somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোন টিভি/পত্রিকার মালিক কে, শত কোটি বিনিয়োগে লাভটা কী?

০১ লা মে, ২০২১ রাত ১০:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘‌সাংবাদিকেরা হচ্ছে কুকুর। আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন পাড়ার অনেকে পয়সা হলে বাড়িতে কুকুর পুষত। ওদের বাড়ির সামনে গেলে কুকুরগুলো মুখ ভেংচাত। এরপর যাদের আরও পয়সা হলো, তারা মিডিয়া পোষা শুরু করল। এগুলো হলো অ্যালসেশিয়ান কুকুর। প্রশিক্ষিত। লাথি দিলেও এগুলো কামড়াতে আসে'


এমপি শামীম ওসমান ২০১৪ সালের ২৬ জুন নারায়ণগঞ্জে বলেছিলেন,

যদিও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে আলোচনা-সমালোচনার অন্তু নেই। শিশু ত্বকী সহ একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, দস্যুতা বা অপরাধীদের গডফাদার বলা হয় তাকে। কিন্তু শামীম ওসমানের কথার কিঞ্চিৎ হলেও যথার্থতা প্রকাশ পেয়েছে মোসারাত জাহান মুনিয়া হত্যা বা আত্মহত্যার পর। গণমাধ্যম এবং গণমাধ্যম কর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। করোনা মহামারীতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব।

একটি পক্ষ মুনিয়াকে পতিতা বানাতে মরিয়া। তাকে বেশ্যা বানালেই যেন সায়েম সোবহান আনভীরকে খদ্দের সাজানো সহজতর। অন্যপক্ষ মুনিয়ার সঙ্গে বা গণমাধ্যমের ইথিকস (নীতি নৈতিকতা) প্রশ্নের সঙ্গে লড়ে উঠছেন। নন্দিত যুদ্ধসাংবাদিক আনিস আলমগীর নৈতিকদের দলে। তবে সাংবাদিকদের বড় একটা অংশই মুনিয়াকে নিয়ে নিউজ প্রকাশ/প্রচার হওয়া, না হওয়া নিয়ে মালিকপক্ষের ইশারাকে দায়ী করছে। বাস্তব অর্থে চাকরি রক্ষায় সৎ সাংবাদিক শ্রেণী তাই করতে বাধ্য হচ্ছেন।

তবে এরই মধ্যে নড়েচড়ে বসেছে বসুন্ধরা গ্রুপের আর্শীবাদপুষ্ট বা ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সিন্ডিকেটের সাগরেদ 'রূপায়ন গ্রুপ'র দৈনিক দেশ রূপান্তর এবং আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের 'সময়ের আলো' পত্রিকায় মেয়েটির চরিত্র নিয়ে তুলোধুনো করে লিখেছে। হয়তো আরও কয়েকটি মিডিয়া বসুন্ধরার সাফাই গেলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা শুরু করবে।

শামীম ওসমানের কথায় আসি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলেই তিনি নারায়ণগঞ্জের কিং। যাত্রাবাড়ী থেকে শুরু করে কুমিল্লা-নরসিংদী সীমান্ত এবং ঢাকার খিলক্ষেত পর্যন্ত তার অঘোষিত সাম্রাজ্যে। তবে গত দুই দশক ধরে বসুন্ধরা গ্রুপের যে উত্থান তা মূলত ঢাকার খিলক্ষেত, বাড্ডায় শুরু হলেও ডালপালা ছড়িয়ে পড়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা বিস্তৃত। এখানেই বসুন্ধরা, যমুনা, আমিন মোহাম্মদ, রূপায়নের জমি ব্যবসা। প্রকৃত জমি মালিকদের উচ্ছেদ, দখল, নদী ভরাটে প্রত্যেক গ্রুপেরই নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী রয়েছে।

