আমি এই ব্লগ এর একজন নতুন ব্লগার।অনেকদিন দিন ধরে অতিথি হিসেবে সামু'র অনেক লেখা পড়তাম।অনেক ব্যাপারে সবার সরব মন্তব্য,প্রতিবাদ,আলোচনা-সমালোচনা ভাল লাগতো।দেখতাম কেউ কেউ আমার নিজের মনের কথাটাই ব্যক্ত করেছেন।
সম্প্রতি সীমান্তে বি.এস.এফ. এর অমানবিক অত্যাচারের বিরুদ্ধে যখন সবাই (বিশেষত: তরুণ সম্প্রদায়) প্রতিবাদ শুরু করলো, হ্যাকিং এর মত অপরাধ ও অনৈতিক কাজ কে সমর্থন দিলো, তখন দেশপ্রেম এবং দায়িত্ববোধ থেকে আমার নিজেরও ব্লগে এ নিয়ে লেখার ইচ্ছে হলো। তাই নিজের একটা ব্লগ রেজিস্ট্রেশন করলাম।কিন্তু safe না হওয়া পর্যন্ত তো লেখা প্রকাশ হবেনা,তাই আগ্রহ হারিয়ে ফেললাম।প্রায় সাড়ে তিন মাস পর Safe হলাম। ততদিনে বি,এস,এফ বিরোধী লেখা(প্রতিবাদ) কমে গেছে। হ্যাকার-রাও আপাতত স্তিমিত হয়ে গেছেন।
গতকাল বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট ম্যাচে আমার কিছু প্রতিবাদী ভাই “STOP BSF BRUTALITY” প্ল্যাকার্ড নিয়ে গিয়েছিলেন। এরপরের ঘটনা এর মধ্যে সবাই জানেন। এরকম ন্যাক্কারজনক দালালীর প্রতিবাদ করতে আবার আমার লিখতে ইচ্ছে হলো।
অহিংস প্রতিবাদের জন্য প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেডিয়ামে গেলে তাতে বাধা দেয় যে বেঈমান সে কোন দালাল?
ছাত্র নামের কোন এক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সেই জাতির কলঙ্কের প্রতি ঘৃণা জানাতে আমার এই লিখা।
ঢা.বি.'র ছাত্র থাকা অবস্থায় ফখরুদ্দিন সাহেব এর আমলে কেন্দ্রিয় খেলার মাঠে সেনা বাহিনীর অপদার্থ এক কর্মকর্তা কর্তৃক ছাত্র মারধর এর খবর পাওয়া মাত্রই আমরা সব হলের ছাত্ররা বেরিয়ে পড়েছিলাম।পুলিশ আমাদের কে হলের ভিতরে ঢুকিয়ে হলের কক্ষের ভিতরেও কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছিল।আমাদের অস্ত্র ছিলো ইটের টুকরা।হলের ক্যান্টিন বয় গুলো আমাদের কে একের পর এক ইটের টুকরার যোগান দিয়েছে। সারা রাত মল চত্বরে আগুন জালিয়ে পাহারা দিয়েছি পুলিশ যেন ভিতরে প্রবেশ করতে না পারে।
এ খবর পাবার পর রাতেই অন্য সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র-ছাত্রীরা আমাদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছিলো।এর পরের ঘটনা সবার-ই জানা। যেদিন কারফিউ জারী করা হলো সেদিন নীলক্ষেত, নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোডের ব্যবসায়ী, টোকাই সহ সারাদেশের সরকারি-বেসরকারী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলো।যখন অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে আপামর জন সাধারণ একাত্মতা ঘোষণা করে তখন সেই দালালদের মুখে থু থু ফেলতে ইচ্ছে করে যারা নিজের দেশের দেশপ্রেমিক মানুষ কে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে দেয়না, যারা ২ দিনের ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে।
ক্রিকেট-প্রেমীদের অনুরোধ ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে কেউ এই দুই দেশের পতাকা নিয়ে যাবেন না। আমরা স্টেডিয়ামে কোন ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানি দালাল দেখতে চাইনা। ওয়াসিম-ওয়াকার যখন বল করতো তখন আমিও মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। টেন্ডুলকার যখন রানের ফোয়ারা ছড়ায় আজও আশ্চর্য হয়ে দেখি। তাই বলে ভারত-পাকিস্তানের পতাকা হাতে নেয়া, কিংবা আমার দেশের সাথে তাদের হার-জিতে মন খারাপ করার মত দালাল সমর্থক আমি নই।সবার উপরে আমার দেশ। তাই যারা মিরপুরে খেলা দেখতে যাচ্ছেন তারা আমার দেশের পতাকা আর বি.এস.এফ.এর অত্যাচার এর প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড নিয়ে যান। সবার হাতে দেশের পতাকা আর প্ল্যাকার্ড থাকলে দালালরা কয়জন কে আটকাবে?!