somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুর বিকাশ সম্পর্কে ইসলাম

০৬ ই মার্চ, ২০১১ সকাল ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিশুর মধ্যে একই সঙ্গে বিভিন্ন বিকাশপ্রক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়। শিশুদের মধ্যে সাধারণত যেসব ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটে সেগুলো হচ্ছে_ শারীরিক বিকাশ (শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সামঞ্জস্যপূর্ণ বৃদ্ধি, ওজন, শক্তি ইত্যাদি)।

মানসিক বিকাশ (চিন্তাশক্তির ক্ষেত্রে সহনশীলতা ও খোদাভীরুতা, সুষ্ঠু আচরণের চিন্তা, মনোযোগ, একাগ্রতা, কার্যকারণ সম্পর্কে ধারণা, সমস্যা সমাধানের শক্তি ইত্যাদি)। ভাষাগত বিকাশ (কোনো কিছু করার ক্ষমতা, কথা বলার ক্ষমতা, কোনো বিষয়ে প্রশ্ন করার ক্ষমতা ইত্যাদি)। সামাজিক বিকাশ (অন্যদের সঙ্গে মিশতে পারা, সামাজিক রীতিনীতি জানা ও শেখা, কুশল বিনিময়, দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা, সামাজিক ও নাগরিক কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া, সমবয়সীদের সঙ্গে খেলাধুলায় অংশগ্রহণ, জামাতে নামাজ আদায় করা ইত্যাদি)। আবেগ-অনুভূতির বিকাশ (সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, উচ্ছ্বাস, আগ্রহ ইত্যাদি)। নৈতিক বিকাশ (ন্যায়-অন্যায়, ভালো-মন্দ, নৈতিক-অনৈতিক, অন্যের জন্য ভালো কিছু করা, অন্যের ক্ষতি হবে এমন কাজ না করা ইত্যাদি)। শিশুর এই বিকাশের দিকগুলো স্বাভাবিক রাখতে হলে আর্থিক সামর্থ্যের চেয়ে আন্তরিকতার বিষয়টিই বেশি প্রয়োজন। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর জীবনে শিশুদের সঙ্গে বিভিন্ন আচরণের মধ্য দিয়ে শিশু বিকাশের প্রতি আন্তরিকতার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে রেখে গেছেন। আমাদের উচিত তা অনুসরণ করা।

মহাগ্রন্থ আল কোরআন সব শ্রেণীর মানুষের জন্য সার্বিক বিষয়ে সব ক্ষেত্রে সহায়ক ও মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে ভূমিকা পালন করে। শিশুর শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি আত্মিক ও মানসিক বিকাশ একটি অপরিহার্য বিষয়। এক্ষেত্রে মহাগ্রন্থ আল কোরআন অতীব কার্যকর ভূমিকা পালনকারী। আর এর ইঙ্গিত পাওয়া যায় আল্লাহ্ তা'আলার পবিত্র বাণীতে। তিনি মানবজাতিকে কোরআন শিক্ষা প্রদান সম্পর্কে ইরশাদ করেন_ তিনি (আল্লাহ) দয়াময়। যিনি কোরআন শিক্ষা দিয়েছেন। মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের বয়ান শিক্ষা দিয়েছেন। (অর্থাৎ বিভিন্ন বিষয়কে ব্যাখ্যাসহ বর্ণনা করার যোগ্যতা প্রদান করেছেন)। সূরা আর রহমান-১-৪।

আল্লাহ্ তা'আলা প্রতিটি শিশুকে স্বাতন্ত্র্য প্রতিভা দিয়ে সৃষ্টি করেন। তাই আমরা লক্ষ্য করি বিভিন্ন মানুষের প্রতিভা বিভিন্নভাবে বিকশিত হয়। এক বিষয়ে সবার যোগ্যতা সমানভাবে পরিলক্ষিত হয় না। তাই এ সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য শিক্ষা-দীক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এ জন্যই আল্লাহ্ তা'আলা পবিত্র কোরআন অবতরণের সূচনা করেন ইকরা অর্থাৎ 'পড়' শব্দ দিয়ে। আল্লাহ্ তা'আলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, পড়, তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। তিনি মানবজাতিকে সৃষ্টি করেছেন জমাট রক্ত থেকে। পড়, আর তোমার প্রতিপালক সম্মানিত, যিনি কলম দিয়ে শিক্ষা দেন। তিনি মানবজাতিকে শিক্ষা দিয়েছেন, যা তারা জানত না। সূরা আলাক-১-৫।

তাই শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের জন্য তার মেধাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার জন্য উপযোগী শিক্ষা-দীক্ষার ব্যবস্থা করা অভিভাবকের অপরিহার্য কর্তব্য। তবে দীন ও দুনিয়ার প্রাথমিক প্রয়োজনীয় শিক্ষা সমানভাবে সব শিশুকেই দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় শিশুর শারীরিক বিকাশ ও আকৃতি গঠন বিষয়ে আল কোরআনে ইরশাদ হচ্ছে_ তিনিই তো ওই সত্তা যিনি তোমাদের মায়েদের গর্ভে নিজের ইচ্ছা মতো আকৃতি গঠন করেন। তিনি ব্যতীত আর কোনো উপাস্য নেই। তিনি পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়। সূরা আল ইমরান-৬।

শিশুর যথাযথ বিকাশ সাধনের জন্য অভিভাবকদের প্রতি মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা, পিতার ওপর সন্তানের অধিকার হলো তাকে লেখাপড়া শিক্ষা দেওয়া, সাঁতার শিক্ষা দেওয়া, তীর নিক্ষেপ শিক্ষা দেওয়া এবং তাকে ভালো ও পবিত্র খাবার খাওয়ানো। বায়হাকি। তাই অভিভাবককে শিশুর গুণগত বিকাশ সাধনের জন্য উলি্লখিত দায়িত্বগুলো অবশ্যই পালন করতে হবে।

লেখক : সাইয়্যিদ জুলফিকার জহুর, খতিব, মসজিদুত তাকওয়া, ধানমণ্ডি, ঢাকা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×