প্রাকৃতিক নির্যাস হিসেবে থানকুনি পাতা, ভেরেন্ডার রস এমন কিছু নেই বাঙালি যেটি করোনা প্রতিষেধক রূপে গবেষণা করেননি। এখন ডিজিটাল লড়াই!
ঘুমের ঘরে, কি ঘুম ভাঙতেই ফেসবুক মেসেঞ্জারে দোয়া, চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন, হোম থেরাপি, ফুড মেনুর ফুলঝুড়ি ক্রিং ক্রিং শব্দে ভেসে আসছে। এগুলো মানলে নাকি করোনা ভাইরাস ওরফে করুনা বিবির চৌদ্দ গোষ্ঠী পালিয়ে বঙ্গোপসাগরে ঢুবে মরবে। কিছুদিন আগে বলা হয়েছিল গরম এলেই করোনা চিৎপটাঙ।
এখন আবার ত্রান বণ্টনের নামে ফেসবুকে ছবি আপলোডের হিড়িক পড়েছে। অমুক নেতা, তমুক ভাই, আমলা-কামলা সবাই ত্রানের চেয়ে বেশি ছবি তুলতে ব্যস্ত। বিশেষ দোয়া করে একে অপরের কাছ ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে।
কিন্তু এমন একজন মানুষও দেখলাম না যে তিনি সামাজিক মাধ্যম কী ইনবক্সে বলেছেন আমি দুর্নীতি করেছি, লুটপাট করেছি, চাঁদাবাজি করেছি, ঘুষ ছাড়া চলেই নি আমাকে তোমরা মাফ করো দাও। কথা দিলাম করুনা বিবি পালালে আমি একেবারে শতভাগ ভাল হয়ে যাব। একটি টাকাও ঘুষ নেব না। অন্যর রুটি-রুজিতে আঘাত হানবো না।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে অদৃশ্যমান এক ভাইরাসের ভয়ে আমাদের অনেকেই কবরের চিন্তা করে ঘুম হারাম। রদিনরাত যারা অন্যকে উপদেশ দিচ্ছেন, তারা কি এক বারের জন্যও ক্ষমা চেয়েছেন যে সামনের দিনে অন্যায় কাজ আর করবেন না।
আমার জানা মতে, এমন সাহসী ব্যক্তি একজনেরও উদ্ভব হয়নি। তাহলে ত্রান আর দোয়ার ছবি ফেসবুকে দেয়ার চেয়ে এটাই হয়তো সর্বোতম হতো।
প্রশ্ন করতে পারেন, দুর্নীতিবাজরা তার কুকর্মের কথা স্বীকার করে নাকি? বক্তব্য হলো- উনি তো মৃত্যুকে খুব কাছাকাছি দেখছেন। আর মৃত্যুর আগে সবাই সত্য কথা বলে থাকে এটাই স্বাভাবিক।
তাই আসুন করোনা নিয়ে উপদেশ নয়। এ বিষয়ে দুর্গম গ্রামের মানুষটিও এতোদিনে অনেক কিছু শিখে ফেলেছে।
এর চেয়ে করোনার ভয়ে অন্তত দুর্নীতির মুখে লাগাম টানুন।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:৫২