উঠোনে ছোট্ট একটি আম গাছ। বাড়ির ছোট মেয়ের অবহেলায় ফেলে দেয়া আমের উচ্ছিষ্ট তার প্রানের সঞ্চারক। মানুষের ঝাড়ু থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে, একটি ফুল গাছের আড়ালে প্রথম ছোট্ট সবুজ কচি পাতা তার প্রানের অহংকার। ফুলগাছের সার, পানি আর জীবন্সুধা সুর্যের আলোয় অল্প কদিনেই সে বেশ বড় হয়ে উঠে। ফুলগাছের মাঝে তার ছোট্ট সবুজ শরীরের ঝলকানি এখন একটু ভালো করে তাকালেই বোঝা যায়। কিন্তু এই সৌন্দর্যই যে তার কাল হয়ে দাড়ালো। তাকে টেনে উপড়ে ফেলে উঠোনের বাইরে ছুড়ে ফেলা হলো। বড় বড় মানুষের কাছে সে অল্প একটু সাহায্য চাইল। সুন্দর এই পৃথিবী ছেড়ে যাবার জন্যে সে যে একদমই প্রস্তুত নয়। মানুষ মহান জাতি তাই তারা শুনেও শুনলোনা ছোট্ট জীবনের সে আর্তনাদ। কিন্তু বেঁচে থাকার অদম্য আশাই হয়তো তাকে হারিয়ে যেতে দিলনা।
জীবনের সাথে সংগ্রাম করে একটু একটু করে সে বড় হয়ে উঠলো। এখন বাড়ির মানুষ তার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। তার সবুজ পাতার ভেতর দিয়ে আসা বাতাসের সংগীত তাদের বিমোহিত করে। সে তাদের ছায়া দেয়, ফল দেয়, কাঠ দেয় আবার ঝড়ের মাঝে সমস্ত শক্তি দিয়ে মাটি আকড়ে ধরে তাদের ঘর'ও বাচায়। কিন্তু সেটা কতটুকু করুনায় আর কতটুকু ভালবাসায় তা বোঝা যায় না।
মানুষের যে এত বোঝার সময় সময় কোথায়।
- - - - -
উত্সর্গ: অর্চি আজাদ, ছোটবেলার ক্লাসের সবচে সাধারণ চেহারার সবচে অসাধারণ সৃজনশীল মেয়েটি।