আবার কোন এক ডেভেলপার গ্রুপকে জমি পাইয়ে দিতে স্থানীয় রাজনীতিবিদ মধ্য গ্রুপিং চলছে। বিশেষ করে মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, শামীম ওসমান, বাড্ডার জাহাঙ্গীর চেয়ারম্যানের গ্রুপের প্রভাব রয়েছে। জমিজমার দ্বন্দ্বে এসব গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায়ই গণমাধ্যমে নিউজ হয়। এছাড়া শামীম ওসমান-মেয়র আইভীর দ্বন্দ্বে ঘি ঢালছে নারায়ণগঞ্জের সাংবাদিকেরা। যে কারনে শামীম ওসমানের মুখ থেকে একথা ফস করে বেড়িয়ে আসে। যান কিছুটা হলেও সত্য। তবে একথা বলতে হয়, অনেক সাংবাদিক মাস শেষে বেতনের দিকে তাকি থাকেন। মানে বেতন নির্ভর সাংবাদিকের সংখ্যাও কম নয়।

মালিকপক্ষের চাপের কারনে নিউজ প্রকাশ বা বন্ধ করার কারনে বস্তুনিষ্ট সংবাদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাঠক বা দর্শকের দৃষ্টি যাচ্ছে ইউটিউব, ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে বাস্তব চিত্র উঠে আসার পাশাপাশি গুজবও ছড়াচ্ছে। গুজব আর সত্য যাই হোক না কেন বিজ্ঞাপনদাতারা খুঁজে থাকে স্রোতাদের স্রোত কোনদিকে। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিজ্ঞাপনের বাজার চলে যাচ্ছে। এতে সংবাদমাধ্যমগুলো আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। বেতন-ভাতা আটকে যাচ্ছে অনেকগুলো মিডিয়ায়। চাকরি হারানোর ঘটনা ঘটছে।
নতুন যতগুলো মিডিয়াই বড়সেরো আকারে আসছে তারা ২০০/৫০০ কোটির বাজেট নিয়ে মাঠে নামে, লাভের আশা শুণ্য। মূলত ব্যবসা টিকানোর জন্যই এখন ব্যবসায়ীরা মিডিয়া সৃষ্টি করছেন। ইত্তেফাকের যুগে এটা কল্পনাতেই ছিলনা।

স্বাধীন বাংলাদেশ বা পাকিস্তানী শাসনকালে প্রসিদ্ধ গণমাধ্যম বলতে ‌'দৈনিক ইত্তেফাক' প্রসঙ্গে বলছি। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার কথায় আসি। তাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন বাংলাদেশ ও মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। বঙ্গবন্ধুর আড্ডাস্থল ছিল ইত্তেফাক।

স্বাধীন দেশে একাধিক মিডিয়া বাজারে আসে। উল্লেখযোগ্য দৈনিকগুলোর মধ্য ১৯৮৬ সালের ৪ জুন প্রকাশিত হয় দৈনিক ইনকিলাব। প্রতিষ্ঠাতা এম এ মাওলানা আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে একাত্তরে স্বাধীনতা বিরোধী চক্রে থাকার অভিযোগ। এ দৈনিকটি স্বাধীনতা বিরোধীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। যদিও পরে নয়াদিগন্ত খাঁটি রাজাকারের সর্বাধিক সার্কুলেশনধারী হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

স্বৈরাচার এরশাদের পতনের পর নতুনধারা নিয়ে বাজারে আসে 'আজকের কাগজ'। ''অগ্রসর পাঠকের দৈনিক এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের নির্ভীক কণ্ঠস্বর" স্লোগান সম্বলিত কাগটির মালিক বা প্রকাশক ছিলেন কাজী শাহেদ আহমেদ। সেনাবাহিনী থেকে অবসরে গিয়ে জেমকন গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কাজী এন্ড কাজী চা কোম্পানি, মিনা বাজার সুপার শপ, বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন খাত, রিয়েল এস্টেট সর্বোপরি আওয়ামী সমর্থিত হয়েও বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে খাম্বা ব্যবসায় ব্যাপক প্রভাব ছিল তাদের।

