somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গ্রাফিক্স কার্ড

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ডেস্কটপ শিল্পে গেমিং ও গ্রাফিক্সের কাজে উঁচুমানের গ্রাফিক্স কার্ডের প্রয়োজন হয়। গ্রাফিক্স কার্ডকে ভিডিও কার্ড, ডিসপ্লে অ্যাডাপ্টার, গ্রাফিক্স এক্সেলারেটর কার্ড বলা হয়। এটি একটি বিশেষ সার্কিট বোর্ড, যা মনিটরে কী দেখানো হবে তা নিয়ন্ত্রণ করে। কিছু গ্রাফিক্স কার্ডে বিশেষ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন- ভিডিও ধারণ, টিভি টিউনার অ্যাডাপ্টার, এমপিইজি-২ এবং এমপিইজি-৪ ডিকোডিং, টিভি আউটপুট, একাধিক মনিটর সংযোজন ইত্যাদি। শুধু গেমিংয়ের জন্য নয় বরং গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেটরদের জন্যও এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

আগে অনেক গ্রাফিক্স কার্ডই কিছু বিচ্ছিন্ন ডিভাইস আকারে পাওয়া যেত যা আইএসএ, পিসিআই অথবা এজিপি বাসের মাধ্যমে মাদারবোর্ডে সংযোজিত হতো। তবে বর্তমানে আবিষ্কৃত পিসিআই এক্সপ্রেস ভবিষ্যতেও প্রচলিত থাকবে বলে ধারণা করা যায়।

বর্তমানে গ্রাফিক্স কার্ডের বিষয়টি আর ‘কার্ড’-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, যেখানে এটি এখন মাদারবোর্ডের একটি সংযোজিত অংশ বা চিপ যা একই কাজ করে। তবে এনভিডিয়া আরো ভালো পারফরমেন্স আশা করে অতিরিক্ত গ্রাফিক্স কার্ড সিস্টেমে সংযোজন করে।

এনভিডিয়া

গ্রাফিক্সে বিশেষ কিছু ইফেক্ট দেয়ার জন্য এনভিডিয়াকে প্রাধান্য দেয়া হয়। শুধু ডিজিটাল আনন্দের পরিপূর্ণ সমাধানই নয় বরং এনভিডিয়া উঁচুমানের গেমিংয়ের জন্যও বিখ্যাত। উন্নতমানের গ্রাফিক্স ফিচারের মাধ্যমে এনভিডিয়া পরবর্তী প্রজন্মের গেমগুলোকে করেছে আরো প্রাণবন্তু এবং স্বাচ্ছন্দ্যময়। এর ‘কোর্সওয়্যার আনডিফাইন্ড ড্রাইভার আর্কিটেকচার’ (UDA), যা একটি একক ড্রাইভার আর্কিটেকচার। এটি সব রকম এনভিডিয়া প্রোডাক্টের জন্য ব্যবহার হয়। ফলে নোটবুক কিংবা পিসিতে গেমিং হয় চিন্তামুক্ত এবং আনন্দদায়ক। তাছাড়া আধুনিক গ্রাফিক্স ডিজাইন এবং ত্রিমাত্রিক অ্যানিমেশনের ক্ষেত্রের এনভিডিয়ার গ্রহণযোগ্যতা আছে।

জিফোর্স

জিফোর্স গ্রাফিক্স প্রসেসর ইউনিট (GPUs)-এর একটি ব্র্যান্ড যা এনভিডিয়া ডিজাইন করে থাকে। ২০০৮ পর্যন্ত এর ১০টি ডিজাইন পুনরাবৃত্তি হয়েছে। প্রথম ডিজাইন করা জিপিইউ ধারাবাহিক ছিল না এবং এটি উচ্চমূল্যবিশিষ্ট গেমিং বাণিজ্যের জন্য প্রস্ত্তত করা হয়। পরে এরই ধারাবাহিকতা রক্ষার মাধ্যমে অন্যান্য জিপিইউর মূল্য সংবেদনশীলতাকে রক্ষা করা হয়। বর্তমানে এনভিডিয়া ধারাবাহিক বা একই সিরিজভুক্ত জিফোর্স পণ্য প্রস্ত্তত করার মাধ্যমে একে প্রসারিত করেছে। জিফোর্স সিরিজের অনেক ভার্সন সফলতার সাথে ভোক্তাদের চাহিদা মিটিয়ে সম্প্রতি এক্স সিরিজের দুটি চিপ অবমুক্ত করেছে। এগুলো সূচনা করেছে গ্রাফিক্স শিল্পে নতুন যুগের। এগুলোর বিবরণ দেয়া হলো :

