somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হ-য-ব-র-ল

২০ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কথায় আছে “গোপনে গো-মাংস খায় কহিলে পড়ে জাত জায়”
খাওয়া-খাদ্য এসব যার-যার ব্যাক্তিগত রুচি-অভিরুচির ব্যাপার। নিজের রুচিতে খাওন আর পরের রুচিতে পিন্দন! এইরমটাই জানি।
হাতে গোনা গুটি কয়েকজন হিন্দু নামধারী হয়তো লুকাইয়া গরুর মাংস খায় না যে এমনটা অস্বীকার করমুনা।এজন্য অনেক মুসলমানরাই ঐ গুটিকয়েক হিন্দু নামধারীদের উপমা দিয়ে অনেক হিন্দুকেও ফুসলায়, একরকমের বিব্রতকর প্রস্তাব দেয়। তারা কয় তোমরা হিন্দুরা তো খাও-ই! তাদের কথায় এমনটা মনেহয় যেন ঐ গুটিকয়েক গো-মাংস খাওয়া হিন্দুরা গোটা হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে! কিন্তু হেরা নিজেরা মুখে ‘কচ্ছপ/কাছিম’ শব্দটাও উচ্চারণ করে না। বলে এইটা ‘মখরুহ’। কাছিম শব্দ মুখে উচ্চারণ করলে মুখ ৪০ দিনের লাইগ্যা নাপাক হইয়া যাইবো!

তাদের অনেকের মধ্যে আবার কোন হিন্দুরে ছলনা কইরা গরুর মাংস খাওয়ানোর একটা কুৎসিত প্রবণতাও আমি লক্ষ করেছি যার ফলে কোন মুসলমান যদি আল্লাহ-খোদার কসম কাইট্টাও বলে- খাও এটা মুরগীর মাংস, সেইকথা বিশ্বাস করনের আর সুযোগ থাকে না। এ বিষয়ে নিজেরে ছাড়া অন্য কাউরে বিশ্বাস করবার মানসিকতা আর থাকে না। এতে কেউ বিরক্ত হোউক আর যা-ই হোউক।

আমার অফিসের বসও সেদিন মাংস আর চিংড়ি মাছ দিয়ে দিয়ে রান্না করা নুডলস খাওয়ার রিকুয়েস্ট করছিলো আর আমি আপত্তি করছিলাম, বলছিলাম বস আমার এলার্জি। সত্যিই আমার চরম এলার্জি। এমনকি চিংড়ি মাছ, পুঁটি মাছ, বেগুন এসবও খাইতে পারি না। কথার এক পর্যায়ে বস বলছিলো - তুমি এখন আমাদের এ মাল্টিন্যাশনালে কাজ করতেছো, প্রফেশনাল/গ্লোবাল স্টাডি করতেছো। তুমি কি আজীবন বাংলাদেশে পইড়া থাকবা? মনে করো, তোমারে এখন কম্প্যানী এমন একটা দেশে নিয়ে গেল যেইখানে খাবারের জন্য বাংলাদেশের মতো মাছ-ভাত পাবা না, পাবা কুকুর, শুয়র, গরু এসব পশুর মাংস! তখন তুমি কি করবা? –বস, সেটা পরিস্থিতিই বইলে দেবে।এ-কথা বলে মুখে একটা হাসি দিয়ে বসেছিলাম।

আমার আপন(সাবেক)রুম প্রতিবেশী বিজ্ঞ উকিল সাহেব, দেশের বাড়ী মাইজদি, এক সন্তানের বাপ। সেও একই রকম কথা বলতো। বলতো, আমরা তো তোমাগো পুজাতে যাই, সেইখানে প্ররসাদ খাই, তো তাইলে তুমি গরু মাংস খাইলে সমস্যা কোথায়? আমি বললাম- আচ্ছা ফলমূলের তৈরী প্রসাদের লগে একটা নিরীহ পশু, বোবা প্রাণী, যেটা কিনা মানুষের মতো বছরে একটা/দুইটা বাচ্চা প্রসব করে তার মাংসের তুলনা কেমনে সমান হয়? তাছাড়া কেউ যদি স্বেচ্ছায় বা কোন শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারনে সাধারণ কোনও খাবারও না খায় তাইলে তারে এইরকম বিব্রতকর প্রস্তাব দেওয়ার কোন মানে হয়? তাছাড়া আপনাকে গরু-ই যে খাইতে হবে এমন কোন সুনির্দিষ্ট ধর্মীয় বিধান আছে? উনি কইলেন- আছে। আমি জিগাইলাম কেমনে? উনি কইলেন তয় শোন পশু কোরবানির ইতিহাস-

