আমরা পুলিসকে গণহারে ভিলেন বানিয়ে রেখেছি। এমন কী ঢাল তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দার ট্রাফিক পুলিসকেও। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে ভিন্ন কথা। আমি কখনও কোন ঠিকানা খুঁজতে গেলে আশেপাশের ট্রাফিক পুলিসের শরণাপন্ন হই। এবং এ পর্যন্ত সবাই বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে সহযোগীতা করেছে।
যাই হোক, পুলিস নামটাই যেন একটা আতঙ্ক। হ্যাঁ, বাংলাদেশের পুলিসের বিরুদ্ধে এমন বিষোদগারের অনেক কারণ আছে। তারা মানুষকে হ্যারাজমেন্ট তো করেই। ঘুষ খাওয়া তো স্বাভাবিক ব্যাপার। আজকে আপনাদের একজন ভালো পুলিসের কথা বলব, যিনি আমাদের বিপত্তি থেকে রক্ষা করেছেন।
সেদিন বাসে করে আসছিলাম। বদ অথবা বেখেয়ালী বাস ড্রাইভার সিগনাল ক্রস করার সময় খেয়াল করে নি যে লাল বাতি জ্বলে ছিলো। কিছুক্ষণ পর পুলিস এসে তাকে থামালো। ট্রাফিক পুলিস না, সার্জেন্ট! সে তাকে খুব ভদ্র ভাষায় ভর্ৎসনা শুরু করলো। আমি তো প্রমাদ গুনলাম। এখন কতক্ষন আটকিয়ে রাখে, আর নিশ্চিত হলাম ঘুষ তো নিবেই! কিন্তু সে এসব কিছুই করল না। ড্রাইভারকে বলল "প্রতিজ্ঞা কর আর কখনও বেখেয়ালে গাড়ি চালাবোনা। যদি চালাই, তবে আমি হার্ট এ্যাটাক করে মারা যাবো"। ড্রাইভার প্রথম অংশটুকু সাচ্ছন্দে বললেও দ্বিতীয় অংশটুকু বলতে একটু ইতস্তত করল। তবে শেষতক বলল। আমরা বাসযাত্রীরা প্রতিজ্ঞাপর্ব শেষ হওয়ার পর বললাম "সাবাশ!",ইন্নালিল্লাহ!" ইত্যাদি। তবে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দটি ছিলো "আমিন!"।
সার্জেন্ট নেমে গেলেন। আমরাও এরপর কোন বিপত্তি ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছুলাম। অভিনন্দন সেই সার্জেন্টকে, যিনি ইচ্ছা করলেই কাগজপত্র আটকিয়ে রেখে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দিতে পারতেন কিন্তু তা করেন নি। অভিনন্দন তাকে, কারণ তিনি অপরাধীকে সংশোধন হবার সুযোগ দিয়েছেন, এবং যাত্রীদের হেনস্তা হবার হাত থেকে রক্ষা করেছেন।
বাংলাদেশের সব পুলিস এরকম হোক!