কিছুদিন আগে সিবিএ নেতা বি এম বাকিরের মৃত্যু নিয়ে একটা পোস্ট পড়ছিলাম, দেখলাম অধিকাংশ ব্লগার তাকে দুর্নীতিবাজ বলে তার মৃত্যুতে শোক এর পরিবর্তে সুখ অনুভব করলো। সবার আগে তিনি একজন মানুষ, আর মানুষ বলেই তিনি করতে পেরেছেন, কারন মানুষ মাত্রই ভুল করে।
আমরা কয়জন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো যে আমাদের পরিবারের কেউ দুর্নীতিতে জড়িত না, কেউ খারাপ কাজ করেনা, বা আমি নিজেও এর থেকে মুক্ত? শুধু মুখে কথার ফুলজুরী ছড়িয়ে দিয়ে নিজেদের ভাল সাজাতে পারব।
বাকিরের আমি কোনো আত্বীয়ও নয় এবং তাকে আমি চিনতামও না। শুনেছি তিনি সোনালী ব্যাংকের সিবিএ নেতা এবং দুর্নীতি করেছেন। তা দুর্নীতি কে করেনি....? বতমান প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে বিরোদলীয় নেত্রী, অনেক মন্ত্রী, লালু, মখা, সাকা, মাকা সব দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন আর একজন বাকিরের জামিন দিতে আমাদের বিচারবিভাগের কি এমন সমস্যা ছিল তা আমার মাথায় আসেনা।
উল্লেখ্য, জরুরি অবস্থার সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ হিসেবে প্রকাশিত প্রথম ৫০ জনের নামের তালিকায় সর্বশেষ নামটি ছিল বাকির হোসেনের। এ তালিকা প্রকাশের পর ৭ দিনের মধ্যে নির্ধারিত সময়ে বাকির হোসেন নিজে উপস্থিত হয়ে দুদকে সম্পদের হিসাব দাখিল করেন। সম্পদের হিসাব দাখিলের কয়েকদিন পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকির তো অন্তত হিসাব দেয়ার মতো সৎসাহস দেখিয়েছিল। কিন্তু আজকের অনেক মন্ত্রী এমপি নেতা সেদিন রাতের আধারে দেশ ছেড়ে পালিয়েছিল হিসাব দিবার ভয়ে। আজ তারা দোর্দন্ড প্রতপে চলাফেরা করে।
জরুরি অবস্থার সরকারের প্রকাশিত কথিত ৫০ দুর্নীতিবাজের যে তালিকায় বাকির হোসেনের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল, সেই তালিকাভুক্ত একাধিক ব্যক্তি এখন বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। বাকির হোসেনের আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আমার দেশকে জানান, যে মামলায় বাকির হোসেনকে আদালত জামিন মঞ্জুর করেননি, একই গ্রাউন্ডের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা পঙ্কজ দেবনাথকে জামিন মঞ্জুর করা হয়। সত্যিই বিচিত্র এ দেশ, তার ছেয়ে বিচিত্র তার মানুষ আর তারও চেয়ে বিচিত্র তার আইন কানুন।
আইন সবার জন্য সমান এবং তার প্রয়োগও সমান, আমরা তা কি কখনো পাব?
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১০:৪২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




