অনেকে আশংকা করছেন জরুরী অবস্থা জারী হতে পারে। কেউ কেউ আশাবাদী হয়তো সুন্দর একটা সমাধান বের হয়ে আসতে পারে। তাই জরুরী অবস্থা কখন ঘোষণা করা হয় কিভাবে করা হয় আর এটি কতদিন কার্যকর থাকে সেটি সম্পর্কে সামান্য আলোকপাত। এতে জরুরী অবস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারণা হবে। আর যারা আগে থেকে জানেন তারা আবার পাঠ করে অর্জিত জ্ঞানকে আবারো শান দিতে পারেন।
জরুরী বিধানাবলী : -
১৪১ক১) রাস্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয়যে,এমন জরুরী-অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে,যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমন বা আভ্যন্তরীণ গোলাযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদেও সম্মুখীন ,তাহা হলে তিনি জরুরী অবস্থা -ঘোষণা করিতে পারবেন।
তবে শর্ত থাকে যে,অনুরূপ ঘোষণার বৈধতার জন্যঘোষণার পূর্বেই প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষর প্রয়োজন হইবে।
২) জরুরী অবস্থার ঘোষণা
ক) পরবর্তী কোন ঘোষণার দ্বারা প্রত্যাহার করা যাইবে
খ) সংসদে উপস্থাপিত হবে
গ) একশত কুড়িদিন অতিবাহিত হইবার পূর্বে সংসদেও প্রস্তাব দ্বারা অনুমোদিত না হইলে উক্ত সময়ের অবসানে কার্যকর থাকিবে না।
তবে শর্ত থাকে যে ,যদি সংসদ ভাঙিয়া য্ওয়া অবস্থায় অনুরূপ কোন ঘোষণা জারী হয় কিংবা এই দফার (গ) উপদফায় বর্ণিত একশত কুড়িদিনের মধ্যে সংসদ ভাঙিয়া যায়,তাহা হইলে তাহা পুনর্গঠিত হইবার পর সংসদেও প্রথম বৈঠকের তারিখ হইতে ত্রিশদিন অতিবাহিত হইবার পূর্বেঘোষণাটি অনুমোদন করিয়া সংসদে গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত উক্ত ত্রিশ দিনের অবসানে অনুরূপঘোষণা কার্যকর থাকবে না।
৩) যুদ্ধ বা বহিরাক্রমন বা অভ্যন্তরীণগোলাযোগের বিপদ আসন্ন বলিয়া রাষ্ট্রপতির নিকট সন্তোষজনক প্রতীয়মান হইলে প্রকৃত যুদ্ধ বা বহিরাক্রমন বা অভ্যন্তরীন গোলযোগ সংঘটিত হইবার পূর্বে তিনি অনুরূপ যুদ্ধ বা বহিরাক্রমন বা ্আভ্যন্তরীণ গোলযোগের জন্য বাংলাদেশ বা উহার যে কোন অংশের নিরাপত্তা বিপন্ন বলিয়া জরুরী-অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন।
১৪১ খ ।এই সংবিধানের তৃতীয় ভাগের অন্তর্গত বিধানাবলীর কারণে রাষ্ট্র যে আইন প্রণয়ন করিতে ও নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে সক্ষম নহেন জরুরী অবস্থাঘোষণার কার্যকরতা কালে এই সংবিধানের ৩৬,৩৭,৩৮,৩৯,৪০ ও ৪২ অনুচ্ছেদ সমূহেরকোন কিছুই সেইরূপ আইন প্রণয়ণ ও নির্বাহী ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কিত রাষ্ট্রের ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করিবে না; তবে অনুরূপভাবে প্রণিত কোন আইনের কর্তৃত্ব যাহা করা হইয়াছে বা করা হয় নাই,তা ব্যতীত অনরূপ আইনের কর্তৃত্বে যাহা করা হয়েছে বা করা হয় নাই ,তাহা ব্যতীত অনুরূপ আইন যে পরিমাণ কর্তৃত্বহীন জরুরী ঘোষণা অকার্যকর হইবার অব্যবহিত পরে তাহা সেই পরিমান অকার্যকর করা হইবে। (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান)
সহজ সরল ব্যাখ্যায় জরুরী অবস্থা কারো কাম্য নয়। কারণ উপরে উল্লেখিত ৩৬,৩৭,৩৮,৩৯,৪০ ও ৪২ সবগুলি অনুচ্ছেদ মানুষের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার যথাক্রমে চলাফেরার স্বাধীনতা,সমাবেশের স্বাধীনতা,সংগঠনের স্বাধীনতা, চিন্তা বাক ও বিবেকের স্বাধীনতা এবং বাক স্বাধীনতা,পেশা বা বৃত্তির স্বাধীনতা সর্বোপরি সম্পত্তির অধিকার এই সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার গুলোর উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ চলে আসে ফলে ব্যাপারটা নাগরিকদের অধিকারের ব্যাঘাত ঘটায়।
দেশে চলছে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এমতাবস্থায় জনজীবনে নেই নিরাপত্তা ।এ ধরণের পরিস্থিতি দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থার জন্য বড় ধরণের থ্রেট। তাই জরুরী অবস্থা কাম্য নয়।দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দ দেশের স্বার্থে দেশের মানুষের স্বার্থে পারস্পরিক সহানুভূতি ও শ্রদ্ধাবোধ নিয়ে কাজ করলে চলমান সংকট নিরসন অসম্ভব কোন ব্যাপার নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৫১