somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সামহোয়ার ইন ব্লগ বা বাংলাদেশঃ কী হবে উজ্জ্বল উদ্ধার?

০১ লা জুলাই, ২০০৭ ভোর ৬:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের দেশের সব ক্ষেত্রের মানুষদের দুর্ভাগ্য বোধহয় এটাই যে তাদের কাজের ক্ষেত্রটাকেও তাদেরই তৈরি করতে হয়, জঞ্জালমুক্ত রাখতে হয়, তারপর সেখানে ফুলও ফুটাতে হয়।
লেখালেখির ক্ষেত্রেও তা সমান সত্য।

যদিও ভার্চুয়াল তবুও সামহোয়ার ইনে আমাদের সমাজের পরিপূর্ণ প্রতিচ্ছায়া পড়েছে। সামহোয়ার ইন ডুবে আছে ক্লেদ ও আবর্জনায়।

যারা কান্ডারি তাদেরই দায়িত্ব ছিল সুন্দর শুরুটাকে অব্যাহত রাখা। আরিল, হাসিনকে আমি অফিসে গিয়ে একমাত্র যে অনুরোধটি করেছি তা হলো, দয়া করে একজন ফুলটাইম প্রোগ্রামার দিন যে শুধু সামহোয়ার ইন ব্লগের দায়িত্বে থাকবে, দরকার হলে তার বেতনের অর্থটুকু আমরা ব্লগাররা কন্ট্রিবিউট করবো। আরিল এর আগের দফায় যে পোস্ট দিয়েছিলন তাতেও আমি একই কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলাম।

আমাদের প্রিয় ব্লগটির অবস্থা এখন আমাদের প্রিয় দেশটির মতো। এখন সমস্যায় পড়ে রাজনীতিবিদরা সংস্কার সংস্কার করে বাতাস ভারী করছেন। সামহোয়ার ইনে সে আওয়াজটাও এখনও উঠেনি। সুতরাং আমাদের আশা পূর্ণ হওয়ার এখনও অনেক বাকী।

সামহোয়ার ইন নিয়ে আমার অনেক ভালবাসা ও আশার মূলে কর্তৃপক্ষ কুঠারাঘাত করেছেন অনেক অনেক আগেই। তখনই অনুমান করতে পেরেছি তারা সৃজনশীল লেখকদের টানতে পারবেন না এবং এখানে যারা আছেন তাদেরকেও আস্থায় নিতে পারবেন না। অনেকের হয়তো মনে আছে আমি আমার বন্ধু মাসুদা ভাট্টিকে এখানে এনেছিলাম। তার লেখা উপন্যাস কর্তৃপক্ষ মুছে দিয়েছিলেন বিনা দ্বিধায়। সেই উপন্যাস 'আগামী প্রকাশনী' গত বইমেলায় বের করেছে। সেই বই নিয়ে বাংলাদেশে কোনোরকম শোরগোল হয়নি। সুতরাং আগামী প্রকাশনীর ওসমান গণি যে আরিল এন্ড গং-এর চেয়ে লেখালেখি, লেখকের স্বাধীনতা ও পাঠকের মনন বেশি বুঝেন তাতে চক্ষুস্মান কারো সন্দেহ থাকার কথা না। (একথা বলে আমি একটা পোস্টও দিয়েছিলাম।)

সুতরাং যারা সিরিয়াসলি লেখালেখি করেন, অন্তত: প্রবাসেও তারাও যে এই সাইটটিকে আস্থার সাথে গ্রহণ করতে পারছেন না এই সমস্যাটি কর্তৃপক্ষ তাদের যোগ্যতা দিয়ে দূর করতে পারেন নি। কর্তৃপক্ষ টেকনিক্যালি অনেক ভালো একটা লেখালেখি বা ব্লগিং-এর জায়গা করে দিয়েছিলেন কিন্তু সৃজনশীলতা সম্পর্কে তাদের ধারণার ঘাটতিটুকু তারা বিশেষজ্ঞ লোক দিয়ে পূরণ করেননি। তাদের এই চেষ্টার অভাব আমাদের জন্যই কাল হয়েছে।

এখানে মিলিত হওয়ার পর অনেকে ইয়াহুতে গ্রুপ খুলেছেন, নেটওয়ার্কও তৈরি হয়েছে নানা রকম, বইমেলাতে অনেকের লেখা নিয়ে বই প্রকাশও হয়েছে সম্মিলিতভাবে, প্যাঁচালি নামে একটা সাইট তৈরি হয়েছে কিন্তু নানা কারণে সচলায়তনের তৈরি হওয়াটা সবচে বেশি সাড়া জাগিয়েছে।

এই সাড়া জাগানোর কারণ সম্ভবত: সচলায়তনের ব্লগারদের তালিকা, যারা সামহোয়ার ইন ব্লগে লিখতেন এবং তূলনামূলকভাবে ভালোই লিখতেন। একটা কথা বোধসম্পন্নরা মানবেন এসব ব্লগাররা এতটা বিবেকবোধ বর্জিত নন যে এই সাইটের ক্ষতি করতে তারা ষড়যন্ত্র করবেন। বরং এ ধারণাটারই সত্যতা বেশি যে তারা নিভৃতে লেখালেখির জন্য আরো ঘনিষ্ঠ একটা আড্ডায় বসতে চেয়েছেন। সেখানে তারা যে লেখাগুলো লেখেন তা তাদের অনেকেই সামহোয়ারেও রেখে যান। কারণ সামহোয়ারের প্রতি তাদের ভালবাসার কোনো কমতি নেই। ঝরাপাতার সাম্প্রতিক পোস্টটার কথাও এ প্রেক্ষাপটে স্মরণ করা যায়।

একথা বললে খুব একটা আশ্চর্যজনক শোনাবে না যে, আমরা সবাই চাই, সামহোয়ার সচল হোক। অথবা একে আরো বেশি সত্যের কাছাকাছি এনে বলতে হলে বলতে হবে, আমরা চাই সামহোয়ার ফিরে পাক তার শুরুর সময়কার ছন্দ।

এ অনেকটা বাংলাদেশের ৭২ এর সংবিধানে ফিরে যাওয়ার মত আকাঙ্খা। স্বপ্নের শুরুতে ফিরে যাওয়ার প্রার্থনা।
ভুলগুলো উপড়ানোর দায় এড়িয়ে অন্যের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার মধ্যে দোষ খুঁজলে নিজে আমরা যে তিমিরে ছিলাম সেই তিমিরেই থেকে যাবো। এ থেকে আমাদের উদ্ধার হবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০০৭ ভোর ৬:৫৯
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×