জিফোর্স ১০০ সিরিজ

মার্চ ২০০৯-এ এনভিডিয়া নতুন সিরিজ রিলিজ করেছে যা জিফোর্স ১০০ সিরিজ এবং পূর্ব জিফোর্স-৯-এর উন্নত সংস্করণ। জিফোর্সের তথ্য অনুসারে জিফোর্স ১০০ সিরিজগুলো খুচরা বিক্রয়ের জন্য সরবরাহ হচ্ছে না। ১০০ সিরিজগুলো হলো- জিফোর্স জিটিএস ১৫০, জিফোর্স জিটি ১৩০, জিফোর্স জিটি ১২০, জিফোর্স জি ১০০।

জিফোর্স ২০০ সিরিজ

জিফোর্স সিরিজের পরবর্তী জেনারেশনের নামকরণ একটি নতুন দিকে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬ জুন ২০০৯ সালে উপস্থাপিত ২০০ সিরিজগুলোর মধ্যে জিটি২০০ গ্রাফিক্স প্রসেসর ১.৪ বিলিয়ন ট্রান্সিটরসম্পন্ন। জিফোর্স ২০০ সিরিজগুলো হলো- জিফোর্স জিটি ২২০ এবং জিফোর্স জি ২১০।

জিফোর্স এক্স সিরিজ

গ্রাফিক্স জগতের সর্বশেষ বিস্ময় জিফোর্সের এক্স সিরিজ। গেমিং এবং গ্রাফিক্স জগতে উন্মাদনা সৃষ্টিকারী এ সিরিজ যাত্রা শুরু করে জিফোর্স-৯ সিরিজের রিলিজের মাত্র দুই মাসের মধ্যেই। জিটি এক্স সিরিজের কোর ডিজাইন একেবারেই ভিন্ন এবং এটি এনভিডিয়ার দ্বিতীয় প্রজন্মের ডিরেক্ট এক্সকে উপস্থাপন করছে এবং ভিন্ন জাতীয় কমপিউটিংয়ের জগতে একটি নতুন মাত্রা উন্মোচন করবে।

এক্স সিরিজে দ্রুততম এবং উচ্চক্ষমতাসম্পস্ন গ্রাফিক্স প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে। এক্স সিরিজের জিপিইউ দিয়ে অ্যাডোবি সিএস৪ সফটওয়্যারের সব রকমের কাজ দ্রুতভাবে করা সম্ভব হবে এবং এটি বিশ্ব মানসম্পন্ন এইচডি (হাই ডেফিনেশন) গ্রাফিক্স পারফরমেন্স এবং গেমিং ইফেক্ট, ইমেজ প্রসেসিং ও এনভিডিয়া থ্রিডি ভার্সন সাপোর্ট করবে।

জিফোর্স এক্স সিরিজগুলো হলো- জিফোর্স জিটিএস ২৫০, জিফোর্স জিটিএক্স ২৬০, জিফোর্স জিটিএক্স ২৭৫, জিফোর্স জিটিএক্স ২৮০, জিফোর্স জিটিএক্স ২৮৫ ম্যাকের জন্য, জিফোর্স ২৮৫, জিফোর্স জিটিএক্স ২৯৫। জিফোর্স জিটিএক্স ২৬০-এর জিপিইউর ১৯২ প্রসেসিং কোর ‘এজ অব কোনান : হাইবোরিয়ান অ্যাডভেঞ্চারস অ্যান্ড বাইওনিক কমান্ডো’র মতো গেমের ক্ষেত্রে বাস্তব অনুভূতি দেবে। এছাড়াও এটি দিয়ে আধুনিক ব্লু-রে মুভি এবং থ্রিডি ওয়েবসার্ফিংও সম্ভব।

