুলভ ব্যাবহার করিনা তা একটি ঘটনা শোনলেই বোঝতে পারবো।*একটি মহিলা তার গলার ভোকাল কর্ডের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেলো।ডাক্তার তাকে পরিক্ষা নিরিক্ষা করে ৬ মাস কারো সাথে কথা না বলার পরামর্শ দিলেন।কিন্তু মহিলা ৬মাস স্বামী আর ৬ সন্তানের সাথে এতোদিন কথা না বলে থাকাটা অসম্ভব ভেবেও শেষে ডাক্তারের কথা শোনলেন।আর এই ৬ মাস তিনি প্রয়োজনীয় কথা গুলো কাগজে লিখে সবাইকে দেখাতেন।৬মাস পর গলা ঠিক হয়ে গেলে ডাক্তার তাকে জিগ্ঘেস করলেন শুধু মাত্র লিখে মত প্রকাশে অভিঙ্গতাটা কেমন ছিল।মহিলা বল্লেন যে আপনি শোনে অবাক হবেন যে কতোগুলো কাগজ লিখে ধুমরে মুচরে ছিড়ে ফেলেছি কারো কারো হাতে দেবার আগে কারন সেখানে অনেক কথা ছিলো যা রাগের বশে আমি লিখেছিলাম ঠিকি কিন্তু কেউ শোনলে কস্ট পাবে পরে পড়ে আমি তা বুঝেছিলাম*।অথচ কথা বলতে পারলে ঠাস করে সে কথাগোলো তখনই বলে দিতো।তার এই বোধটা আর আসতোনা।
ঠিক তেমনি একটি বিপ্লবী জিহবার আঘাতেও মুক্তি পেতে পারে একটি জাতি একটি দেশ।সালাম বরকত রফিকের জিহবাও মুক্তি দিয়েছিলো একটি ভাষাকে।
এখন ভাবেন, সত্যিকার অর্থে বিশ্বের সবচেয়ে বিপদ জনক অস্ত্রটি জিহবা নয় কী??
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১২ রাত ৩:২৩