আমাগো অনেক বড় নবী, হের নাম ইব্রাহিম বাদশা। সক্কল মুসলমান খেরেশটান ইহুদীগো হে হইলো বড় নবী। একদিন আল্লাহপাক হেরে স্বপ্নে দেখা দিয়া কইলো, হে ইব্রাহিম বাদশা, তোমার প্রিয় জিনিস আমার জন্য কোরবানি কর। ইব্রাহিম বাদশা তো পরলো বিপদে। অনেক চিন্তা কইরা সে বুঝলো, হের পোলা ইসমাইল হইলো তার প্রিয়। তাই সে বউ বিবি হাজেরারে কইলো, বউ আমি পোলারে কোরবানি করমু। বিবি হাজেরা উথাল পাথাল কান্দে, কিন্তু পোলারে তো আল্লাপাকের লাইগা কোরবানি দেওনই লাগবো। সে পোলারে চুমা দেয়, আদর করে। তেল সাবান দিয়া গোছল করায়। তারপরে সুন্দর কইরা সাজাইয়া গুজাইয়া বাপের লগে পাঠায়। বাপে বড় একখান ছুরি নিয়া চলল পোলা কোরবানি দিতে। দূর পাহাড়ে নিয়া কোরবানি দেওনের সময় আল্লায় খুশি হইলো, খুশি হইয়া কইলো হে ইব্রাহিম, আমি তোমার ভক্তিতে খুশি হইছি। তুমি একখান পশু কোরবানি দেও। ইব্রাহিম বাদশা খুব খুশি। একটা পশু কোরবানি দিয়া পোলারে নিয়া বাসায় আইলো। এই হইলো পশু কোরবানির ইতিহাস।

শুইনা আমার জানি কেমন কেমন লাগলো। আমি জিগাইলাম, পোলার লাইগা বাপ মায়ের ভালবাসা নাই, জবাই করতে গেল স্বপ্ন দেইখা, এতে আল্লায় খুশি হইলো? আর আল্লায় যদি ঠিক সময় মতন খুশি না হইতো! দেরি হইতো! তাইলে কি এখন আপ্নেরা নিজের মানুষ পোলা কোরবানি দিতেন? আর হেই বাপ মাই বা কেমন বাপ মা, যে নিজের পোলাপান জবাই দিতে যায়? সেই মা’ই কেমন মা যে নিজের পোলারে গোছল দিয়া জবাই করতে পাঠায়? সে স্বামীর লগে ঝগড়াঝাঁটি, কাইজ্বা-দরবার, মারামারি করতে পারলো না? সেই বাপে কইতে পারলো না আমার পোলা আমি জবাই দিমু না, লাগলে আমি নিজে জবাই হমু?
আমার রুম প্রতিবেশী বিজ্ঞ উকিল সাব এইসব কথা শুইনা দেয় ধমক, যা ছ্যাড়া কি ক্ও এডি। এইসব কথা বলতে নাই। বিবি হাজেরা হইলো সকল মায়ের আদর্শ মা। বাবা ইব্রাহিম বাদশা হইলো সকল বাপের আদর্শ বাপ। তাগো মত কেউ নাই।

কইলাম, আচ্ছা আপ্নে যদি আইজ রাইতে এমন স্বপ্ন দেখেন, তাইলে কাইল ভোরে কি বাড়ীত যাইয়া আপ্নের পোলাডারে গোছল দিয়া জবাই করতে নিয়া যাইবেন? কথা শুইনা উকিল সাহেব জানি ক্যামন হইয়া গেল। তার মুখ চোখ শুকনা। কোন কথা কয় না। তার চোখ দেইখা মনে হইলো সে জবাই করতে যাইবো না। তার ঈমান কম নাই, বিশ্বাস কম নাই, আল্লাভক্তি কম নাই। সেও কম মুসলমান না। তাও সে নিজ পুলা জবাই দিবো না। দরকার হইলে সে নিজে জবাই হইবো। দরকার হইলে সে সারাজীবন দোজখে পুড়বো। তাও সে নিজের পোলা জবাই করতে দিবো না। দরকার নাই তার ইব্রাহিম বাদশার মত আদর্শ বাপ হওনের। লাগলে সে আল্লার সাথেও যুদ্ধ করবো। সে তো বাবা!
পাশে থেকে আরেকজনে সব কথা শুনতাছিল। সে আইসা দিল আরেক ধমক। এক্কেরে যেন রক্তচক্ষু। কইলো- তুমিতো মিয়া মালাউনের পয়দা। মালাউনরা গরুরে মা ডাকে। গরুর দুধ খাইতে মালাউনেদের আপত্তি নাই কিন্তু মাংস খাইতে আপত্তি। আমরা মুসলমানের পোলা আর মুসলমানের পোলা রক্ত দেখলে ডরায় না। কিন্তু আমি ঠিকই ডরাইতাম,
কারন আমি মুসলমান না। মালাউন। মালাউনরা মায়ের দুধ খায়, মাংস খায় না।

