somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মিশ্র - ৩১

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এখন তেত্রিশ বোতল খাও একত্রিশ রাতে
সাথে নাচো নাচতে নাচতে ভুতের বত্রিশ দাঁত খুলে
শব্দ বাজাও বিলাতি ঢোলের,
বড় বড় কাগজশব্দ বাজে,
গলায় বাঁধা গলদঘর্ম টাই, মাথায় বাঁধা দুইশ বছরের পুরনো প্রেতের শাসন,
"যত্তসব" মানুষেরা সাথে উল্টো পায়ে বছরকে ডাকে,
উদোম কণ্ঠনালী বরফের সমুদ্রে বিয়ারের ঘ্রান শোঁকে
খেতে খেতে হেটে চলে যাও
অন্ধকারে বের হয়ে
পুরনো ক্যালেন্ডার বগলে ঝুলিয়ে ময়লাবাহী ভ্যানে।

১.১
জানালা খুলেই দেখি রূপালি রোদ্দুর পুকুরের জল পুড়িয়ে উড়িয়েছে মেঘের ফানুস।
কর্ণপটহে পাগলাঘণ্টা বাজলো। সসস্ত্র জলের ক্রসফায়ারে নিহত আগুন।
ভালবাসা কি আগুনের বিশ্ববিদ্যালয় -
এত কাল লিখে পড়েও কিচ্ছু শিখি নি।
ভালবাসা কি জলের সিলেবাস
হৃদয় সেই ক্লাসের ঘুমজাগা নদী
জলেরা দাগ রাখে অতন্দ্রিলা চোখে
মন পুড়িয়ে স্মৃতির মূর্তি গড়ে কিচ্ছু শিখি নি।
(৩০ ডিসেম্বর)

দু:স্বপ্নেও দেখিনি মানুষের পাঁজর, সিনা, কলিজা
বাজার করে ফিরছে কর্মজীবি মোরগ,
মানুষের বাচ্চার স্যুপখাইয়ে চিংড়ি মাছ পুষ্টি দিয়ে যাচ্ছে তার শিশুদের।
অথবা মশল্লা মাখাচ্ছে গরুমহিষেরা
কিচেনে মানুষের রান রান্না হয়,
গরুরা প্যাকেটে করে কিনে নিচ্ছে মানুষের দুগ্ধ, রমণীদের শরীর শুষে অভুক্ত শিশুকে কাঁদিয়ে
ভুল করেও ভাবি নি মাছেরা গান বাজিয়ে মানুষ হান্টিং করতে ছিপ ফেলেছে,
ভাবি নি ড্রইং রুমে মানুষের মাথা ঝুলিয়ে রাখে বীর হরিণেরা,
মানুষের বংশ বেশি খাদ্য খেয়ে নিচ্ছে বলে বিষ ফেলে বংশ নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে,
দু:স্বপ্ন দেখতে বড় ভয়
হতে পারতো আমরা খাবারের জগতে তুচ্ছ হয়ে কোরবানীর ট্রাকে ঢাকা আসছি।
( Vin Paneccasio অবলম্বনে, ডিসেম্বর ২২)


একজন বিশ্বডাকাতের হতে পারে আলিশান বাণিজ্যবিপনী
একজন ডাকাতের থাকতে পারে নিজস্ব ক্যাডিলাক গাড়ি
একজন কালবাজারী দুর্নীতিতে পেতে পারে এক কাঁড়ি সোনা
বিপনীবিতানের মালিক বহুতল ফিতা কাটছে,
ক্যাডিলাক দস্যুকে শীতাতপ দিয়ে ছুটে যাচ্ছে,
কালোবাজারীর স্ত্রীর গায়ে জ্বল জ্বল করছে জহরত,
যে মানুষ উঠতে বসতে সেই বিপনীবিতানের গপ্প করে - সে কিন্তু মনে মনে বিশ্বডাকাত
ক্যাডিলাকের কথায় যার আপসোস বাড়ে, হা করে থাকে
টাকা তাকে যে কোন দিন কিনে নিতে পারে
সোনার গুণগান করতে করতে যে পদস্খলন বোঝে না,
.. ঘুমিয়ে আছে নীতিহীন মানুষ তাদের অন্তরে
(ডিসেম্বর ২১)


