রূপকথার সেই জাদুর মাদুর এর গল্প যা কিনা ইংরাজিতে ম্যাজিক্ কার্পেট বলেই বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বের শিশুদের কাছে জনপ্রিয়,সেটি যে শুধু মাত্র রূপকথারই অংশ, এতদিন আমরা সেটাই ভেবে এসেছিলাম। কিন্তু হেনরি বাক নামের এক ফ্রেঞ্চ ঐতিহাসিক ইরানের উত্তরে অবস্থিত আলমুন্'ত এ, কাস্পিয়ান সাগরের কাছে এক অতি প্রাচীন বধ্য ভুমিতে অবস্থিত প্রাসাদের নীচের এক চোরা কুঠরি হতে কিছু সংখ্যক অতি প্রাচীন পুথিমালা উদ্ধার করেছেন যা আমাদের সেই প্রাচীন ধারনাকে বদলে দিতে পারে। পৃথিবীর
অনেক ঐতিহাসিককেই হেনরী বাক এর পাওয়া পুথি-সমুহের গ্রহনযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সেগুলো কারবন ডেটেড (Carbon dated) করার জন্য ইতালির Istituto Leonardo da Vinci নামের এক ল্যাবেরোটারি তে নেওয়া হয়েছে। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক এবং গবেষক বেন সেরিরার (Hai ben Sherira [৯৩৯খ্রিঃ - ১০৩৮ খ্রিঃ], উনি Hai Gaon নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন) মতে তৎকালীন মুসলিম শাসক গন উড়ন্ত মাদুর অর্থাৎ ফ্লাইং কার্পেট্ বা ম্যাজিক্কার্পেট্ কে শয়তানের উস্কানি মুলক বা শয়তানের সহায়তায় আবিস্কার বলে মনে করতেন, কেননা ঐ সময় চোর ডাকাত বা দস্যুরাই এটার ব্যবহার জানত। তাই এর ব্যবহার ও নির্মাণ বন্ধ করার নিমিত্তে সেসময়ে অত্যন্ত নিয়মতান্ত্রিক ভাবে ম্যাজিক্ কার্পেট্ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রমান ধ্বংশ করা পুর্বক সকল কার্পেট নিরমাতাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হয়। তারপরেও কথিত আছে যে এর নির্মাণ থেমে থাকেনি এবং ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত এই কার্পেট নির্মাণের ঘটনা শোনা যায় তবে এগুলো শুধু মাত্র উচ্চ পদস্ত রাজ কর্মকর্তা বা অতি ধনাঢ্য ও সন্মানীত ব্যক্তিদের জন্য নির্মীত হত। ১২১৩ খ্রিস্টাব্দের দিকে এই কার্পেট অতি জনপ্রিয় হয় যখন এক তুরানি প্রিন্স এই কারপেট ব্যবহার করে দ্রুত আকাশ পথে এক শত্রুর প্রাসাদ আক্রমন করেন। পরবর্তিতে মোঙ্গল দের কে দমন করার উদ্দেসসে এই কৌশল ব্যবহার করা হয়। বেন সেরিরার লেখা অনুযায়ী, এই কার্পেট সম্পর্কে সবচেয়ে পুরানো যে তথ্য তিনি পেয়েছেন তা মূলত মাত্র দুটি বই থেকে এসেছে। প্রথম বইটি ছিল শামসা-আ'দ(যিনি বাবিলনের রাজা নেবুচাদনেজ্জার এর মন্ত্রী ছিলেন) এর সংগ্রহিত কিছু প্রবাদ। ২য় বইটি হল প্রাচীন কথোপকোথনের যা জসেফাস (Josephus খ্রিঃ ৩৭ - ১০০ খ্রিঃ) কর্তৃক অনুবাদিত হয়েছিল। এদুটির একটিরও অস্তিত্ব এখন নেই। এগুলির সহায়তায় বেন সেরিরা কুইন অব শেবা আর কিং সলোমান এর যে ঘটনা দাড় করিয়েছিলেন তার উল্লেখ আর কোন প্রাচীন গ্রন্থে পাওয়া যায়নি।
অচিরেই এ সম্পর্কে আরও সব মজার তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থিত করব এই প্রবন্ধের ২য় পর্বে, অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০০৯ রাত ১২:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