এইটাতো হইলো হেগো মুখে শুনা কুরবানির ইতিহাস। হেগো মুখেত্তন ছাড়াও কুরবানি সম্পর্কে আমি একটু আধটু হুনছি। হুনসি নিজের প্রিয় ধন কোরবানি করার হুকুম আছে! হুনছি কোরবানি মানে ত্যাগ! নিজের মধ্যের পশুসত্বাটাকে কোরবানি দেওয়া, ত্যাগ করা, অনুশোচনা করা। মানলাম কোরবানি মানে ত্যাগ। তয় বুঝলাম না গরুছাগল নিজের প্রিয় ধন হয় কেমনে? তাছাড়া লোক দেখাইয়া কেডা থ্থেইক্যা কেডায় বেশি দাম দিয়া বাজারের বড় গরুটা কিইন্যা কুরবানি দিবে সে প্রতিযোগিতা কইরা, পশুর রক্ত গায়ে মাখাখাখি কইরা উল্লাস কইরা কোরবানির মানে ত্যাগ আর থাকে কেমনে? সত্যিকারের কোরবানিতে আবেগ-অনুশোচনা থাকনের কথা, দু:খ থাকনের কথা, মানুষ কোরবানির শেষে কান্না করবো, আহজারি করবো এইটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাগো বাংলাদেশে দেখি তার উল্টাটা! দেখি হেরা কুরবানি দিয়া হৈ-হুল্লুর করে, একজন আরেকজনের গালে/মুখে/গায়ে রক্ত মাখায়, খুশিতে লাফালাফি করে, একটু পরে আবার মাংস বাটাবাটি নিয়া হৈ-চৈ করে!

ছোটকালে আমি এত্ত কিছু বুঝতাম না। বোকা ছিলাম, অবুঝ ছিলাম, নাদান ছিলাম। ইস্কুল ছুটি পাইলেই মামার বাড়ি না হয় পিসির বাড়িতে পাড়ি জমাইতাম। পিসিদেরর বাড়িতে প্রচুর ফসলি জমি আছিলো, হেরা গরু-ছাগল পালাতো। আমি গেলেই ছাগল নিয়া ব্যাস্ত থাকতাম। সেইবার আমার জন্য পুজাতে ছাগল ‘বলি’র মানসা করা হইছিলো। যে ছাগলটা বলি হবে সেটার খাতিরদারি করতাম এই আমি। আমি তারে খাবার দিতাম, কাঠালপাতা পাইড়া দিতাম, পানি দিতাম। দেখতাম ছাগলটা খালি ম্যা ম্যা করে, আর খালি কান্দে। চোখ দিয়া খালি পানি পরে। আমি বুঝতাম না। বোকা ছিলাম, অবুঝ ছিলাম, নাদান ছিলাম।

পুজার দিন সকালে বড় রামদাটাতে ধার দেয়া হচ্ছে। সবার চোখে মুখে খুশি খুশি ভাব, চোখ চকচক করে। আমারও খুশি খুশি ভাব। কেন জানি না। কিন্তু সবাই খুশি তাই আমিও খুশি। যথারীতি সকাল বেলা ব্রাক্ষ্মন আসলো, গায়ের লোকজনও আসলো। পুজা শুরু হইছে, ব্রাক্ষ্মন মন্ত্র পড়তেছে, কিছুক্ষন পর দুইজন লোক ছাগরটারে ধইরা ছাগলের মাথাটারে একটা কলাগাছের টুকরার উপর ধরে লম্বা কইরা শুয়াইয়া ধরলো। আমার তখন খুব হতভম্ব অবস্থা। বুক ধক ধক করতেছে। ছাগলটারে আমি খাবার দিছি, কাঠালপাতা পাইড়া দিছি, গায়ে-মাথায় হাত বুলাইয়া আদর করছি। ছাগলটা আমার আদর বুঝছে। সে কান নাড়াইছে, মুখটা আমার হাতের সাথে ঘষা দিছে, নিচু স্বরে ম্যা-ম্যা করছে। ছাগলটারে সবাই এমন কইরা ধরলো কেন? মা গো বইলা দৌড়াইয়া মায়ের কাছে গেলাম। মা বললো আরে ব্যাক্কল, তর মঙ্গলের লাইগ্যাই মানসা করা হইছে, তো বলি হবে না? ধুর ব্যাক্কল!

আমি অবাক হইয়া তাকাইয়া থাকলাম। তারা ছাগলটারে ধইরা লম্বা কইরা শোয়াইলো। এরপরে হাসতে হাসতে বড় রামদাটা দিয়া ‘জয় মা’ বইলা গলায় একটা কোপ দিলো। এক কোপেই মাথা আলাদা, ঘড় ঘড় কইরা রক্ত বাইর হইলো। আমি পিসির কাছে দৌড়াইয়া গেলাম। বললাম পিসি ছাগলটারে এরা মারে কেন? পিসি কইলো ধুর ব্যাটা, এইটাই তো ‘বলি’। তোর জন্য ‘বলি’ না? আয় ‘বলি’ দেওয়া দেখ ভালা কইরা।

আস্তে আস্তে বড় হইয়া উঠলাম। বুঝদার হইলাম। বালেগ হইলাম। বিভিন্ন পুজাতে বলি দেয়া দেখতাম। এরপরে আর ছাগল বলি দেওয়া দেখলে বুকে ধক ধক করতো না। আত্মীয়-স্বজন কারো বাড়িতে ছাগল বলি হইলে আমিও রক্ত হাতে মাইখা ভাবসাব নিয়া হাঁটাহাঁটি করতাম, যেন ছাগলটা আমিই বলি দিছি। বলির দেবার সময় খুশিতে ‘জয় মা’ বইলা লাফাইতাম। আনন্দ হইতো। উঠানে যত রক্তারক্তি তত আনন্দ। এইভাবে ব্যাটা হইয়া উঠতে লাগলাম। তখন আর রক্তারক্তি দেখলে কান্না পাইতো না। খুশি খুশি লাগতো।