তবে গণমাধ্যমে নীতি নৈতিকতায় কাজী শাহেদের সুখ্যাতি রয়েছে। বর্তমানে ঢাকা ট্রিবিউন, বাংলা ট্রিবিউন এবং দ্বীপ্ত টিভিতে তাদের শেয়ার রয়েছে। কাজী শাহেদ আহমেদের এক ছেলে কাজী নাবিল আহমেদ বর্তমানে সরকার দলীয় এমপি।

দ্বীপ্ত টিভির মালিকানায় রয়েছে কাজী ফার্মস গ্রুপও। মুরগীর বাচ্চা ফুটানো বা পোল্ট্রি ফিড ছাড়াও তাদের অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে জা এন জি আইসক্রিম, বিসমিল্লো আইসক্রিম, সফটওয়্যার কোম্পানি ইত্যাদি। গত ২/৩ বছর আগে চট্টগ্রামের একটি জমি নিয়ে সাবেক প্রবাসী কল্যান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি'র বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নিউজ হয় দ্বীপ্ত টিভিতে।

বাজারে সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক 'প্রথম আলো, ডেইলি স্টার ও রেডিও এবিসি'র মালিকানায় রয়েছে ট্রান্সকম গ্রুপ। প্রয়াত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী লতিফুর রহমান প্রতিষ্ঠিত এসব মিডিয়াগুলো মালিকদের স্বার্থে খুব একটা ঢাল হিসেবে ব্যবহার না করায় এখনও সেরাদের সেরা হয়ে টিকে আছে।

এর বাইরে কোন প্রভাবশালী মালিক গ্রুপের কোন দৈনিক/মিডিয়া-
১. বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন কালের কণ্ঠ, বাংলাদেশ প্রতিদিন, ডেইলি সান, বাংলানিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম, নিউজ২৪, রেডিও ক্যাপিটাল এবং টি স্পোটর্স টেলিভিশন রয়েছে। ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ব্যবসা দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে বসুন্ধরা সিটি শপিং মল, সিমেন্ট, নিউজপেপার-টিস্যু উৎপাদন, ভোগ্য পণ্য, সিলিন্ডার গ্যাস, স্টিল মিলস, বেসরকারি এভিয়েশন কোম্পানিসহ বহুরৈখিক ব্যবসা আছে এই গ্রুপের। যখন যে ব্যবসা নিয়ে অন্য গ্রুপের সঙ্গে দ্বন্দ্ব হয় তাদের বিরুদ্ধে একযোগে সবকটি মিডিয়ায় লেখা হয়।

সম্প্রতি বসুন্ধরার মিডিয়া উঠেপড়ে লাগে ইউএস-বাংলা গ্রুপের বিরুদ্ধে। গুঞ্জন রয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপ বেসরকারি এয়ারলাইন্স পরিচালনা করবে। এ নিয়ে বৈরীতা তাদের। তবে মিডিয়ার হাটে একহাত দেখাতে ইউএস-বাংলা গ্রুপও 'আজকের পত্রিকা' নামে একটি দৈনিক বাজারে আসার অপেক্ষা আছে। ইতোমধ্যে এসে গেছে 'ঢাকা পোস্ট ডটকম' নামক অনলাইন। এছাড়াও চট্টগ্রামের এমপি হুইপ শামসুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি লেখা হয় বসুন্ধরার মিডিয়ায়।

২. যমুনা গ্রুপ- দৈনিক যুগান্তর, যমুনা টেলিভিশনের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন শিল্পপতি নুরুল ইসলাম বাবুল। একসময়ের বিখ্যাত যমুনা ফ্যান দিয়ে ব্যবসা শুরু হলেও ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ইলেকট্রনিক্স, পোশাক শিল্প, যমুনা ডিস্টিলারি বা বিয়ার উৎপাদন, শপিং মল, ফাইভ স্টার হোটেল রয়েছে তাদের। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে একসময় যমুনা-বসুন্ধরা একে অপরের বিরুদ্ধে মিডিয়াকে ব্যবহার করে।