বাংলাদেশের কথা বলছেন? বহু আগে থেকেই পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন মৎস্য মন্ত্রণালয়ের নিচতলায়। বন ও পশু অধিদপ্তরের সচিবেরা দুর্যোগের সাথে সাথে লাঞ্চ করে। যোগাযোগ ভবনে উঠতে লিফট লাগে। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় পার হলে পরে, নারী ও শিশু অধিদপ্তর। অনেকেই ভুল করে স্থানীয় সম্পদ বলে মনে করে এখানে চলে আসে।
(ডিসেম্বর ২০)


ঝড় এলো
ঝাড়ি এলো
বিড়ালগুলো ঝাড়ি খেলো
টেবিল চেয়ার কাঁপিয়ে দিলো
ব্যালকনিতে মুখ গুঁজেই
অত:পর ঝিরি ঝিরি বৃষ্টি..


আমরা তো আখলাকুল মকলুকাত। খালুই ভলে মাছ মারি। হায়েশ মিটায়ে পাখি মারি। কুলির মত খাটাই গাধা-ভইষাকে। আমরা সেরা জীব, বাকি সকলের মউত। নিজেদের মারি, মারি অক্টোপাস, নীল তিমি, ডলফিন। যাবতীয় কীটপতঙ্গ - তাছাড়া এন্টিভাইরাস দিয়ে নীরিহ সব ব্যাকটিরিয়া। এই শ্রেষ্ঠ হাতে লাখে লাখে গরু কতল হয়, মিট প্রসেস হয়, স্টেক হয়..তিতির, টার্কি, মুরগীর বংশধর বাঁচে মরে আমাদের পেটের সুখে। এমনই মখলুকাত.. কাত করে ফেলি সর্প-নেউল-সজারু। আমরা আশা মিটায়ে নষ্ট করি গ্রহের স্বাভাবিক বৈচিত্র্য।
যা কিছু আছে সব মারি। মারো মানবকুল মারো, পশু পাখি, সব। এসি গাড়ির জন্য তেল তুলে আনো গর্ত থেকে, তারপর পানিতে তেল ফেলায়ে মারো জঙ্গলের নীরিহ প্রজাতি। বহু বিলিয়ন বছরে যা বানানো, যে জীবকুলের টিকে থাকা, নির্বংশ হোক সৃষ্টির সেরা জীবের নখের আঁচড়ে।
(ডিসেম্বর ১১)