অনেক বছর পরে পুরান ব্যাপার স্যাপার গুলা নিয়া আবার চিন্তা করতে শুরু করলাম। আস্তে আস্তে আবার শিশু হইয়া যাইতে থাকলাম। অবুঝ নাদান হইতে লাগলাম। কেন ঠিক জানি না। রক্তারক্তি দেখলে আবার খারাপ লাগতো, কান্না পাইতো। দুই/তিনজন মিল্লা একটা নির্বাক পশুরে চাইপা ধইরা হাসতে হাসতে বলি দিতেছে, জবাই দিতেছে, আনন্দে চোখ মুখ জ্বল জ্বল করতেছে, এইসব দৃশ্য দেখতে পারতাম না। পেট গুলাইয়া বমি আসতো। মনে হইতো এতে নিজের মনের পশু প্রবৃত্তির ত্যাগ হইতেছে না, আরো পশু প্রবৃত্তি বাড়তেছে।

তারপর এসব প্রথাবিষয়ে কিছুটা জানার চেষ্টা করলাম। জানলাম পৃথিবীর নানান দেশে নানান ধর্মে নানান রকম আনন্দ উৎসব আছে। কোন কোন অঞ্চলে কেউ কেউ মানুষ পোড়াইয়া খাইয়া ফেলে, কোন কোন অঞ্চলে উৎসবে রক্তারক্তি খুনখারাবী করা হয়। গ্ল্যাডিয়েটর ফাইট হয়, এক পক্ষ আরেকপক্ষরে মাইরা ফাটায়া ফেলে, একজন আরেকজনেরে জবাই করে, বলি দেয়। কোন কোন অঞ্চলে খোলা ময়দানে যৌনতা চলতে থাকে, উৎসব-আনন্দ-ফুর্তি। ওইসব অঞ্চলে সেইটাই উৎসব, সেইটাই তাদের আনন্দ করার উৎস। চারপাশে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়াইয়া গ্ল্যাডিয়েটর ফাইট দেখে, একজন আরেকজনার নাড়িভুঁড়ি বাইর কইরা ফেলতেছে, মগজ বাইর কইরা ফেলতেছে, রক্তারক্তি করতেছে, তা দেইখা আনন্দে চিৎকার দেয়। হাততালি দেয়। এখনও টিভিতে রেসলিং খেলা হয়; জন সিনা, রেন্ডি ওরটন, শেইলড আর বিগশো একজন আরেকজনরে মাইরা রক্তারক্তি করে। তা দেইখা মানুষ খুব মজা পায়। উৎসব হয়। আনন্দ হয়। স্টোন কোল্ড স্টিভ অস্টিন বিয়ারের ক্যান খুইলা ছুইড়া মারে। আবার কিছু কিছু অঞ্চলে মেয়েদের যখন বিয়ে হয়, সেই রাতে বিছানা রক্তাক্ত হওয়াটা সম্মানের বিষয়। সেই রাতে যদি বিছানায় রক্তপাত না হয়, সেই মেয়েকে অসতী- কুলটা বইলা গণ্য করা হয়। এবং সেইটা খুবই অসম্মানের বিষয়। এরকম হইলে সেই মেয়ের বাবা মার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন পথ থাকে না। বাবা-মা পারলে মেয়েটারে তারা নিজেরাই হত্যা করে বেশিরভাগ সময়।

এই রকম নানা ধরনের প্রথা বহু যুগ ধইরা নানা জায়গাতে চইলা আসতেছে। এখনও আছে। সেই সেই অঞ্চলের লোকজন খুব ধুমধামের সাথেই উৎসবগুলা পালন করে। তাদের কাছে এই ব্যাপারটাই খুব স্বাভাবিক, বরঞ্চ এই সব প্রথার ভিন্ন কিছু দেখলেই তারা আশ্চর্য হয়।

অনেক আগের দিনে, দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিজের সন্তানরেও বলি চড়ানো হইতো। এইটাই ছিল সে সময়ের ধর্ম, সে সময়ের প্রথা। এতে মানুষের একটু খারাপ লাগলেও আপত্তি করতো না। পরিবারে কয়েকটা পোলাপান থাকলে একটা তারা দেবতারে দিত। দেবতা বলি পাইয়া খুশি হইতো বইলা তারা বিশ্বাস করতো। বলি না পাইলে গোস্বা করতো। অসুখ বিসুখ দিতো। অভিশাপ দিতো। ঝড় বন্যা হইতো। আর বলি পাইলে গোলাভরা ধান হইতো, পুকুর ভর্তি মাছ হইতো। দেবতার মন্দিরে তাই পোলা বা মাইয়াটারে বলি দেয়া লাগতো। পাশে নানান উৎসব হইতো। বাদ্য বাজতো। মানুষ নাচগান করতো। যেই দেশে যেই নিয়ম। যেইখানে যেই ধর্ম। যেইখানে যেই আচার।

