[পূর্বকথা - পাণ্ডবরা রাজসূয় যজ্ঞ করে পিতাকে রাজা হরিশচন্দ্রের মত ইন্দ্রের স্বর্গে স্থান করে দিতে চায় ......অর্জুন সে কারণে দ্বিগ্বিজয় যাত্রা করেন]
ভীমের দিগ্বিজয়ঃ
বৃকোদর ভীম প্রচুর সৈন্য নিয়ে পূর্বদিকে এগোতে লাগলেন।
এভাবে তিনি পাঞ্চাল নগরে পৌঁছালেন। পাঞ্চালরাজ দ্রুপদ আনন্দিত মনে যুধিষ্ঠিরের জন্য বহু সম্পদ দান করলেন।
এরপর ভীমসেন বিদেহ, গণ্ডকী জয় করলেন।
তারপর দশার্ণ প্রদেশে গেলে সুধর্মা রাজা এসে ভীমের পূজা করলেন। তার উপর প্রীত হয়ে ভীম তাকে তার সেনাবাহিনীর সেনাপতি করলেন।
অশ্বমেধেশ্বর রোচমানকে যুদ্ধে পরাস্ত করা হল।
এই রোচমানকে পরাস্ত করে ভীম দ্রুত পূর্বের দেশগুলি জয় করতে লাগলেন।
পুলিন্দের রাজা সুমিত্রকে জয় করে চেদিরাজ্যে পান্ডববাহিনী প্রবেশ করল। যুধিষ্ঠির ভীমকে যাত্রাকালে বলেছিলেন শিশুপালের সাথে প্রীতি রাখতে। তাই বৃকোদর ভীম শান্তভাবে বার্তা পাঠালেন। সংবাদ পেয়ে শিশুপাল নিজেই দ্রুত উপস্থিত হল। ভীমকে আলিঙ্গন করে সকলের কুশল সংবাদ নিয়ে রাজপ্রাসাদে আদর করে রাখল। তেরদিন সেখানে আদর আপ্যায়নে শিশুপাল ভীমকে খুশি করল এবং সানন্দে বহু রাজকর প্রদান করল।
এরপর ভীম উত্তর কোশলে এলেন। অযোধ্যার রাজা দীর্ঘযজ্ঞ ভীমের সাথে সাঙ্ঘাতিক যুদ্ধ করে পরাজিত হয়ে বহু ধন দিল। সেখান থেকে কোশল রাজ্যে এসে বৃহদ্বল রাজাকে কুন্তীপুত্র হারালেন।
মল্লদেশে দূত পাঠাতেই প্রচুর কর আদায় হল।
ভল্লাট দেশের চারদিকে শুক্তিমান গিরি, সে দেশও জয় করা গেল।
সুবাহু নামে কাশীরাজকে পরাজিত করে, সুপার্শ্বের রাজা ক্রথকেও ভীম হারালেন। এই রাজাদের থেকেও প্রচুর রত্ন আদায় হল।
এরপর মৎস্য দেশের রাজাকে জয় করে উত্তরে নিষাদ নগরে ভীম প্রবেশ করলেন। সেখানে শর্মক, বর্মক মহাবীরকে ভীম হারালেন।
মিথিলাপতি জনক বশ্যতা মেনে নিলেন।
অবহেলায় এই সব রাজাদের হারিয়ে ভীম মহাবলী গিরিব্রজে প্রবেশ করলেন। গিরিব্রজে জরাসন্ধের পুত্র সহদেব বহু ধন দিয়ে বৃকোদরের স্তব-পূজা করল।
পুন্ড্রের রাজা বাসুদেবকে হারিয়ে ও কৌশিকী নদীকূলের রাজাদের পরাস্ত করে বহু রত্ন পাওয়া গেল।
বঙ্গদেশে সমুদ্রসেনকে জয় করে কুন্তীসুত ভীম চন্দ্রসেন রাজাকেও পরাজিত করলেন।
আরো যারা সমুদ্রতীরবাসী রাজা, তাদের হারিয়ে দিগন্ত পর্যন্ত ভীমসেন বশ্যতা নিলেন।
এরপর তিনি বহু ধনরত্ন নিয়ে ইন্দ্রপ্রস্থে ফিরতে লাগলেন।
অগুরু চন্দন, ভোট(ভুটালের) কম্বল, বহু বসন, লক্ষ লক্ষ মাতঙ্গ(হাতি), বাজী(ঘোড়া), কনক, রজত, মুক্তা, মাণিক্য, প্রবাল, তার সাথে নানা জাতের পাল পাল পশু। ভীম সব কিছু গিয়ে ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরকে নিবেদন করলেন।
প্রণাম করে যোড়করে সকল অভিযানের কথা বলতে লাগলেন। আনন্দিত হয়ে ধর্মপুত্র ভীমকে আলিঙ্গন করলেন।
রাজকোষে সকল ধন সমর্পণ করে বৃকোদর নিজ বাসস্থানে গেলেন।
ভীমের এই দিগ্বিজয় বিরচিলেন কাশীরাম দাস।
......................................
উৎসর্গ: সকল ব্লগার বন্ধুকে
.....................................
আগের পর্ব:
কথাচ্ছলে মহাভারত - ১২৯ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৪৮