মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য আমার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব)
আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ করেন, হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলেদিন, যদি তারা আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত লাভ করতে চায় তাহলে তারা যেনো আপনার অনুসরণ করে, তাহলে আমি আল্লাহ পাক স্বয়ং তাদেরকে মুহব্বত করবো, তাদেরকে ক্ষমা করবো, তাদের প্রতি দয়ালু হবো; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক ক্ষমাশীল ও দয়ালু। (সুরা আল ইমরান/১৩১)
সুন্নতের ফযীলত সম্পর্কে হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে মুহব্বত করলো, সে মূলতঃ আমাকেই মুহব্বত করলো। আর যে আমাকে মুহব্বত করবে, সে আমার সাথে জান্নাতে থাকবে।” (তিরমিযী শরীফ)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, আখিরী যামানায় যে ব্যক্তি একটি সুন্নত আঁকড়ে ধরে থাকবে তথা আমল করবে তাকে এর বিনিময়ে একশত শহীদ এর ছওয়াব প্রদান করা হবে।
গড়ী সম্বন্ধে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “মানুষ যখন পাগড়ী পরা ছেড়ে দিবে, তখন তাদের থেকে দ্বীন চলে যাবে।”
অন্যত্র ইরশাদ ফরমান, “পাগড়ী বাঁধ, যা ইসলামের নিদর্শন, মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে পার্থক্যকারী।”
পাগড়ী পরে নামাজ পড়লে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব লাভ করা যায়। (শামায়েলে তিরমিযী, সিহাহ্ সিত্তাহ্, মিরকাত, মাদারেজুন নুবুওওয়ত, সিরাতুন নবী, জামউল ওসায়েল ইত্যাদি।
মহান আল্লাহ্ পাক, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে জান্নাত হতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে যে টুপি মুবারক পরিধান করার জন্য হাদীয়া করেছিলেন, তা ছিল চার টুকরা বিশিষ্ট এবং গোল। এর উপরিভাগে এক টুকরা এবং চারদিকে তিন টুকরা দ্বারা বেষ্টিত, যা সাদা, সূতী এবং মাথার সাথে লেগে থাকে। তা পরিধান করা খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। (দলীল: তিরমিযী, মেশকাত, মেরকাত, ইসরারুল আওলিয়া, আনিসুল আরওয়াহ্, দলিলুল আরেফীন)
টিকা: হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো কিস্তি, পাঁচ কুল্লি, চোক্কা বা উঁচু টুপি পরিধান করেননি।
এমনকি এর পক্ষে কেউ কোন প্রমাণও পেশ করার যোগ্যতা রাখে না এবং এসব টুপি পরিধান করা মাকরূহ্।
(আলমগীরী, এতাবীয়া)
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নেছ্ফুসাক্ব বা কোর্তা মোবারক পরিধান করতেন, যা হাঁটু ও গিরার মাঝামাঝি পর্যন্ত লম্বা ছিল এবং আস্তিন কব্জি পর্যন্ত বিলম্বিত। তা গুটলি যুক্ত, কোনা বন্ধ (গোল)। তিনি সাদা এবং (মিশরীয়) সূতী বেশী পছন্দ করতেন। তবে অন্যান্য রংয়ের কোর্তাও পরিধান করতেন।(বোখারী, মুসলিম, আবূ দাউদ ও নাসাঈ শরীফ)
টিকা – হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনে কখনো কোনা ফাঁড়া কোর্তা বা পাঞ্জাবী পরিধান করেননি।
যা বর্তমান কালের অনেক আলেম নামধারী লোকেরা পরে থাকে। মূলতঃ এটা দলীল-প্রমাণবিহীন, স্রেফ মনগড়া আমল মাত্র। এমনকি তিনি কখনো গেঞ্জিও পরিধান করেননি।
হুজুর পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঈদ, জুমুয়া এবং বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে জুব্বা মোবারক পরিধান করতেন। যার জেব এবং আস্তিনের উপর এমন কি নিম্নাংশেও সুক্ষ্ম রেশমের কারুকার্য ছিল।
(তিরমিযী, আবূদাউদ শরীফ ও সীরত গ্রন্থসমূহ)
টিকা: আল্লাহ্র হাবীব, হুজুর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায় মুজিব কোর্ট, ওয়েষ্ট কোর্ট, শেরওয়ানী ইত্যাদির প্রচলন ছিলনা, এগুলো স্পষ্টতই বিদ্য়াতের অন্তর্ভূক্ত।
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু উনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দু’ফিতা বিশিষ্ট চামড়ার জুতা (স্যান্ডেল বা নালাইন শরীফ) পরিধান করতেন। (শামায়েলে তিরমিযী, জামউল ওসায়েল, আদাবুন নবী) অর্থাৎ উনার জুতা (স্যান্ডেল) মোবারক ছিল দু’ফিতা যুক্ত (ক্রস বেল্ট), যা সম্পূর্ণ (তলা’ও) চামড়ার দ্বারা নির্মিত এবং তা লাল-খয়েরী রংয়ের ছিল।