সভ্য মানুষ অনেক কিছুই করে আবার অনেক কিছুই করে না। আধুনিক মানুষ পুরান নিয়মকানুনগুলা পালটায়, যুগের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন হয়। কারণ সবকিছুই পরিবর্তনশীল। আগে দেবতার নামে মানুষ বলি দেয়া ছিল মামুলি ব্যাপার, এখন ঈশ্বরের নামে ছাগল-ভেড়া বলি দিতেও প্রশ্ন জাগে, এই নিরীহ পশু বলিতে আসলেই শক্তিমান ঈশ্বর খুশি হয় কিনা! বোবা পশুর মৃত্যুতে ঈশ্বরের খুশি হবার কারণ কী? প্রকাশ্য রক্তারক্তিতে ভালবাসা আর ত্যাগ শেখা যায় কিনা!
মানুষই মানুষকে ভালবাসে, নারী পুরুষ প্রেম করে। পছন্দের মানুষের কাছে ভালবাসার অনুভূতি প্রকাশ করে। বিয়ে-সাদী করে। নারী পুরুষ সঙ্গম করে। আমার নিজেরও একই পদ্ধতিতে জন্ম হইছে। নারী পুরুষের সঙ্গমে আমার আপত্তি নাই। ভালবাসার অনুভূতি প্রকাশেও আমার আপত্তি নাই। যার যার ব্যক্তিস্বাধীনতা, যার যার রুচি-অভিরুচি। আমি নাক গলানোর কেডা? ঠিক তেমনি প্রকৃতির ডাকে সারা দিবেন, প্রস্রাব পায়খানা করবেন, আমিও করি, প্রস্রাব চাপলে প্রস্রাব করবেন ভালো কথা কিন্তু সেইটা চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড়াইয়া করলে একটু আপত্তি করি। বলি, নির্দিষ্ট স্থানে, পাব্লিক টয়লেটে করেন, পারলে ভাই নিজের বাসায় গিয়া শান্তি মতো করেন। রাস্তায় করলে দুর্ঘন্ধ ছড়ায়, রোগ-জীবানু ছড়ায়, রাস্তায় চলাচলকারী নারীরা দেখে, শিশুরা দেখে, দেশি বিদেশী পর্যটক মানুষ দেখে, বিব্রত হয়। বাংলাদেশ সম্পর্কে বদ ধারণা পোষন করে, ময়লা-আবর্জনা, অশান্তির শহর-দেশ-জাতি হিসেবে আমরা তালিকাভূক্ত হই, তালিকায় শীর্ষস্থান দখল করি।

সভ্য মানুষ এগুলা একটু আড়ালে করে। করা প্রয়োজন, কিন্তু মানুষ যত সভ্য হইতেছে তত তারা বিষয়গুলা লুকাইয়া করে। রাস্তাঘাটে, পোলাপানের সামনে উৎসব আনন্দ ফুর্তি কইরা দেখাইয়া দেখাইয়া করে না। এগুলা দেখাইয়া স্ট্যাটাস বাড়ায় না। সেইটা সভ্য মানুষের লক্ষণ না। আধুনিক মানুষের লক্ষণ না। খোলা রাস্তায় দাড়িয়ে লিঙ্গ উচিয়ে প্রস্রাব করা কোন বীরত্বের বিষয় না, জনবহুল রাস্তার পাশে লিঙ্গ উচিয়ে প্রস্রাব করে বীরত্ব দেখানিরও কিছু নাই রক্তারক্তি কোন বীরত্বের বিষয় না, তেমনি নির্বাক নিরীহ পশুর উপ্রে বীরত্ব ফলানিরও কিছু নাই। রাস্তাঘাটে মেয়েদের দেখে অশালীন মন্তব্য করলে, কু-প্রস্তাব দিলে পুরুষত্ব বাড়ে না। এইটা দুঃখের বিষয়।
মানুষের মৃত্যুসহ সকল মৃত্যুই দুঃখের, নিষ্পাপ নির্বাক প্রাণীর মৃত্যুও দুঃখের। হয়তো প্রয়োজনীয়, তবে দুঃখের।

