ঢাবি হলে দখল ও লুটের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে কক্ষদখল ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "২৯ ডিসেম্বর নেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে যারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
২৯ ডিসেম্বর রাতে নির্বাচনের ফল ঘোষণা শুরুর পরপরই হল ছাড়তে শুরু করে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ছাত্রলীগ কর্মীরা বিভিন্ন হলে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবির কর্মীদের অনেক কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ নিয়ে হলের সাধারণ ছাত্রদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
নির্বাচনের রাতেই কবি জসীমউদ্দীন হলের ৫১২ নম্বর কক্ষ থেকে দুই ছাত্রের কম্পিউটার নিয়ে যায় ছাত্রলীগের দুই কর্মী। হাকিম নামে ওই কক্ষের আরেক ছাত্রকেও মারধর করে তারা।
এফ রহমান হলের ২১৫ নম্বর কক্ষ থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র আবুল কালাম আজাদকে ছাত্রলীগ কর্মীরা পিটিয়ে বের করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । ওই হলেরই ১০৩, ১০৫, ১১১, ১১২, ১১৬, ২১১, ২২২, ৩১৯ ও ৪০৫ নম্বর কক্ষ দখল করে তালা ঝুলিয়ে দেয় তারা। এর মধ্যে ১০৫ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগের নবীন কর্মীদের (নির্বাচনের পর যোগ দেওয়া) তুলে দেওয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার এসএম হলের ৩২ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র দৈনিক নয়াদিগন্তের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি দিদারুল ইসলাম মানিকের কক্ষের তালা ভেঙে তার লকারের জিনিসপত্র লুট এবং তার সার্টিফিকেট ও পাসপোর্ট নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মীরা। ২৬, ৩১, ৩৩, ১২৮ নম্বর কক্ষ লুট করে তালা মেরে দেওয়া হয়। ১৫১ নম্বর কক্ষের আবাসিক ছাত্র দৈনিক সংগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আরিফুল ইসলামের কম্পিউটারও নিয়ে যায় ছাত্রলীগ কর্মীরা।
সাধারণ ছাত্ররা জানান, জহুরুল হক হলের বর্ধিত ভবনের একটি ব্লকের (শিবির ব্লক নামে পরিচিত) প্রায় ২০টি কক্ষ দখল করে নিয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা। জিয়াউর রহমান হল, বঙ্গবন্ধু হল, মুহসিন হল, সূর্যসেন হলসহ প্রতিটি হলেই ছাত্রদল ও শিবির কর্মীদের কক্ষগুলো দখলে নিয়েছে তারা। হলের প্রধান ফটকে পাহারায় রয়েছে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "হলে ঢুকতে-বেরুতে সাধারণ ছাত্রদের নানা জিজ্ঞাসার মুখে পড়তে হচ্ছে। 'আপনি কোন ইয়ারে পড়েন, ছাত্রদল-শিবির করতেন কি না, নৌকায় ভোট দিয়েছেন কি না'- এসব প্রশ্ন করছে গেটে পাহারায় থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা।"
ছাত্রলীদের একজন কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় নেতারা ২৯ ডিসেম্বর রাতেই হলগুলো ঘুরে গেছেন। তখন তারা হলের নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার জন্য এবং কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটানোর অনুরোধ করেন। তারপরও কিছু নেতাকর্মীদের থামানো যাচ্ছে না।
Wed, Dec 31st, 2008 11:13 pm BdST
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/জেএফ/জিএমএ/জেকে/এসকে/২৩১২ঘ.