জিসান মুস্তফা খুব ভাল কবিতা লেখে। সে যখন মানুষের কথা বলে আমি ভাবি যদি পারতাম জিসান হতে। আমি কখনো তার মত লিখতে পারি না। তাকে পড়ি। সে যখন জীবনের কথা লেখে -
...ঘর থেকে বের হয়ে একটি পথ
নিউমার্কেটে যায় - ঘোরে ফেরে জামদানী তাঁতে
একই পথে কেউ যায় আজিমপুর,
একই পথে অনেকে আর ফেরে না...
...
আমি ওকে ছবিতে দেখেছিলাম টগবগে যুবা! তখন আমি ব্লগে। ব্লগ থেকেই পরিচয়।
জিসানের শব্দ দিনে দিনে আরও ভাললাগলো। ও লিখল মধ্যবিত্তের কথা। আমিও অভাব অনটনের ফ্যামিলিতে বড় হয়েছি। ও যেন আমার কথা লিখতো।
তার সঙ্গে ইমেইলে যোগাযোগ হলো।
খুব বিষাদের একটা পত্র দিলো। অনেক প্রশ্ন করে আমি জানলাম সে ভাল নেই।
বললাম কি হয়েছে?
আম্মা মনে হয় বাঁচবে না।আব্বা যখন বিয়ে করেছে তারপর থেকে তার খিঁচুনি হয়। ম্যালিগন্যান্ট কি নাম।
আমি জানি জিসান মতির দোকানে আড্ডা েদয়। টুক টাক বেকারত্ব। কিন্তু পরিবারের দুর্বিসয় জীবন তখনই জানলাম। আমি সামাজিক মাধ্যমের মানুষ না হয়ে ওর সব জানলাম।
২০১৩। সে প্রতিদিন দু লাইন করে লিখতো।
একদিন সে বলল, ভাললাগছে না, বড়ভাই আমি মরে যাবো, এভাবে আর কত? জীবনের হাল। জব নাই। আত্মীয়ের জোর নেই। কালকে একটা গিটার ছিল সেটা বিক্রি করে দিলাম, ভাই। বিগ পেইন।
আজকে?
জানি না। ম্যানেজ করবো।
আমি বললাম তোমাকে আমি হাজার পাঁচেক দেই আজকের মত চলো।
সে এমন ভাবে অস্বীকার করলো, এমন ভাবে প্রতিক্রিয়া জানালো যেন আমি অপরাধ করেছি। আমি বুঝে গেলাম এই সে সত্যিকারের সৎ মানুষ।তারপর না জেনে অল্প হলেও তার হাত খরচ িদয়েছি। সে পড়া শোনার ফি লাগবে বললে তাও দিয়েছি।
তার পর আনুমানিক ছয় মাস আমি ব্যস্ত।
দেশে এসে আজিমপুর মতির দোকানে যেখানে সে আড্ডা দেয় গেলাম। তার এক বন্ধুর সাথে দেখা কথা। সে বলল, আপনি হয়তো জানেন না সে বাসায় মারামারি করে ইয়াবার টাকা যোগাড় করে। হাত কেটেছে। মিথ্যা বলে হড় হড় করে। নিজেই আছাড় দিয়ে গিটার ভেঙেছে। গত একটা বছর ধরে সে প্রেম করেছে। চুমকি তাকে কত ভাবে চেষ্টা করেছে যেন ভাল থাকে। সে চুমকিকে মেরেছে। সে এখন জায়গায় অজাগয়া কবিতা শোনায়, মেয়েরা তার ভক্ত হয়। তাদের কাছ থেকে ধার নেয়।
সে কই?
ওকে খারাপ ছেলেদের আড্ডা থেকে তুলে আনতে পারবেন না। ও যত লেখে সব গাঁজা আর ইয়াবার ঘোরে।
আমার খুব খারাপ লাগলো। আমি এত বড় হয়েও বুঝি নি। আমি খুব কষ্ট করে কাজ করি। সেই জমানো অর্থ একটা মাদকাসক্তের ড্রাগের ধোঁয়ার জ্বালানী হয়ে উড়ে গেল। সে কবি বলে মিথ্যে বলতে পারতো। সে কবে এমন হলো? কষ্ট তাকে নেশায় এনেছে ..নাকি নেশাই তাকে কষ্টের বুকে আঁছড়ে ফেললো।