আমিও পাঠা-খাসির মাংস খাই, মুরগির মাংসও খাই, মাছ-ভাত খাই। এই খাবারগুলোতে অভক্তি নাই। রান্না করা পাঠা, খাসি আর মুরগীর মাংস দেখলে লাফাইয়া খাইতে বসি, ঝাপাইয়া পড়ি খাদ্য ধ্বংসে। মানবকূলে আসবার কারণে খাইতে হয়। কাউকে ভাললাগলে সেটা তাকে জানানোর মতো উপযুক্ত পরিস্থিতি হলে জানাবো। যদি বিবাহ করি সঙ্গমও করবো। এই যে প্রকৃতি, খাওন দাওন বা যৌনতা, বিষয়গুলা নিযমতান্ত্রিক হলে আসলে খারাপ না। কিন্তু ঐ যে, সভ্য মানুষ! আধুনিক মানুষ! কিছু বিষয় একটু আড়ালে করা ভাল। প্রকাশ্যে করলে ভাল দেখায় না। আনন্দ ফুর্তির মাধ্যমে করলে ভাল দেখায় না। ঢাক-ঢলে পিডাইয়া উৎসব কইরা করলে ভাল দেখায় না। মুখে হাসি নিয়া করলে খারাপ দেখায়। পশু প্রবৃত্তি ত্যাগ হয় না, বাড়ে। গ্ল্যাডিয়েটর ফাইট এখনও চলে, রাস্তাঘাটে একজন আরেকজনরে বেদম মারে, রক্তারক্তি করে। বাংলাদেশেও আমরা দেখি খোলা রাস্তায় বিশ্বজিৎদের চাপাতি দিয় কুপায়, পুলিশের মাথা ইট দিয়া থেতলাইয়া দেয় আর পাশে দাঁড়াইয়া লোকজন হাততালি দেয়, শিষ দেয়! সিনেমার নায়ক গুন্ডাদের পিটায়। দর্শক শিষ বাজায়। যত রক্তারক্তি তত জোরে শিষ। কিন্তু বিষয়গুলা ফুর্তির না। রক্তারক্তিতে শিষ বাজানোর কিছু নাই। বাঙলাদেশ পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, আম্রিকা ইরাক মারামারি হয়, ইসরাইল ফিলিস্তিনি রক্তারক্তি হয়। যুদ্ধ কোন আনন্দের বিষয় না। ফুর্তির বিষয় না। হয়তো নিজ নিজ প্রয়োজন এবং নিজেদের টিকাইয়া রাখার স্বার্থে যুদ্ধ জরুরী হইয়া যায়, কিন্তু মানুষ মারার মধ্যে কোন ফুর্তির ব্যাপার নাই। সেইটা ফিলিস্তিনের পক্ষ হয়ে হামাস ইসরাইলিদেরই মারুক আর মুসলমানের পক্ষ হয়ে তালেবানরা আম্রিকানদেরই মারুক, বিষয়গুলা আনন্দের ব্যাপার না। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থে একজন আরেকজনরে হত্যা করলেও এতে খুশির কিছু নাই। আনন্দের কিছু নাই। এইভাবে সভ্য হওয়া যায় না। তাতে ভালবাসা প্রকাশ পায় না বরং হিংস্রতা প্রকাশ পায়। পশুত্ব প্রকাশ পায়।

সভ্য মানুষ অপরাধ প্রমাণিত হইলে সর্বোচ্চ শাস্তিস্বরুপ এখনও মৃত্যুদণ্ড দেয়। অসভ্যরা প্রকাশ্যে আসামীর গলা কাটে, কিছুদিন আগেও সৌদিতে আট বাঙলাদেশিরে গলা কাইট্টা জবাই দেয়া হইছে। সভ্য দেশেও মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু প্রকাশ্যে না। কারণ সভ্য দেশে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হইলেও তা প্রতিহিংসামূলক হয় না। এখন আর চৌরাস্তার মধ্যে দাড় করাইয়া গলা কাটা হয় না । এতে হিংস্রতা প্রকাশ পায়, রাষ্ট্র হিংস্র হইতে পারে না। প্রতিহিংসা পরায়ন হইতে পারে না। ত্যাগের মহিমা বোবা পশুর রক্তারক্তির মধ্যে না। বোবা পশুর রক্তারক্তি বারো মঙ্গল বয়ে আনতে পারে না। ত্যাগের মহিমা নিজেরে মানবতার স্বার্থে উৎসর্গের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আত্মত্যাগের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আত্মত্যাগ না করলে ভালবাসা-ত্যাগ-প্রেম প্রকাশ পায় না। সৃষ্টিকে বাচিয়ে রেখে, সৃষ্টিকে টিকিয়ে রাখলে মঙ্গল হয়। ধ্বংস করে না।

ছাগল ‘বলি’ ‘গরু জবাই’ পশু হত্যা এগুলো পছন্দ করিনা বলে আমারে নাস্তেক ভাইবেন না। আমি নাস্তিক হইতে পারি নাই। শুনছি নাস্তেকরা খুব হিংস্র আর বর্বর হয়, এরা জ্যান্ত মানুষ চিবাইয়া খায়। নাস্তেক হতে হলে, নাস্তেকদের মতো হিংস্র আর বর্বর হতে হলে, প্রচুর জ্ঞান আহোরন করতে হয়, বিভিন্ন ধরনের বইপত্র ঘাটাঘাটি করতে হয়্। আমার সেরকম ধৈর্য্য নেই, জ্ঞানও নেই। আমি আস্তিক, বনেদী হিন্দু পরিবারে জন্মেছি। তয় আমি ধর্মবিদ্ধেষী না। এই হ-য-ব-র-ল লেখা লেখির উদ্দ্যেশ্য এইটুকু বলা, যার যার ধর্ম তার তার মাঝেই থাকুক, নিজের মধ্যেই ধারন করতে দেয়া হোউক। একজন হিন্দু সে তার ধর্ম মেনে গরু না খায়, না খাক, সন্ধ্যার সময় শঙ্খ-ঘন্টা বাজাইয়া প্রার্থনা করে, করুক। একজন মুসলমান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে পড়ুক, রাত সাড়ে তিনটা বাজে সেহরী করে রোজা রাখে রাখুক।

