somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাতে আমার কিছুই যায় আসে না

০২ রা নভেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি দেশদ্রোহী।নাম শুনে হয়তো....না হয়তো না, নাম শুনেই বুঝতে পারার কথা। আমি আপনাদের মতোই একজ়ন। আমার সত্যিকার অর্থে কোন নাম নেই।তবে আমি আপনাদের মাঝে আমি আছি অনেকদিন যাবৎ। কেউ আমাকে ডাকে মীরজ়াফর, কেউ ডাকে রাজ়াকার আবার কেউ কেউ ঘুষখোড়ও বলে থাকেন। আমি আশাকরি সময়ের সাথে সাথে আমি আমার আরো যে নামগুলো আছে সেগুলোর সাথে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব।
এবার আমার কৃ্তীত্বের কিছু কথা আপনাদের বলি। ধরে নিন এই কৃ্তীত্বের দাবীদার হিসেবে আমার নাম আফতাব আহমেদ।বাংলাদেশের সবচেয়ে নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারী কর্মচারী। আমার চাকরী নিয়ে আমি খুব খুশী।সরকারের দেয়া নানা সু্যোগ সুবিধার পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত হওয়ায় সরকারের কাছে নামমাত্র যে জ়বাবদিহিতার মুখোমুখি হতে হয় সেটা আমার কাছে নস্যি মাত্র।আর যদি কোন বড় রকমের সমস্যার মুখোমুখি হই সেক্ষেত্রে আমার কাজ়ে আসে আমার জ়মানো ঘুষের টাকা অথবা ব্রহ্মাশ্ত্র(রাজ়নৈতিক ক্ষমতা)।আজ়কের অভিজ্ঞতার কথা বলি।সরকারের ডিজ়িটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যকে সফল করতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে(একচেটিয়া খেয়ে যাচ্ছি তো তাই মাঝে মাঝে বাপ দাদার সম্পত্তি বলে মনে হয়)ভর্তি পরীক্ষার জ়ন্য ডিজ়িটাল পদ্ধতিতে অনলাইন রেজ়িস্ট্রেশন চালু করা হয়েছে।ভেবেছিলাম পুরনো পদ্ধতি বাদ দিয়ে নুতন অনলাইন পদ্ধতি,আমার পেটে বুঝি এবার লাথি পড়ল।কিন্তু কুকুরের লেজ কি কখনো সোজা হয়?আমি ঠিকি আমার রাস্তা খুজে নিয়েছি।অনলাইন পদ্ধতিই হোক আর যে পদ্ধতি হোক,আমি বাবা বেলাইনে টাকা খাবই।দুপুরের দিকে এক ছেলে এল।প্রথম দেখাতেই বুঝে নিলাম গ্রামের ছেলে, শহরের মার প্যাচ অতো বোঝেনা।ছেলেটা বেশ কাচুমাচু করেই কিছু কথা বলল যার সারমর্ম হল, এক দূর সম্পর্কের আত্বীয়ে বাড়িতে উঠেছে।গতরাতে তার ব্যাগ ছিনতাই হয়।তার মোবাইল ফোন,ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্রসহ কিছু টাকা পয়সাও খোয়া গেছে।আর তাই অবশেষে আমার শরনাপণ্য।আমি বললাম,'আপনার হারিয়ে যাওয়া প্রবেশপত্র পেতে হলে এস.এস.সি ,এইচ.এস.সি পরীক্ষার রেজ়িস্ট্রেশন কার্ডের ফটোকপি,৫ কপি পাসপোর্ট সাইজের এবং জরিমানাসরূপ ৪০০ টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে'।ছেলেটা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ফেলে আসায় আমাকে অগ্রীম ৪০০ টাকা দিয়ে চলে যায়। ছেলেটা কি আর জানতো যে সে কি ভুলটাই না করল।কথায় আছেনা 'শিয়ালের কাছে মুরগি বাগি'।প্রায় আধাঘন্টা পর ছেলেটা আবার অফিসে আসল।দেখেই বোঝা যাচ্ছিল অনেক কষ্ট করে এসেছে।সব কিছু ঠিকঠাক করে জমা দেয়ার পর যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি বললাম ' ভাই আপনার জরিমানার টাকাটা....'।বুঝতেই পারছেন ছেলেটা আকাশ থেকে পড়ল।সে আমাকে নানা ভাবে বোঝাবার চেষ্টা করল যে সে আমাকে জরিমানার টাকাটা দিয়ে গেছে।সে এভাবেও বলল যে আমি হয়তো কাজের চাপে ভুলে গেছি।আমি তাকে ধমক দিয়ে বললাম,'তুমি কি আমাকে মিথ্যেবাদী বলছো?'।ছেলেটা প্রায় কাদোকাদো হয়ে গিয়েছিল।একবার মনে করলাম থাক ছেড়ে দেই গ্রামের ছেলে হয়তো টাকা পয়সা নেই।পরে ভাবলাম ছাড়ব কেন? শুয়োরের বাচ্চা, মোবাইল নিয়ে ঘুড়ে বেড়ায় আর আমার বেলাতেই সব টাকা শেষ?ছেলেটা অনেক অনুনয়-বিন্য় করেও যখন কোন কূল কিনারা করতে পারল না।তখন বাধ্য হয়েই আরো ৪০০ টাকা দিল।আমি বললাম,'আগামীকাল এসে প্রবেশপত্র নিয়ে যাবেন'।ছেলেটা আস্তে মাথা নেড়ে চলে গেল।কি যেন ভাবছিল ছেলেটা?হয়তো ভাবছিল, এত বড় একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর তার এই হাল!!!!!!! অথবা ভাবছিল, পরীক্ষা শেষে সে গ্রামে যাবে কিভাবে?বাবার দেয়া যে টাকা সে এনেছিল তার কিছুটা গতরাতে ছিনতাই হল,আর বাকিটা আজ স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষিত ছিনতাইকারি খুব ধুর্ততার সাথে ছিনতাই করল!!!!!!তবে সে যাই ভাবুক আমার তাতে কিছুই আসে যায় না।আমি শুধু বুঝি নিজের লাভ।নিজের লাভের জন্য আমি আমার দেশ বিক্রি করে দিতে পারি,পারি গ্রামের ছেলেটির কাছে সবার এত গর্বের,এত প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ছোট করে দিতে।আমি সব পারি আর এজন্যই আমি দেশদ্রোহী।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×