(ডিসেম্বর ৯)
আমার ফুফাতো বোন চারটা। চারটাই দুর্গম এলাকায় থাকে। তার মধ্যে ছোট ফুফার বোনটাকে এবার দেখে এলাম। যদিও ছনের বাড়ি টিনের ছাদ হয়েছে। সেই ছাউনির তলায় মুরগীর বাচ্চার মত অনেকগুলো বাচ্চা ওর চারপাশে বসে থাকে। দুইটা উঠানে খেলে। একটা দাঁড়াতে সক্ষম। অন্যটা বসতে পারে কি পারে না। নাক দিয়ে "সিঙ্গাইল" টানে। মুছে দিলে কোলে তুলতে পারি কিন্তু মোছার কেউ নেই। তখনই বড় মেয়েটা ফ্রি স্কুলের বিস্কুট হাতে এসে বাড়িতে ঢুকলো এবং আমি দেখলাম হুবুহু তার মায়ের মত হয়েছে।
যদিও আমার বড় আন্টির মেয়ে আমার কাজিন। আরেকটা দুসম্পর্কের ভাই সেও কাজিন। কাজিনরা ঢাকায় থাকে। ফুফাতো বোনকে কাজিন ডাকতে সঙ্কোচ হতো। আম্মা অবশ্য মানুষ ভাল। বলতো তোর ফুফাতো বোনের নজর বড় উঁচু। এ যেমন পাগল। তার বাপটাও। ঢাকায় বিয়ে দিতে জ্বালায়ে খাচ্ছে।
বাড়ি থেকে ফুফা বছরে কয়েকবার আসতেন। যতবার এসেছে আব্বাকে বলতো, মেয়েটার বিবাহের জন্য ঢাকায় কাউরে পাওয়া যেত... একটা পিয়ন, দারোয়ান, অথবা দোকানদারী করে। ঢাকা থাকলেই হবে। কারণ মৌলভী হাফেজ সুপুত্রের প্রস্তাব অনেক। কিন্তু বোনের সখ ঢাকায় থাকবে।
সে ঢাকায় একবারই এসেও ছিল। ফুফা মারা যাবার পাঁচ ছয় বছর আগে। তার সাইনাসের চিকিৎসার জন্য যখন আনা হয়। আমরা মধ্যবিত্ত সংসার। পনেরফুল ঘরে মাথা গুঁজে থাকি।
ঢাকায় এসে সেই অসুস্থ মেয়ে এমনই মজে গেল যে আর ফিরে যাবে না। টিভি থেকে সরে না। আম্মা তাকে দিয়ে রান্নার কাজ টাজ করিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু মেয়ের যা দেখে তাই পছন্দ। আয়নার সামনে বার বার ঘোরে। আম্মা বলতো এই বয়সে এত্ত সাজগোছ আমার দুই চক্ষের বিষ। আমরাও গ্রামে বড় হইসি কিন্তু কোন দিন আলতা সাবান নিয়ে মজে থাকি নাই।
সে এরকম ড্রেসিং টেবিল সে কোথায় পাবে। চুড়ি দেখলে হাত দিয়ে দেখে, এই চুড়ির মাপ আমার সমান। আম্মা বাধ্য হয়ে তাকে পুরানা কিছু প্রসাধনী দিয়েছির।
সে অকর্মা ও অলস। তার কাজ করতে ভাললাগতো না। আম্মার কথায় যেগুলোর পেটে ভাত নাই তাদের বুদ্ধিই খারাপ। কিন্তু কথাটা ভুল। ভাত ওয়ালাগুলোও এই যুগে সাজগোজ করে।
সে মামা বাড়িতে এসেছিল। তার দাবীও অনেক। আম্মা বেশি কিছু বলতেও পারতো না। বেশি কিছু বললে গ্রামের লোকজন অন্য ভাবে নেবে।
মেয়েটি বেশ লম্বা। সিনেমায় যেমন লম্বা দেখায় ওরকম। সে ঢাকায় শহরে অহংকারেরই কারণ হতো। কিন্তু আমি জানতাম গ্রামে গরুর জন্যই খাবার থাকে না। মানুষ কি খাবে। সে অপুষ্টিতে ভুগে হাড্ডিসার ও কদাকার একটা মেয়ে হয়েছিল।
আমার মনে আছে সে আমাদের খাবার টেবিলে বসে খেতে খেতে আম্মাকে বলেছিল সে ঢাকায় কাজ করে হলে থাকতে চায়। টেবিলে ফুলদানীর ক্রিস্টাল তার পছন্দ। বলতো মামানী, এই খােন ফুলদানী আছে ফুলের গাছ নাই। সে নানা ভাবে নিতে চাইলো। চাইলেই তো আম্মা আর দেবে না। আম্মা বলেছিল রেখে দে, আবার ভাঙ্গিস না যেন। ওটা ওমান থেকে দিনা আপার পাঠানো।
আমি যাবার আগে জানতাম না কয়টা বাচ্চার আল্লাদীর। তাই এবার গণ হারে চকলেট নিয়ে গিয়েছিলাম। সবুজ গ্রামীন শাড়ির ভিতর একটা মফস্বলের কাজিনকে দেখছি, মাত্র তিরিশ বছর বয়সে পঞ্চাশের সমান বৃদ্ধ হয়ে গেল।এক প্যাচের শাড়ী, ব্লাউজহীন। অনেক বাচ্চা জন্মানোর পর গ্রামের নারীদের স্তন আড়াল করার আর জরুরী প্রয়োজন থাকে হয় না। একলাই একগাদা সিলভারের পাতিল মাজছে আর বাচ্চাদের খাওয়া শেষে আমার কাছে এসে বললো, ভাইজান ঐ সাদা রঙ্গের মেশ্রী আছে আরো? বুঝলাম সুইস হোয়াইট চকলেটের কথা বলছে। আমি ব্যাগ খুলে পরবর্তী বাড়িতে নেয়ার জন্য যে চকলেটা তা থেকে তাকে কয়টা দিয়েছিলাম। সে অসম্ভব খুশি হয়ে গের। আর আঁচলে গিট দিয়ে ফেলেছিল, পরে একলা খাবে বলে। শহরের প্রতি ভালবাসাটা তার চকলেটে আবার দেখতে পেলাম।
(ডিসেম্বর ৮)