যে যার ধর্ম পালন করবে তাতে আমার কোন সমইস্যা নাই। একজন অ-ধুমপায়ী হিসেবে আমারও যেমনটা সমস্যা নেই কেউ যদি মদ-গাইঞ্জা খাইয়া গোলমাল না কইরা তার নিজের ঘরে পইড়া থাকে। কিন্তু সমইস্যা হয় তখনই যখন কোন ধুমপায়ী কেউ সিগারেটে টান দিয়ে ধোয়াটা আমার মুখের আশেপাশে ছাড়ে। আমিতো কারো ভেতরের জীবানুযুক্ত ধোয়া নিজের ভেতরে নিতে বাধ্য নই! একখান ছোট্ট গল্প বলি- এক গর্ভবতী মহিলার বাইচ্চা হইবে, তো সেই মহিলা তার শাশুড়িরে কইতেছে, আম্মা আমি ঘুমাইলাম, আমার প্রসব বেদনা উঠলে আপনে আমারে ডাইক্কা দিয়েন! শাশুড়ি কয়- শোনরে বৌমা, তোর যখন বেদনা উডবো তখন তোর চিল্লাচিল্লিতে পাড়া প্রত্রিবেশির ঘুম ভাঙবো।

নেহাত ধর্মানভূতি নয়- অমুসলিম হিসেবে সমস্যা হয় তখনই যখন নামাজের সময় শঙ্খ-ঘন্টা ঠিকই বন্ধ রাখতে হয়, কিন্তু মাঝ রাতে মাইকে চিল্লাচিল্লির সময় এই অমুসলিমদের ঘুমের কথা খেয়াল করা হয় না। কেন! আমি রোজা থাকব অতএব আমার তাড়নায় আমি উঠবো, আর যদি না উঠতে পারি! ঘুমের গাঁধা হই! এলার্মের প্রয়োজনই হয়! তাহলে এলার্ম ঘড়ি আছে! মোবাইলে এলার্ম আছে!এভাবে মাইকে হট্টগোল কেন? কাফেলার নাম করে মাইজ রাইতে মিছিল কেন? জানিনা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এরকমটা হয় কি না?

আসলে কথা হইলো যারা হিন্দুগো গরু খাওয়ানোর লাইগ্যা ছল-চাতুরী, জোর জবরদস্তি করে, দোষটা যে শুধু তাগো নিজেগো তা কিন্তু না! আমরা খবরে দেখছি, ফেসবুকে পড়ছি নাইজেরিয়ার বোকা হারাম নামে একটা সংগঠন প্রায় ২০০ এর উপ্রে ইস্কুল ছাত্রীকে অপহরন করে ধর্ষন করে মুসলমান বানিয়েছে। আমাগো দেশেও বোকা হারামের আদর্শধারী বহুত আছে। বোকাহারামের এরকম ইসলামী কান্ড দেইখ্যা তাগোও মুসলমানিত্ব চেগার দিয়া উঠে। তাছাড়া তাগোরে পারিবারিকভাবে বুঝানো হয়, মসজিদ মসজিদে নামাজের পর খোতবায় বুঝানো হয়, মাদ্রাসার কেলাসে বুঝানো হয়, একটা হিন্দুরে কলমা পড়াইয়া মুসলমান বানাইতে পারলে চৌদ্দগুষ্টি বেহেশতে যাইবো। তারা ছুডু বেলাতত্তইন শুইনা শুইনা বড় হয় হিন্দু মায়াগো শরীরের গন্ধ্ ভালো। এসব শুইনা তারা হিন্দু মায়াগো বিছানায় পাইবার খোয়াব দেখে। গত কয়দিন আগেও লালমনিরহাটে একটা হিন্দু মেয়েরে অপহরন কইরা আটকাইয়া রাইখা ধর্ষন করা হইসে, পরে হেই ধর্ষনরে বৈধতা দেওনের লাইগা কলেমা পড়াইয়া মুসলমান বানানো হইছে। আমার ওয়ালে হেই খবরের লিংক ঝুলতেছে যেইডা তার বাস্তব প্রমান। এমনকি আজকেও খবর শুনলাম বোকা হারাম মাইদুগুরি নামের এক গেরামে প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষ মারছে। এই বোকা হারাম তো বলতেছে শান্তির ধর্ম ইসলাম প্রতিষ্টার ল্যাইগ্যা এই এত্তোগুলা মানুষ মারছে। ইসরাইলীরা গাজায় ফিলিস্তিনি মানুষগো মারছে বইলা প্রতিবাদ জানাইছি কিন্তু নাইজেরিয়ায় বোকা হারামও মানুষ মারছে কিন্তু আমি ফেসবুকে তেমন কোন প্রতিবাদ বা কোন তোর জোর কিসু দেখতে পারতেছি না এ ব্যাপারে, কারন যেরা মারছে হেরা হগ্যলেই মুসলমান। আর যারা মরছে তারা অমুসলিম। অমুসলিমরা সম্ভবতো মানুষের কাতারে পরে না! অমুসলিমগো রক্ত মনয় নীল! যারা মারছে তারা যদি ইয়াহুদি খেরেশটান হইতো তাইলে নিউজফিড ভাইস্যা যাইতো লগে আমিও সুর মিলাইতাম।