৩. গ্লোব শিল্প গ্রুপ- আতিকুল্লাহ খান মাসুদের হাতে গড়া দৈনিক জনকণ্ঠ আওয়ামী লীগ বা ভারত সমর্থিতদের কাছে জনপ্রিয়তার র্শীষে। প্রয়াত মাসুদের ভাই বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল্লাহ খানকে সামনে রেখে বিএনপির আমলে চালু হওয়া দৈনিকটি ব্যবসায় প্রভাব খাটানোর চেয়ে আওয়ামী লীগ এবং ভারতের নিউজকে প্রাধান্য দিয়ে আসছে।

৪. কর্ণফুলী গ্রুপ- সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি মালিকানাধীন 'ভোরের কাগজ, দেশ টিভি। সমুদ্রগামী জাহাজ, কন্টেইনার, মোটরসাইকেল, প্রাইভেট কার আমদানি নির্ভর কর্ণফুলী গ্রুপের মিডিয়ায় অন্য কোন গ্রুপের বিরুদ্ধে খুব একটা নিউজ চোখে পড়েনা। তবে শ্যামল দত্তের সম্পাদনায় বন্ধু দেশ ভারতের পক্ষে নিউজ প্রকাশ পায় ভোরের কাগজে। সাবের হোসেন চৌধুরীর ভাই সাঈদ হোসেন চৌধুরীর মালিকানাধীন যায়যায়দিন পত্রিকাটি ওয়ান-ইলেভেনের সময় সাংবাদিক শফিক রেহমানের কাছ থেকে নেয়া হয়। তার রয়েছে 'ওয়ান ব্যাংক' সহ বহুবিধ ব্যবসা।

৫. জামায়াতি গ্রুপ- কসাই কাদের মোল্লা (ফাঁসির দন্ড কার্যকর) পরিচালিত দৈনিক সংগ্রামকে জামায়াতে ইসলামের মুখপত্র বলা হলেও সার্কুলেশনে এগিয়ে নয়াদিগন্ত। মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ইবনে সিনা ট্রাস্ট, ইসলামী ব্যাংক, মীর কাশেম আলীর কেয়ারি গ্রুপ সহ রাজাকারপন্থী শিল্প/ব্যবসায়ী গ্রুপ বিএনপি-জামায়াতের আমলে এ দৈনিকটি বাজারে আনে। এতে জামায়াতী ঘরানার নিউজ প্রকাশই মূল কাজ।

৬. বেক্সিমকো গ্রুপ- সালমান এফ রহমান। ব্যবসায়ীক মহলে আলোচিত নাম। তার মালিকানাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের 'ইন্ডিপেেডেন্ট টিভি এবং ইংরেজি দৈনিক 'দ্যা ইন্ডিপেনডেন্ট' রয়েছে। এতে কারও বিরুদ্ধে উঠেপড়ে না লাগলেও গার্ডস হিসেবে রাখার কথা শোনা যাচ্ছে।

৭. হামীম গ্রুপ- বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একে আজাদের রয়েছে 'দৈনিক সমকাল এবং চ্যানেল২৪'। গার্মেন্টস ব্যবসা, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার রয়েছে তার। গত নির্বাচনে গ্রামের বাড়ি ফরিদপুর থেকে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে নির্বাচনে আগ্রহী ছিলেন একে আজাদ। তবে ওই আসনটিতে প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই থাকায় তিনি পেরে ওঠেননি। এ নিয়ে এলাকায় হামলার শিকার হন একে আজাদ। নিউজ হয় প্রধানমন্ত্রীর বেয়াইর নামে।

৮. ব্যাংকের একজন এমডিকে গুলি, হত্যার হুমকি দিয়ে আলোচনায় আসেন সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত জয়নুল হক সিকদারের হাতে গড়া সিকদার গ্রুপ। তার স্ত্রী, ছেলে রণ সিকদার, রিক হক সিকদার, মেয়ে পারভীন হন সিকদার মিলে ন্যাশনাল ব্যাংকটি পারিবারিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করছেন। যদিও এটি প্রতিষ্ঠা করেন বিএনপি নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু। সিকদার গ্রুপের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন সহ নানা ব্যবসা রয়েছে। তারা বাজারে এনেছে ইংরেজি দৈনিক ' বাংলাদেশ পোস্ট।