জিফোর্স জিটিএক্স ২৭৫-এর ক্ষেত্রে ‘ওয়ারহ্যামার ৪০,০০০ : ডন অব ওয়ার-২’ এবং ‘ফার ক্রাই২’-এর মতো গেমে পূর্ণ গ্রাফিক্স পারফরমেন্স পাওয়া যাবে। ভিডিও ট্রান্সকোডিং এবং ভিডিও/ফটো এডিটিংয়েও অসাধারণ পারফরমেন্স পাওয়া যাবে।

জিফোর্স জিটিএক্স ২৮০-এর ১ গিগাবাইট ক্ষমতাসম্পন্ন মেমরি এবং ২৪০ প্রসেসিং কোর ‘এজ অব কোনান : হাইবোরিয়ান অ্যাডভেঞ্চারস অ্যান্ড বাইওনিক কমান্ডো’ এবং ‘ডুম ফি’্র গেমে ত্রিমাত্রিক অনুভূতি দেবে। জিফোর্স জিটিএক্স ২৮৫ যা ম্যাক প্রো ওএস অ্যাপ্লিকেশনের জন্য বানানো হয়েছে। এর বুট ক্যাম্প অ্যাপ্লিকেশন দিয়ে থ্রিডি গেম আনলক করা সম্ভব। এর ইউনিফায়েড শেডার কোর এবং ব্যাপক মেমরি ব্যান্ডউইডথ মোশন গ্রাফিক্স, থ্রিডি মডেলিং এবং অ্যানিমেশনের মতো গ্রাফিক্স ইনটেনসিভ অ্যাপ্লিকেশনে সর্বোচ্চ পারফরমেন্স দেবে।

জিফোর্স জিটিএক্স ২৮৫ দিয়ে ডিরেক্ট এক্স-১০ গেমিং সিনেমা উপভোগ করা যায়। ‘ফার ক্রাই ২’, ‘মিরর’স এজ’, ‘কল অব ডিউটি-৫ : ওয়ার্ল্ড অ্যাট ওয়ার’-এর মতো গেমে অসাধারণ পারফরমেন্স পাওয়া যাবে। এর কুডা (CUDA) প্রযুক্তিসম্পন্ন গ্রাফিক্স কার্ড দিয়ে সাইএক্স গেমিং ইফেক্ট, স্টেরিওস্কোপিক থ্রিডি এবং ইমেজ প্রসেসিং সম্ভব।

জিফোর্স জিটিএক্স ২৯৫-এ পূর্বে উল্লিখিত সব গেমের পূর্ণ আনন্দ পাওয়া যাবে। দুটি জিফোর্স জিটিএক্স ২৯৫-এর সংযোজন কোয়াড এনভিডিয়া এসএলআই কনফিগারেশন গেমিংকে এক অন্য ধাপে নিয়ে যাবে।

মাল্টিপল জিপিইউ এখানে মাল্টিপল মনিটরের সুবিধা প্রদান করবে এবং ডুয়াল স্ক্রিন থ্রিডি অনুভূতি পাওয়া যাবে। ফলে একটি মনিটরে ফুলস্ক্রিন মাল্টিজিপিইউ গেমিং এবং অপর মনিটরে আইএম এবং ই-মেইলের ট্যাব রাখা সম্ভব। ফলে ইউজার ভার্চুয়াল এবং বাস্তব জগৎ- দুটির পূর্ণ আনন্দ উপভোগ করতে পারবে।

এ কথা সত্য, গ্রাফিক্স প্রসেসর এখন সিস্টেমের মূল প্রসেসরের চেয়ে একধাপ এগিয়ে উন্নততর হচ্ছে প্রতিনিয়ত। গেমিং ও গ্রাফিক্স শিল্পে উন্নত গ্রাফিক্সের চাহিদাই প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন জিপিইউ উৎপাদনে নির্মাতাদের উৎসাহিত করছে। তারই কিছু নমুনা আমরা অচিরেই দেখতে পাব।
৫টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×