আমার জানা নাই ইসলামে কি এমন মাইরা ধইরা অইত্যাচার কইরা ইসলামের দাওয়াত দিতে, মুসলমান বানাইতে কইসে কি না? নাকি বুঝাইয়া শুনাইয়া সোনা-যাদু-ময়না কইয়া দ্বীনের পথে আনতে কইসে? এরকম বোকা হারামের ব্যাপারে যখন মুসলমানরা মুখে কুলুপ আইট্টা বইসা থাকে আর ফিলিস্তিন ইস্যুতে পর্তিবাদ করতে করতে লুঙ্গি খুইলা ফালায় তখনতো বিধর্মী নাস্টেকরা নবীর করিম (স) ইসলামের দাওয়াতের তরিকা নিয়া প্রশ্ন তুলতেই পারে!

যাইহোক, সভ্য সমাজে একজন হিন্দু, একজন মুসলমান, একজন বৌদ্ধ্য, একজন খ্রীষ্টান, একজন আস্তিক, একজন নাস্তিক প্রত্যেক মানুষ তার ব্যাক্তি-স্বাধীনতা পাইবে এইটাই স্বভাবিক। কোথাওয় জোর জবরদস্তি আসার কথা না, সেটা একজন হিন্দুকে সূর্যোদয়ের দিকে পা দিয়ে ঘুমাতে বাধ্য করতে, ফুসলিয়ে ছলচাতুরী করে গরুর মাংস গেলাতে, এমনকি রাষ্ট্রীয় অনুদানের টাকায় মাইকে চিল্লাচিল্লি করে জোর করে সারা রাত ঘুমহীন সজাগ রাখাতে।

আমার বাবা আর্জেন্টিনা সাপোর্ট করতেন, কারন তিনি মুগ্ধ হয়েছিলেন সে সময় ম্যারাডোনার ফুটবল নৈপূন্য দেখে, সারা মাঠের খেলোয়ারদের নাস্তানাবুদ করা দেখে, হাত দিয়ে গোল করা দেখে নয়। আমার বাবা আর্জেন্টিনার সমর্থক তাই বলে আমিও আর্জেন্টিনার সমর্থক হবো বা বাপ আর্জেন্টিনার সমর্থন করে বলে ছেলেরেও করতে হবে এমন কোন বাধ্য-বাধকতা নেই। আমি ৯৮এ ব্রাজিলের খেলা দেখে ফুটবল বুঝেছি, ২০০২এ রোনালদো, রিভালদো, রোনালদিনহো, রবার্তো কার্লোস এদের অসাধারণ খেলার নৈপূন্য দেখে মুগ্ধ হয়ে ব্রাজিলের সমর্থন করেছি, করে যাচ্ছি। এখনের যে শিশু প্রজন্ম প্রথম ফুটবল বুঝছে তাদের বেশিরভাগ আগামীতে হয়তো জার্মানির সাপুর্ট্ট করবে, কিছু কিছু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার সাপুর্ট্ট ও করবে। এইটাই স্বাভাবিক।

কাজেই, ধর্ম নিয়া বাড়াবাড়ি না কইরা খোঁচাখুছি না কইরা একজন হিন্দু যদি স্বেচ্ছায় কোরআন পড়ে পড়ুক, একজন মুসলমান স্বেচ্ছায় গীতা পড়ুক, জ্ঞানহীনের মতো একজন আরেকজনের গালা-গালি না করে, অবহেলা না করে, অবমাননা না করে, কটাক্ষ না করে, রক্তারক্তি না করে, ধর্ম সম্পর্কে জানুক, বুঝুক, জ্ঞান লাভ করুক। গঠনমূলক আলোচনা-সমালোচনা করুক। তারপর হেই জ্ঞানের তুলনা করে ঠিক করে নেবে কোনটা পালন করবে বা আদৌ করবে কি না! এমনতো আর না যে শত বছর আগে আমার পূর্ব পুরুষ শত মাইল পথ হেঁটে পাড়ি দিত বলে আমাকেও এখন পাড়ি দিতে হবে! কারন সময়ের চাহিদায়-ই ঠিক করে নেবে কে কি করবে।

হে আল্লাহ এই পোষ্ট পইড়া যারা আমারে নাস্তিক কইবো তাগোর উপ্রে তুমি লানত বর্ষন কর, তাগোরে তুমি হাবিয়াহ দোযখে নিক্ষেপ কর, আর দুনিয়া থেইক্যা তুমি তাগোরে উঠাইয়া নিয়া যাও।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস শুধু দেশের রাজধানী মুখস্ত করার পরীক্ষা নয়।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:১৪

"আমার বিসিএস এক্সামের সিট পরেছিলো ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এ, প্রিপারেশন তো ভালোনা, পড়াশুনাও করিনাই, ৭০০ টাকা খরচ করে এপ্লাই করেছি এই ভেবে এক্সাম দিতে যাওয়া। আমার সামনের সিটেই এক মেয়ে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×