somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হাওয়াই বিদ্যুৎ ওয়ালারাও কিছু খাক

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট ১৯০৩ সালে কার্যত উড়োজাহাজ বানিয়ে, লোকচক্ষুর সামনে চালিয়ে দেখিয়ে দিলেন মানুষের পক্ষে ওড়া সম্ভব, আপনি ভাবছেন তখন সবাই খুব খুশি হয়েছিল? না। মানুষের মন এত সহজ স্থান নয়। এর তিন বছর পরে, ১৯০৬ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে ব্যাপারটির ঘোরতর বিরোধিতা আর উপহাস করে লিখেছিল যার অনেকটা এমন, পৃথিবীতে এমন আহাম্মকও আছে যারা মনে করে, মানুষ (১৯০৩ সালে) উড়োজাহাজে করে উড়েছিল।। পৃথিবীর মূল সমস্যা আহাম্মকরা নয়, বরং (আপাত) `বুদ্ধিদীপ্ত`রা।

উন্নত বিশ্বের গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটা কথা দিনে কয়েকবার করে শোনা যায় - প্রোজেক্ট, ফান্ডিং। সরল ভাষায় হল, মাথায় একটা ধারনা আসছে, কাগজে লিখে রাখছি, সরকারকে বলতে হবে কিছু টাকা দিলে পরীক্ষা করে দেখা যায় ধারনাটা যুতসই কি না? লক্ষ করুন, এই পর্যায়ে প্রজেক্ট ফান্ডিং এর সাথে আবিষ্কারের কোন সম্পর্ক নাই। কিন্তু তারা শুধু সরকার নয়, নানা প্রতিষ্ঠান থেকে সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছে। আর তারই ফল স্বরূপ, এত আবিষ্কার, এত পেটেন্ট পশ্চিমাদের হাতে।

বিলক্ষণ এক বংগাল একখানা যন্তর বানাইছে। তাতে নাকি বিনা খরচে বিদ্যুৎ হবে। প্রথম কথা হল, যদিও আবিষ্কারক বলেন নাই, বিনা খরচে। যাই হোক। তার প্রতিবাদে ফেসবুকে ফেনা উঠে যাচ্ছে। সবাই একদিনের জন্য পদার্থবিদ হয়ে গেছে। যে বালকটি হল-এফেক্ট কি বুঝে না সেও দেখি ভেক্টর, নিত্যতা সূত্রের লেঙ্গট ধরে টান দিয়ে দিছে।

কাঁকড়ার গল্প - পাল্লা হালকা করার জন্য বলছি। দুই হাড়িতে কাঁকরা নিয়ে একজন যাচ্ছেন। একটি ঢাকনি দিয়ে পোক্ত করে বাঁধা, আরেটি উপহাসের মত খোলা মুখ। (আপনি বোধহয় আমার পুরাণ পুঁথির গল্প ধরে ফেলেছেন।) যাই হোক, একজন জিজ্ঞাসা করলেন কাঁকরা নিয়ে যাচ্ছ ভাল মশায়, একটার মুখ বন্ধ আরেকটা খোলা কেন? উত্তরে ঐ লোক যা বললেন, তার মোদ্দা কথা হল, বন্ধ ঢাকনাটায় বিদেশী কাঁকরা, মুখ খোলাটায় দেশী। বিদেশী কাঁকড়াগুলো এত্তো বেতমিজ, একটা কোন মতে মাথা তুলে দাঁড়ালে, সবগুলো মিলে ঠেলে বের করে দেয়। সরল মতি ভদ্রলোক বললেন, আর দেশী কাঁকরা? ...কোন মতে যদি একটা কাঁকরা কোন প্রকারের মাথা তুলে একটু বের হতে নেয়, সবগুলো মিলে তার ঠ্যাং ধরে টেনে নামায়, হাড়ির তলায় পাঠায়।

উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট আকাশে ওড়ার আগে বহু বিজ্ঞানী আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছে, অর্থ, সম্পদ, সময় দিয়েছেন, প্রাণ দিয়েছে। ইতিহাস হয়তো তাদের মনে রাখে নি সবসময় - কিন্তু ভুলে যায় নি। তাদের উৎপ্রেক্ষাগুলোকে ছোট করে দেখলে সেটা ভুল হবে।

দুই বিদ্বান তর্কে নেমেছে কে বড় বিদ্বান। বাঙ্গাল বিদ্বান আর অবাঙ্গালী বিদ্বান। তর্ক চলছে। কেউ কারে নাহি ছাড়ে সমানে সমান। সন্ধ্যা হয়ে এলো, তাও ফলাফল হচ্ছে না। এমন সময়,

বাঙ্গাল: বল দেখি, আসমুদ্রহিমাচল মানে কি?
অবাঙ্গাল: সমুদ্র হতে হিমালয় পর্যন্ত।
উপস্থিত জনগণতো হতভম্ব হয়ে গেল। এটাও পারল।
এবার অবাঙ্গাল: কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
বাঙ্গাল: কি করতে হবে বুঝতে না পারা।
উপস্থিত জনগনতো খুশি। এবার বাঙ্গাল এর পালা।
বাঙ্গাল: বাংলায় বল, আই ডোন্ট নো।
অবাঙ্গাল: আমি জানি না।

উপস্থিত জনগনতো খুশি, হাত তালি, উৎসবের ঢেউয়ে সব হারিয়ে গেল।

এই দর্শকদের বড় একটা অংশ কিছুদিন ধরে পদার্থবিজ্ঞানী হয়ে গেছে, ফেসবুক আর ব্লগ এখন এদের দখলে।

ঐ ভুল করে বাংলায় জন্ম নেয়া ছেলেটিকে একটু সময় দিন। আপনার পঙ্কিল জিহ্বা থেকে, বন্ধ প্রকোষ্ঠের মন থেকে একটু রেহাই দিন।আর কোন ভাবে যদি তা না পারেন, ধরুন না হয়- দুষ্ট লোকের মুখে তো শুনেছেন সবাইই খাচ্ছে, পদ্মা সেতু খাচ্ছে, টেংরা টিলা খাচ্ছে, রেলের বগী খাচ্ছে, অয়েল ট্যাংকার খাচ্ছে, স্যাটেলাইট খাচ্ছে, ড্রীমলাইনার খাচ্ছে, সিসিটিভি খাচ্ছে, ফিঙ্গার প্রীন্ট খাচ্ছে, বিমান খাচ্ছে, সোনা খাচ্ছে, ফ্রিগেট খাচ্ছে, শেয়ার বাজার খাচ্ছে – আজ না হয় ও আবিষ্কারের নামে হাওয়াই বিদ্যুৎ ওয়ালারাও কিছু খাক?
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×