বাংলাদেশ পত্রিকার লাইসেন্স পেতে হয় জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে। তবে টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমতি দেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী। এজন্য যতগুলো টেলিভিশন চ্যানেল আছে সবকটিই হয় ব্যবসায়ী নয় রাজনীতিবিদ বা রাজনীতি সংশ্লিষ্টরা পেয়েছেন। তাদের মধ্য উল্লেখযোগ্য- এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজের মালিক মাহফুজুর রহমান। গুলশানে একটি প্লট দখল এবং তাতে টিভি চ্যানেল ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে তার নামে।

ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম প্রতিষ্ঠিত 'একুশে টেলিভিশন' চ্যানেলটি সব সরকারের রোষানলে পড়ে। ২০০৪ সালে বিএনপি আমলে বন্ধের পর আলোর মুখ দেখলেও তারেক রহমানে সংবাদ প্রকাশের পর রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় আব্দুল সালাম জেলে যান। মালিকানা বদলে বর্তমানে এস আলম গ্রুপের হাতে রয়েছে। ব্যাংক খাত একচেটিয়াভাবে নিয়ন্ত্রন সহ সম্প্রতি চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার ঘটনা ঘটে।

বিএনপি আমলে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালু 'এনটিভি, আর টিভি, দৈনিক আমার দেশ' প্রতিষ্ঠা করেন। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী সময়ে এনটিভি ছাড়া আরটিভি হাতছাড়া হয়ে যায়। আমার দেশ বিক্রি করে দেন মাহমুদুর রহমানের কাছে। বর্তমানে নোয়াখালীর এমপি ও বেঙ্গল গ্রুপের মালিক এম মোরশেদ খানের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আরটিভি। মোরশেদ খান 'বেঙ্গল ব্যাংক, মার্কেন্টাইল ব্যাংক', ড্রেজিং কোম্পানি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক।

মির্জা আব্বাসের লাইসেন্স নেয়া বৈশাখী টিভির হাত বদল হয় ওয়ান-ইলেভেনের সময়। হায় হায় কোম্পানি ডেনটিনি ২০০০ নিয়ন্ত্রন নেন। এরপর ডেসটিনি চেয়ারম্যান রফিকুল আমীনের মুক্তির জন্য যত প্রকার নিউজ আছে সেগুলো প্রচার করে বৈশাখী।

রাস্তায় নামলে কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়িতে একটি পোস্টার অহরহ চোখে পড়ে। তা হলাে এসএ টিভি। লাইসেন্সবিহীন কুরিয়ার ব্যবসা মজবুত করতেই তার এই প্রচেষ্টা। একইভাবে আকতার ফার্নিচারের গাড়িতে সাটানো থাকে 'বাংলা টিভি'র লোগো।

জিটিভি, সারাবাংলা ডটকম এর মালিক গাজী গোলাম দস্তগীর। গাজী গ্রুপের মালিক ছাড়াও যমুনা ব্যাংকে শেয়ার আছে। মূলত বসুন্ধরা গ্রুপের আক্রমনের পর তিনি গণমাধ্যম আনেন তিনি।

সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবুর নামে লাইসেন্স থাকলেও একাত্তর টিভির কিছুটা শেয়ার বিক্রি করে দেয়া হয়েছে মেঘনা গ্রুপের কাছে। সময় টিভির শেয়ার ভোগ্যপণ্য প্রস্তুত বা আমদানিকারক সিটি গ্রুপের কাছে। মাছরাঙ্গা টিভি স্কয়ার গ্রুপের। ডিবিসি নিউজে আহসান গ্রুপের শেয়ার আছে।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০২১ রাত ১২:১৮
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×