কিছুদিন আগে একজন প্রবাসী ব্লগার তার বৃদ্ধ বাবা মাকে হজে পাঠানোর পরিকল্পনা করতে গিয়ে তাদের স্বাভাবিক চলা ফিরা করায় অপারগতার জন্য কাবার তওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সায়ীর জন্য হুইল চেয়ার কিভাবে পাওয়া যাবে বা ধাক্কানোর কি ব্যবস্থা আছে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন । তখন তেমন ভালো জানাতে পারিনি, তাই এবার এ সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করে যা জেনেছি তা এখানে লিখতে চেষ্টা করলাম যদি কারো উপকারে লাগে ।
হুইল চেয়ার কেউ কেউ নিজেরাই দেশ থেকে নিয়ে যান, একজন মালয়েশিয়ার লোকের সাথে আলাপ হলো যিনি দেশ থেকেই নিয়ে এসেছেন তার বাবার জন্য এবং নিজেই তা ধাক্কাচ্ছেন । কাবার পাশেই কিছু ঔষধের দোকান আছে যারা হুইল চেয়ার বিক্রি করে। এক দোকানে দাম জিজ্ঞেস করতে চাইলো ২৪৫ রিয়াল (৬৬ ডলার বা ৫,৬০০ টাকার মতো)। কোন কোন হোটেলও তাদের কাস্টমারদের জন্য কিছু সংখ্যক হুইল চেয়ার রাখে যা তাদের কাছ থেকে ধার নেয়া যায় । তবে এগুলো যাদের নিজেদের ধাক্কানোর মতো লোক সাথে আছে তারা এ সুযোগ নিতে পারেন ।
যাদের ধাক্কানোর মতো লোক নেই তারা মসজিদেই কিছু লোক পাবেন যারা টাকার বিনিময়ে হুইল চেয়ারে তওয়াফ ও সায়ী করে দেয়ার জন্য কাস্টমার খোঁজে । তারা কতৃপক্ষ কর্তৃক অনুমোদিত, সবুজ রঙের ভেস্ট (মুজিব কোটের মতো ) পরিধান করে এবং প্রত্যেকের একেকটা নম্বর আছে। তওয়াফ শুরু করার জায়গার কাছাকাছি ওদেরকে কাস্টমারের খোঁজে ঘুরাঘুরি করতে দেখা যায় । তওয়াফ ও সায়ী করে দিতে কত করে নেয় জানতে একজনকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, চাইলো ২০০ রিয়াল । আমার ধারণা ভিড় এবং চাহিদার উপর নির্ভর করে তা তিন-চার শ ও হতে পারে, বিশেষত হজ বা রোজার সময়। নিচে কয়েকজন এমনি লোককে কাস্টমারের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যাচ্ছে ।
electric বা battery চালিত হুইল চেয়ার, যা সাধরণত পশ্চিমা দেশগুলোতে ব্যাবহারকারীদের নিজেদেরই চালাতে দেখা যায়, তেমন একটা চোখে পড়েনি, আমার ধারণা যারা এগুলো ভিড়ের মাঝে চালাতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন তারা এগুলো নিজেরা নিয়ে গেলে ব্যবহার করতে পারবেন। ভালো কন্ট্রোল না থাকলে আসে পাশে অন্যদের পায়ে লাগার সমূহ সম্ভাবনা থাকবে ।
যাদের স্বাভাবিক চলাফেরা করতে অসুবিধা তাদের উচিত এমন সব প্যাকেজ নেয়া যাতে মসজিদের নিকটের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করে, যদিও কিছু টাকা বেশি লাগে । অন্যথায় মাসজিদুল হারামে জামাতে নামাজ পড়তে আসা যাওয়া করা কঠিন মনে হতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:৪৯