somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কথাচ্ছলে মহাভারত - ২৫

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
চন্দ্রবংশের বিবরণঃ

চন্দ্র

জন্মেজয় মুনিকে জিজ্ঞাসা করলেন –চন্দ্রবংশে ভরতের জন্ম। চন্দ্রের দ্বারা কি ভাবে বংশ স্থাপন হল, সে কাহিনী শোনান।

মুনি বলেন –শুন, সোম বংশের কাহিনী।

মরীচি ব্রহ্মার পুত্র নামে বিখ্যাত।

কশ্যপ নামে তার পুত্রও জগৎ খ্যাত।

এই কশ্যপ ও স্ত্রী অদিতির(যিনি দক্ষের কন্যা) বিবস্বান(সূর্য) নামে পুত্র হয়।
সূর্যের পুত্র হলেন বৈবস্বত। ইনি সপ্তম মনু নামে পরিচিত।

এনার কন্যা ইলা। ইলার বিবাহ হয় চন্দ্রের পুত্র বুধের সাথে।

এদের সন্তান হলেন পুরুরবা। অষ্টাদশ দ্বীপের তিনি নরপতি হন। পুরুরবা উর্বশীর সাথে অবস্থান করেন।

তাদের পুত্র হলেন আয়ু।

আয়ুর পুত্র নহুষ। স্বর্গের রাজা ইন্দ্র যেন এলেন।

যযাতি হলেন নহুষের পুত্র। যযাতির গুণ অপার। শুক্রের শাপে তার শরীর জরাগ্রস্থ হল। পুত্রকে জরা দান করে তিনি বহুদিন রাজ্য শাসন করেন।
....................................
শুক্র স্থানে কচের বিদ্যা শিক্ষাঃ

জন্মেজয় প্রশ্ন করলেন –যযাতি কোন দোষে শুক্রাচার্যের কাছে অভিশাপ পেলেন! কেনই বা ভৃগুর পুত্র যযাতিকে জরাগ্রস্থ করলেন!

মুনি এবার সে ঘটনার বর্ণনা শুরু করলেন।


দেবাসুরের সব সময় মহাযুদ্ধ লেগেই থাকত। তখন তারা আলোচনা করে নিজেদের মনমত পুরোহিত নিয়োগ করে।

দেবতাদের পুরোহিত হলেন বৃহস্পতি। অন্যদিকে দানবদের ভার্গব তথা ভৃগুপুত্র শুক্রাচার্য।

যুদ্ধে যত দৈত্যবধ হয় শুক্রের মন্ত্রে সকলে বেঁচে ওঠে। শুক্রাচার্যের সঞ্জীবনী মন্ত্রের প্রভাবে দানবদের যত মৃত্যু হয় তত তারা বেঁচে ওঠে।
এদিকে দেবতারা যুদ্ধে নিহত হলে অঙ্গিরা পুত্র বৃহস্পতি তাদের বাঁচাতে পারেন না।

দৈত্যগুরু শুক্রাচার্য

শুক্রের ক্ষমতায় দেবতারা চিন্তিত হলেন।

কচ নামে বৃহস্পতির এক পুত্র ছিল। সকলে তাকে শুক্রের কাছে সেই গুপ্তমন্ত্র শিখতে পাঠালেন।

বললেন –তুমি অসুররাজ বৃষপর্বার কাছে যাও, সেখানে শুক্রাচার্যকে পাবে। শুক্রের প্রিয়কন্যা দেবযানীকে যদি সন্তুষ্ট করতে পার তবে নিশ্চয় মৃতসঞ্জীবনী বিদ্যা লাভ করবে।

বৃষপর্বপুরে শুক্রের বাস। শিষ্য হয়ে কচ সেখানে উপস্থিত হলেন।
শুক্রাচার্যের তাঁর সুন্দরী কন্যা দেবযানীকে অসম্ভব স্নেহ করতেন।

কচ শুক্রের কাছে নিজের পরিচয় দিলেন। অঙ্গিরার পৌত্র তথা বৃহস্পতির পুত্ররূপে।


তার প্রতি খুশি হয়ে শুক্রাচার্য তাকে শিষ্যরূপে গ্রহণ করলেন। তাকে সকল বিদ্যাপাঠ দিতে লাগলেন।

কচ নানা রূপে গুরুর সেবা করতে থাকেন এবং দেবযানীকেও তুষ্ট করতে থাকেন। কচ দেবযানীর সামনে হাতযোড় করে থেকেন, তিনি যা চান তাই সঙ্গে সঙ্গে করেন। নৃত্য, গীত, বাদ্যে সব সময় তাকে মনোরঞ্জন করেন। তার আজ্ঞার্থে পাশে পাশে থাকেন। এভাবে পঞ্চশত বৎসর অতিক্রান্ত হল।

কচ ও দেবযানী

কচ শুক্রের গাভীদের দেখাশোনা করতেন। গরুদের নিয়ে প্রতিদিন বনে যান।

একদিন দৈত্যেরা তাকে দেখতে পেল। সকলে যানে সে দেবতাদের পুরোহিত বৃহস্পতির পুত্র এবং মায়া করে এসেছে সঞ্জীবনী মন্ত্র শিখতে। তাই সকলে তাকে ধরে তীক্ষ্ণ খড়্গে খন্ড খন্ড করে বাঘকে সে মাংস খাওয়াল। এভাবে কচকে মেরে দৈত্যেরা ফিরে গেল।


দিন শেষ হল, গাভীরা গৃহে ফিরল কিন্তু কচ আর এল না। দেবযানী চিন্তিত হলেন। তিনি পিতার কাছে কেঁদে কচকে বাঘ, সিংহ বা দৈত্যেরা মেরেছে-অভিযোগ জানালেন। কচকে ছাড়া তিনি যে বাঁচতে পারবেন না, তাও জানালেন।

শুক্র কন্যাকে কাঁদতে বারণ করলেন এবং ‘এসো কচ’ বলে তিনবার ডাকতেই সঞ্জীবনী মন্ত্রের প্রভাবে কচ শুক্রের সামনে এসে উপস্থিত হলেন।

তাকে দেখে দেবযানী আনন্দিত হলেন এবং তিনি এতক্ষণ কোথায় ছিলেন জানতে চাইলেন। কচ জানালেন দৈত্যেরা তাকে মেরে ফেলে এবং গুরু তাকে পুনরায় প্রাণদান করেন। দেবযানী পিতাকে দিয়ে কচের গাভী রক্ষণবেক্ষণের কার্য বন্ধ করালেন।
..........................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
..........................................
আগের পর্ব:
কথাচ্ছলে মহাভারত - ২৪
Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৪
১৭টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×