বহুদিন আগে এক সহকর্মীর প্রেমঘন ফোনালাপে কান পেতেছিলাম।তিনি বিবাহিত।বলা বাহুল্য তার পরকীয়া আবিষ্কারের নেশাতেই সেদিনের সেই অপচেষ্টা।তবে বিয়ের আগে তিনিও আমার মতো বিবাহিত সিনিয়র সহকর্মীদের পেছনে এভাবেই লেগে থাকার কোর্স কমপ্লিট করে এসেছিলেন বলে এই অধমের বক্র দৃষ্টি তার চোখ এড়ায়নি।তাই ফোনটা রেখেই আমাকে চূড়ান্ত হতাশ করে দিয়ে বললেন,'নারে,যা ভাবছিস তা নয়।আমি আমার বউয়ের সাথে কথা বলছিলাম।'
আমি পাশে ছিলাম বলে তার সব কথাই আমার কানে এসেছে।কিন্তু তার বউয়ের কথা তো আর শুনিনি।তবে পরে তার সঙ্গে বিস্তারিত আলাপের আলোকে ভদ্রলোকের স্ত্রীর সংলাপগুলো নিম্নোক্তভাবে সাজিয়ে নিয়েছি।এবার তাদের বিশেষ কথোপকথনে চোখ রাখুন:
তিনি:পারবো না।
বউ:পারবো না মানে।
তিনি:পারবো না মানে, পারবো না।
বউ:প্রতিদিন বলে যাও, তাড়াতাড়ি ফিরবে।তুমি যা শূরু করেছ না!
তিনি:আমার অফিসে কাজ।কী করবো বলো।
বউ:দেখ,এভাবে চলতে থাকলে আমি কিন্তু একদিন মারাই যাবো।
তিনি:বলো কী?আমি তো তোমার ডেডবডিও দেখতে আসতে পারবো না।
বউ:কী!!!!!!!(কাঁদো কাঁদো কনেঠ)খুব তো ভালোবাসার ভান করতে বিয়ের আগে।এখন আমি মরে গেলেই তুমি বেঁচে যাও।
তিনি:আমার কথাটা তুমি বুঝতে চেষ্টা করো।
বউ:কী বুঝবো(অ্যা...অ্যা...অ্যা...অ্যাঅ্যাঅ্যা)?
তিনি:কেমনে আসমু বলো।তুমি মারা গেছ শুনলে তো সঙ্গে সঙ্গে আমিও হার্ট অ্যাটাক করে মারা যাবো প্রিয়তমা।বুঝো না কেন!
বউ:উমমমমমমমম।ঢংয়ে বাঁচে না।
বেশ রহস্য করে বউকে শেষ পর্যন্ত পটাতে পেরেছিলেন ভদ্রলোক।পেরেছিলেন সেদিনের মতো তাড়াতাড়ি বাসায় ফেরার আবদারও ভুলিয়ে দিতে।কিন্তু সত্যি সত্যি তেমন কিছু ঘটে গেলে কী তিনি হার্ট অ্যাটাক করতেন? তার মুখ থেকেই উত্তরটা সেদিন শুনে নিয়েছিলাম,'আরে প্রেম না ছুটে যাওয়ার জন্য এরকম কতো কিছূই বলতে হয়।ব্যাটা প্রেম করলে বুঝবি।'
তবে আমি প্রেম না করেই বুঝি, প্রেমে এজাতীয় বানোয়াট জিনিষের ছড়াছড়ি।একবার আমার এক কবি বন্ধু আমাদের তার প্রেমিকার পাড়ায় খেয়ে আসা প্যাদানির শোধ তুলতে নিয়ে গেলেন।আমরাও গেলাম।বন্ধুর অপমান বলে কথা! কিন্তু আমরাও মার খাওয়ার মতো অবস্থায় গিয়ে দেখলাম বন্ধুটি আমাদের দৃষ্টিসীমায় নেই।সেই 'কাপুরুষ'টাই কিনা তার প্রেমিকাকে উৎসর্গ করে লিখলো 'মহাবীর রুস্তম' টাইপের কবিতা।
তোমার জন্য জীবন বাজি
উদ্দাম রণসাজ
তোমার জন্য সীমান্তজুড়ে
দামামা কুচকাওয়াজ
যে কিনা ুর দেখে পালিয়ে এসেছিল, সে নাকি সীমান্তে গিয়ে যুদ্ধ করবে!!!!!!!!!!!!
আরেকজনের কীর্তি শুনুন।নতুন প্রেমে পড়েছে।কারণে অকারণে মেয়েটারে ফোন করা চাই।এক বৃষ্টিস্নাত বিকেলে ফোন করে ধুম ঝারি খেল।আমতা আমতা করে বললো,'নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধূরীর ওই গানটা শুনেছ?আজ এই বৃষ্টির কান্নাশুনে মনে পড়লো তোমায়।আমারও তোমাকে মনে পড়েছে।তাই তোমাকে ফোন না করে পারলাম না।'
এরপর দীর্ঘ ফোনালাপ শেষে আমাকে বললো,'দোস্ত চাপাটা বেশ খাইছেরে।'
আপনাদের লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে এবার বলতে চাই, প্রেম মানেই 'স্নেহ'। এটা কিন্তু আদর কিংবা মমতা নয়।ডাক্তাররা ফ্যাট জাতীয় খাবার খেতে নিষেধ করেন।তাতে শরীরে ফ্যাট জমে।আর এই ফ্যাটের বাংলা কিন্তু স্নেহ!!!!!!!!!! আমার দেয়া এক্সামপলগুলোও সেরকম।শুনতে মজা লাগে।কিন্তু ভেতরটা অন্ত:সারশূন্য!!!!!!!!!!!!!!!!!!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



