যেভাবে বিশ্বব্যবস্থা এগুচ্ছে, খুব বেশিদিন নয়, হয়তো সেদিন মানবজাতির অভিভাবকেরা প্রশ্ন তুলবে, হয়তো প্রস্তাবও রাখবে - উচ্চ প্রযুক্তির সমন্বয়ে অপারেশন করে মানুষের অাত্মিক জিনিসটাকে চিরতরে মুছে ফেলা যায় কিনা !
কিসের প্রেম, কিসের ভালোবাসা, কিসের এতো অাবেগ ! মানবজাতির উন্নয়নের প্রগতির এই অন্তরায় না থাকার যৌক্তিকতায় হয়তো সেদিন ডেমোক্রেসির শক্তিতে বিদায়ও নিবে ।
বিশ্ববাজারে নিজেদের প্রবৃদ্ধির সূচক বাড়ানোর তাগাদায় হয়তো সেদিন অানুষ্ঠানিকভাবে স্বেচ্ছায় দাসত্ব বরণকেও শ্রদ্ধার চোখে দেখবে মানুষ । হয়তো সেদিন পরিবার হবে অরক্তীয় অথবা পরিবার হবেই না । হয়তো সেদিন প্রত্যেকটা মানুষ একেকটা কোম্পানিতে পরিণত হবে, যেখানে সবাই পণ্য অাবার সবাই ক্রেতা - অার একেকটা কর্পোরেশন মানেই একেকটা কম্যুনিটি । সেদিন বিশ্ববাজারে অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা রাষ্ট্রে রাষ্ট্রে না-ও থাকতে পারে - বরং সেটা প্ল্যানেটে চলতে পারে ।
অাত্মিক সত্ত্বাকে হারিয়ে মানুষ কতদিন যন্ত্র হয়ে থাকতে পারবে? হয়তো সেদিন কোনো ফসিল অাবিষ্কার হবে পড়ে থাকা একটা মেমোরির স্টেকে । মানুষ খুঁজে পাবে - একসময় তারা মানুষ ছিলো, তাদের মধ্যে অাত্মিক একটা সত্ত্বা ছিলো, প্রেম-ভালোবাসা ছিলো । কৌতুহূলবশত সেটা পুনরুদ্ধার করে পুনঃপ্রতিষ্ঠারও চেষ্টা করতে পারে - হয়তো সফলও হয়ে যাবে । কিন্তু তখনও যে সেটা প্রোডাক্ট হিশেবেই র'বে ।
অফিসগামী মানুষদের ভিড়ে কেউ হয়তো একটা জব করবে । "এই যে ভাই, অাপনার অনুভূতি লাগবে? অাবেগ? কান্নার অাবেগ? হাসির অাবেগ? মাতৃত্বের অাবেগ? কোনটা চান? সব অাছে? প্রকারভেদে দাম? অাজকে ২০% ডিসকাউন্ট চলছে !” হয়তো কেউ কিনবে, হয়তো কেউ কিনবে না । কেউ কিনে সে প্রোডাক্ট হার্ডডিস্কের ফোল্ডারে সাজিয়ে রাখবে । কেউ শোভাবর্ধক হিশেবে ব্যবহার করবে । কেউবা কৌতুহলবশত । কেউবা ওসব তোয়াক্কা না করে পাশ কাটিয়ে চলে যাবে । সেকেন্ডের দাম তখন অনেক ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:৫১