কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আবারও দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কোনোদিনই স্বাধীনতার ঘোষক নন—জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ঘোষণা শুনে আমি নিজেও উত্সাহিত হয়েছি। গোটা জাতি উত্সাহিত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজ দেশের যে অবস্থা চলছে তা চলতে থাকলে এই দেশে বসবাস করা যাবে না। কারণ, নিয়ম-শৃঙ্খলাহীনভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।
গতকাল রাজধানীর ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি আয়োজিত ‘১৯ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র দিবস’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (বীর প্রতীক)। অন্যদের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব। সভাপতিত্ব করেন কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবদুল মালেক চৌধুরী।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষক নন—তিনি স্বাধীনতার জনক, এ দেশের প্রাণ। স্বাধীনতার ঘোষক বললে তাকে ছোট করা হয়। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাঁর ঘোষণা শুনে আমি নিজেও উত্সাহিত হয়েছি। গোটা জাতি উত্সাহিত হয়েছে। এটা অস্বীকার করা যেমন অন্যায়, তেমনি বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করাও অন্যায়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার আন্দোলনে পৃথিবীর অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে এ দেশের জনগণের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। কিন্তু পৃথিবীর অন্যসব দেশের তুলনায় এ দেশের মানুষের ভূমিকাকে খাটো করা হয়েছে। তিনি বলেন, আজ হয়তো অনেকে স্বাধীনতার প্রথম পতাকা উত্তোলক হিসেবে আ স ম আবদুর রবকে স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু আজ থেকে শত বছর পর এই আ স ম আবদুর রবের নাম এদেশে পতাকার মতোই পত্পত্ করে উড়বে।
তিনি বলেন, আজ জাতির জন্য সবচেয়ে বেশি দুর্দিন। আমাদের ভবিষত্ অন্ধকার। আমাদের নেতারা তা বুঝতে পারছেন না। আজ লিবিয়ায় যে ঝড় চলছে দুদিন পর তা সৌদি আরবে পড়বে। এরই ধারাবাহিকতায় একদিন বাংলাদেশেও পড়বে। এটাকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা নিয়ে এ দেশের নেতা-নেত্রীরা ভাবছেন না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, খোন্দকার দেলোয়ারের মৃতদেহে অনেক আওয়ামী লীগ নেতারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। অথচ দু’দিন আগে তারাই তাকে অত্যন্ত জঘন্য ভাষায় গালি দিয়েছেন। তাই কাউকে গালি দেয়ার আগে বিচার-বিবেচনা করা উচিত। তিনি বলেন, এক সময় শিল্পপতিরা রাজনীতিবিদদের সঙ্গে দেখা করার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকতেন। আর এখন রাজনীতিবিদরা শিল্পপতিদের ঘরে পিয়নের মতো বসে থাকেন। আজ সবকিছু উল্টো রথে চলছে। এই উল্টো রথ থেকে দেশকে আজ সোজা পথে আনতে হবে।
অনুষ্ঠানে আ স ম আবদুর রব বলেন, ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালানোর জন্য আমরা এই সরকারকে ভোট দেইনি। মায়ের সামনে আজ মেয়ে ধর্ষিত হচ্ছে, বাপের সামনে ছেলে খুন হচ্ছে, অনাহারে-অর্ধাহারে মানুষের দিন কাটছে। আর সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এদেশের মানুষ নাকি চার বেলা খাচ্ছে। আমরা একটা মগের মুল্লুকের মধ্যে আছি। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছি তারা না মরলে এই দেশে শান্তি আসবে না। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ হয়েছেন এই হিসাব আমি মেলাতে পারি না। কারণ, আমার গ্রামে তো দূরের কথা ইউনিয়নেও একজন লোক মরেনি। প্রতিটি গ্রামে যদি একজন করে লোক মরত। তারা যদি রক্ত দেখত তাহলে এদেশে বিগত ৪০ বছরে এত অনাচার হতো না।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম (বীর প্রতীক) বলেন, ২ মার্চ স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন, ৩ মার্চ স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণার ধারাবাহিকতায় ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। এটা আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছিল না। যে বিষয়টি সবাই যে যার মতো বুঝে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ২৬ মার্চকে যদি আমরা স্বাধীনতা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি না দিতাম তাহলে ৭ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের স্বীকৃতি পেত।
সূত্র:: আমার দেশ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