প্রতিটা পরিবারে দু একজন আত্মীয় থাকে। যাদের পরিচয় দুর সম্পর্কের আত্মীয়। আমাদের পরিবারে একজন আছেন, যার সম্পর্কে আলাদা করে বলার কিছু নেই। খুবই দরিদ্র। মসলা পেষেন বাড়িতে। হোটেল ভাত রান্না করে জীবন ধারণ করেন। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করি কি লাগে, আমি জানি দুর সম্পর্কের নানী। মহিলা সুন্দরী ছিলেন। কাল হলেও কেউ থাকে নাক চোখে টনটনে। আমি জিজ্ঞেস করেছি ভাল আছেন?
উনি বোকার মত বলেন, ভাল আছি, ভাইজান।
আমার বাসায় যখন আসেন। বেড়াতে তো আসেন না। একবার এক কাজিনের ভাইয়ের বিবাহের জন্য ..সেখানে তাকে দেখেছি কাটা বাছার জন্য ডাকা হয়েছে। একটা সাদা শাড়ীও পেয়েছেন। মনে হলো এই শাড়ীই তার পাওনা। অনেক আত্মীয় স্বজনের তখন গায়ে হলুদের নানান জামা কাপড় চলছে। ডাকলেই আসেন রসুলের মা। রসুল বখে যাওয়া মামার নাম। সে ড্রাইভারি করে। বউ নিয়ে থাকে গেন্ডারিয়া।
আমরা একবার শুনলাম খুব শরীর খারাপ তার। মেরুলিয়ায় তার ধর্মের বোনের বাড়িতে। বাঁচবে না। জ্বালাপোড়ার করে শরীরে। আম্মা বললো এরা খায় না। ঠিক মত বুদ্ধি ভাল না। কতবার বলেছি অমুক তমুক। আমরা তখন দুইশো করে টাকা দিলাম। সব মিলায়ে যে টাকা হলো সে তাতে সুস্থ হলো। সুস্থ হলেও বয়সের হিসাব থাকে। আমি ভাবলাম মরেই গেছেন। অনেক দিন দেখি নি। তারপর গতবছর এক কুলখানির অনুষ্ঠান হলো। আমার কলমী খালা কুলখানি। সেই খান থেকে বের হয়ে এলো সেই নানী। অনেক বছর ধরে তাকে দেখেছি। এসেই গ্রামের মানুষের মত আমার শরীরে হাতালেন। ডাকলেন।
কুলখানির অনুষ্ঠানের ভেতর একটা জীবিত মানুষের আবিষ্কারে আমার ভাললাগলো।
আবার তাকে অনেক অনুষ্ঠানে দেখেছি। কিছু সময় থাকে পরিবারে মড়ক ধরে। মারা গেল মেজো মামা। তার ছেলেটা বিদেশ থেকে লাশ হয়ে ফিরেছে। পর পর দুটো ঘটনা। আমি দুবারই দেখেছি এই বয়সে কুঞ্চিত চামড়ায় সবার সাথে কান্নার ভীড়ে তাকে।
আমার সব বারই মনে হয়েছে হায়াৎ তাকে দিয়েছে। সবার মৃত্যুর অনুষ্ঠানে দেখি। এরপর ডিসেম্বরে দুর্বারের ছেলের জন্মদিনে তাকে আনা হলো। বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া যায় না যাকে ডাকলেই আসে। নানী এখনো কাজ করে। একটা গারমেনটসের প্যাকিং এর কাজ না কি বলে তার ওখানে। গায়ে শক্তি নেই। শুকনা। কিন্তু এটা বুঝতে পারি এর মধ্যেই পরিশ্রম তাকে ছাড়ে না। অনেক অনেক আত্মীয়ের স্মৃতিতে মন খারাপ হতে থাকে। কেউ অনেক অল্প বয়সে ছেড়ে গেছে। একজন মানুষ দুরসম্পর্কের আত্মীয় হয়ে গৃহকর্তীর কাজ করছেন। তার বেঁচে থাকার কথা ভেবে ভাললাগে

(নভেম্বর ২৮)

-
ড্রাফট ১.০
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×