দরজা আটকে তারা শলা-পরামর্শ করতে থাকেন এবং আমি নাদানের মত ব্যাগ, বই হাতে নিয়ে সিঁড়ির গোঁড়াটায় দাঁড়িয়ে থাকি আত্মবিস্মৃত মানুষের মত উদভ্রানত্দ চোখে। সময় এমন পরিস্থিতিতে কেউ বোধ হয় মাপতে পারে না এবং আমিও সঠিক জানি না কখন দরজা খোলে বব (মানে বব ব্র্যাডনক) আমাকে ভেতরে ডাকে। আমিও আমলনামা দেয়া হবে এমন একটা আবছা ধারণা নিয়ে ভেতরে আবার আসি। এতক্ষণ যারা বসেছিল তারা উঠে দাঁড়িয়েছে, হয়তো চলে যাবার জন্য। তারা মানে রয়্যাল হলোওয়ে, লন্ডন ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ক্লাউস ডডস্ আর ডারহাম ইউনিভার্সিটির ভূগোল বিভাগের প্রধান পিটার এ্যাটকিন্স। যদিও ভেবেছিলাম তারা চলে যেতে চাচ্ছে দেখি যে তারা হাত বাড়িয়ে আছে আমার দিকে, বাড়ানো হাত থেকে শারীরিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে আমিও তাড়াতাড়ি তাদের হাতে একে একে হাত ঘষাঘষি করি। তারা আমাকে বলে, "কনগ্র্যাচুলেশনস, ড. চৌধুরী"।
অস্পষ্ট ছায়া-চিত্রের মত দৃশ্যের মধ্যে বিচিত্র সব শারীরিক-মানসিক অস্বসত্দি নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকেও আমি বুঝতে পারি যে থিসিসের ভাইভার দেয়ালটা আমি সফলভাবে অতিক্রম করে ফেলেছি ফলে পিএইচডি ডিগ্রিটা আমার মুঠোয় চলে এসেছে। এই অর্জনের আনন্দ, পাসের আনন্দ কতটা তা পরিপূর্ণ উপলব্ধি করতে পারছিলাম না, কিন্তু যখন দু'জন এক্সটার্নালই জানালেন যে, আমার থিসিসে কোনো সংশোধনই করতে হবে না তখন ভীষণ খুশি লাগলো মনে এই ভেবে যে পুরনো কাগজ-পত্র আবার ঘাঁটতে বসতে হবে না। একটা বিষয়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসের মানসিক একঘেঁয়েমি থেকেও মুক্তি। সাফল্যের কথাটা জানান দেয়ার জন্য আমি খুব বেশি মানুষকে চিহ্নিত করতে পারি না, যদিও মোবাইলে বহু মানুষের নাম্বারই সংরক্ষিত। আমার এ সংবাদে তো আর সবার চিত্ত আন্দোলিত হওয়ার কথা না। তবে ব্লগের কথা আমার মনে হয়, এখানে একটি পোস্ট দিলে অনেকেই হয়তো খুশি হবেন, অভিনন্দনও জানাবেন।
(এই ঘটনাটি ঘটেছে কাল 6 ডিসেম্বর বিকাল 4 টায়)।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



